• কেঁচো খুড়তে কেউটে: অভিযোগকারীর নামেই ঝুলে সাইবার জালিয়াতির মামলা
    বর্তমান | ১৬ অক্টোবর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: কোম্পানি থেকে লভ্যাংশের টাকা মেলেনি। একথা জানাতে থানায় গিয়েছিলেন এক অভিযোগকারী। কিন্তু কেঁচো খুড়তে গিয়ে বেরিয়ে পড়ল কেউটে। জানা গেল, অভিযোগকারীর নামেই কোটি টাকার মামলা ঝুলে রয়েছে বিধানগর কমিশনারেটের সাইবার শাখায়। কোম্পানিতে তাঁর সঙ্গী দুই ডিরেক্টরও এই মামলায় অভিযুক্ত। এরপরই আশুতোষ কর, নীতীশ রায়গুপ্ত ও রাইকুমার সিংকে মঙ্গলবার গ্রেফতার করে গল্ফগ্রিন থানা।

    পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, নিতীশ রায়গুপ্ত ও রাইকুমার সিং সাইবার প্রতারণার টাকা রাখার জন্য একটি  কোম্পানি খোলার সিদ্ধান্ত নেন। সেখানে ডিরেক্টর হবার পরামর্শ দেন আশুতোষকে। তাকে বলা হয় কোম্পানিতে ডিরেক্টর হলে মাসে মাসে যা লাভ হবে, তার একটা বড় অংশ লভ্যাংশ হিসেবে মিলবে। টাকার লোভে আশুতোষ কোম্পানিতে ডিরেক্টর হতে রাজি হন। আশুতোষ জানতেন কলকাতা সহ বিভিন্ন রাজ্য থেকে আসা প্রতারণার টাকা এখানে জমা পড়ছে। তিন কোটি আসার পর তার লভ্যাংশ চান আশুতোষ। কিন্তু তা দিতে রাজি হননি বাকি ২ অংশীদার নীতীশ ও রাইকুমার। এই নিয়ে গোলমাল বাঁধে। এরপর এই দুজনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানাতে মঙ্গলবার গল্ফ গ্রিন থানায় হাজির হন আশুতোষ। পুলিশ ওই কোম্পানির নথি দেখার পাশাপাশি আশুতোষের প্যান নম্বর দিয়ে সার্চ করে জানতে পারে, তাঁর নামে আরও একাধিক কোম্পানি রয়েছে, যেখানে সাইবার জালিয়াতির টাকা আসছে। ওই কোম্পানিতে প্রতারণার ২০ কোটি জমা পড়েছে বলে জানা যায়। এই নিয়ে বিধাননগর কমিশনারেট তদন্ত করছে। এরপরই তদন্ত অন্য দিকে মোড় নেয়। আশুতোষকে জিজ্ঞাসা করতেই জানা যায়, সে ও তাঁর দুই বন্ধু সাইবার জালিয়াতিতে যুক্ত। তাঁরা কোম্পানি খুলেছেন প্রতারণার টাকা জমা করার জন্য। কোম্পানির নামে একাধিক কারেন্ট অ্যাকাউন্ট রয়েছে। অনেকদিন ধরেই তাঁরা এই কাজ করছেন। এরপরই পুলিশ আশুতোষকে গ্রেফতার করে। তাকে জেরা করে বাকি দু’জনের সন্ধান পাওয়া যায়। দক্ষিণ কলকাতায় হানা দিয়ে নীতীশ ও রাইকুমারকে গ্রেফতার করা হয়। বুধবার তিনজনকে আলিপুর আদালতে তোলা হলে অভিযুক্তদের হয়ে লিগ্যাল এডের আইনজীবী সৈকত রক্ষিত বলেন, তাঁরা সাইবার জালিয়াতি করেছেন, এমন কোনও প্রমাণ নেই। জমা পড়া টাকা যে প্রতারণার, তার সপক্ষেও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। সরকারি আইনজীবী সৌরীণ ঘোষাল বলেন, তিনজনই সাইবার জালিয়াতিতে যুক্ত। তদন্তে তা উঠে আসছে। সওয়াল শেষে তাদের জেল হেফাজতে পাঠায় আদালত।
  • Link to this news (বর্তমান)