• পাঞ্চেতে সোলার প্রজেক্ট নয় নিতুড়িয়ায় তুমুল বিক্ষোভ, সমাবেশে শামিল ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দারাও
    বর্তমান | ১৬ অক্টোবর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, রঘুনাথপুর: পাঞ্চেত জলাধারের উপর ডিভিসি কর্তৃপক্ষ ভাসমান সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আর তাতেই পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ডের কয়েক হাজার পরিবার সিঁদুরে মেঘ দেখছেন। আশঙ্কা পাঞ্চেতে ভাসমান সোলার পাওয়ার প্রকল্প গড়ে উঠলে তাঁদের রুজি-রুটিতে টান পড়বে। সেই সাথে চলাচলে ক্ষেত্রে প্রচুর সমস্যা হবে। যে কারণে এই প্রকল্প বাতিলের দাবি উঠেছে। এই দাবিতে বুধবার সকাল থেকে দুই রাজ্যের কয়েক হাজার মানুষ বিক্ষোভ দেখান। এদিন দামোদর ভ্যালি বাস্তুহারা সংগ্রাম সমিতি, বাস্তুহারা মৎস্যজীবী গণসংগ্রাম কমিটি, প্রকৃতি বাঁচাও আদিবাসী বাঁচাও মঞ্চ, জমি রক্ষা কমিটির পক্ষ থেকে বিক্ষোভ দেখানো হয়। 

    নিতুড়িয়ার মহেশ নদ চেকপোস্ট এলাকায় একটি বিক্ষোভ সভা হয়। সেখানে খবর আসে, কোনও আলোচনা না করেই ঝাড়খণ্ডের জিরো পয়েন্ট এলাকায়  কর্তৃপক্ষ সোলার প্রকল্পের কাজ শুরু করেছে। আর তাতেই আন্দোলনকারীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। দুই রাজ্যের বিভিন্ন এলাকার কয়েক হাজার মানুষ কাজ বন্ধের জন্য মিছিল করে। ওখানে যাওয়ার আগেই কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং ঝাড়খণ্ড পুলিশ আন্দোলনকারীদের ব্যারিকেড করে আটকে দেয়। প্রতিবাদে আন্দোলনকারীরা ওখানেই অবস্থান বিক্ষোভে বসে পড়ে। যার ফলে নিতুড়িয়া-ঝাড়খণ্ড রাজ্য সড়ক অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। প্রায় চার ঘণ্টা রাস্তা অবরুদ্ধ থাকে। পরে আন্দোলনকারীরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কাজ বন্ধ না করলে আগামী দিন ডিভিসির ঝাড়খণ্ডের সদর দপ্তরে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেয়। এরপর বিক্ষোভ তুলে নেওয়া হয়। এদিন পুরুলিয়া থেকে রাজেন টুডু, পরেশ মারান্ডি, ঝাড়খণ্ড থেকে মুক্তার আনসারি প্রমুখ নেতৃত্ব দেন।  নিজস্ব চিত্র

    ঝাড়খণ্ডের নিরসা এলাকার কেলিয়াসোতার সার্কেল অফিসার অশোককুমার সিনহা বলেন, এদিনের আন্দোলন অগণতান্ত্রিক। কোনও অনুমতি ছাড়াই আন্দোলন করা হয়েছিল। সেজন্য আন্দোলনকারীদের আটকে দেওয়া হয়েছিল।

    জানা গিয়েছে, পাঞ্চেত জলাধারে সিঁদরি পর্যন্ত প্রায় ২৩ কিলোমিটার জুড়ে সোলার প্রকল্পের কাজ হবে। ফলে জলাধারের দুই পাশে থাকা শতাধিক গ্রামের আড়াই থেকে তিন হাজার মৎস্যজীবী জীবীকা হারাবেন। শুধু তাই নয়, পুরুলিয়ার নিতুড়িয়া থানা এলাকার রায়বাঁধ এবং গুনিয়াড়া দু’টি পঞ্চায়েত এলাকার মানুষকে সদর ব্লকের কাজের জন্য নৌকায় নদী পেরতে হয়। সেক্ষেত্রে প্রকল্পের কাজ হলে ৩০ কিলোমিটার ঘুরে আসতে হবে। আবার কিছু পরিবারকে উচ্ছেদ করা হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

    এদিন রাজেনবাবু বলেন, এলাকার উন্নয়নের জন্য কংগ্রেস সরকারের আমলে পাঞ্চেত জলাধার বাঁধানো হয়েছিল। সেই সময় ১৫৭টি মৌজার প্রায় ১০ হাজার মানুষকে উচ্ছেদ করা হয়েছিল। কথা ছিল সকলের পুনর্বাসন এবং প্রতিটি পরিবারকে চাকরি দেওয়া হবে। কারও পুনর্বাসন হয়নি। খুব জোর ৬০ জনকে চাকরি দেওয়া দিয়েছিল। সেই ডিভিসি আবার এলাকার মানুষের জীবন জীবীকা নষ্টের জন্য নেমেছে। তারই বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন। আগামী দিনে বৃহত্তর আন্দোলন করা হবে।
  • Link to this news (বর্তমান)