• উন্নয়নের কাজে অযৌক্তিক বাধা বরদাস্ত নয়, বার্তা ববির, ছটের পর মার্কাস স্কোয়ারে জলাধার নির্মাণের কাজ শুরু করাব: মেয়র
    বর্তমান | ১৬ অক্টোবর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: মহম্মদ আলি পার্কে থাকা পুরনো এবং ভাঙা অবস্থায় রয়েছে ভূগর্ভস্থ জলাধার। তার বিকল্প হিসেবে মার্কাস স্কোয়ারে নতুন জলাধার তৈরির পরিকল্পনা করেছে কলকাতা পুরসভা। কিন্তু টাকা বরাদ্দ করা হলেও স্থানীয় স্তরের রাজনৈতিক সমস্যার কারণে কাজ এতদিনেও শুরু করা যায়নি। এ নিয়ে বুধবার কলকাতা পুরসভার মাসিক অধিবেশনের প্রশ্নোত্তর পর্বে আক্ষেপ করেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তিনি জানান, কালীপুজোর পর নিজে দাঁড়িয়ে থেকে কাজ শুরু করাবেন। কোনও প্রকার সমস্যা উন্নয়নের ক্ষেত্রে রেয়াত করা হবে না। স্থানীয় স্তরের রাজনৈতিক বিরোধিতায় উন্নয়ন আটকাতে পারে না।

    এদিন এই জলাধার নির্মাণ এবং সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে পানীয় জলের সমস্যা নিয়ে অধিবেশনে প্রশ্ন করেছিলেন ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার বিশ্বরূপ দে। তখন মেয়র জানান, এর আগেও একাধিকবার তিনি মার্কাস স্কোয়ার পরিদর্শন করেছেন। সেখানকার লোকজনের সঙ্গে আলোচনাও করেছিলেন। কিন্তু তারপরও কাজ শুরু করা যায়নি। কাজ করতে গেলে স্থানীয়রা বাধা দিয়েছে। পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঠিক হয়েছিল মাঠের কম ক্ষতি করে আংশিক ভূগর্ভস্থ এই জলাধার ও বুস্টার পাম্পিং স্টেশন তৈরি করা হবে। নতুন জলাধারটি নির্মাণ হবে মহাজাতি সদনের পিছনে কলেজ স্ট্রিটে মার্কাস স্কোয়ারে। যেহেতু মার্কাস স্কোয়ারে শিশুদের পার্কের পাশাপাশি বড়দের খেলার জন্য মাঠও রয়েছে, তাই সেখানে জলাধার নির্মাণের ক্ষেত্রে প্রাথমিক কিছু জটিলতা রয়েছে। সেখানে কোন অংশে জলাধার নির্মাণ করা হবে, কতটা এলাকাজুড়ে কাজ হবে, সে সব নিয়ে ভিন্নমত ছিল। অভিযোগ, জলাধার নির্মাণ করা হলে মাঠ থাকবে না, এ নিয়ে স্থানীয় মানুষকে ভুল বুঝিয়ে অসন্তোষ, গন্ডগোল পাকাচ্ছেন ওই অঞ্চলেরই কিছু বাসিন্দা। কলকাতা পুরসভার ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার জসিমউদ্দিন ও তাঁর বিরোধী গোষ্ঠীর চাপানউতোরে এই কাজ হচ্ছে না বলে অভিযোগ। মেয়র বলেন, স্থানীয় স্তরের কিছু রাজনৈতিক সমস্যার কারণে ওই কাজ শুরু করা যায়নি। আমি গেলেই সকলে এক হয়। কিন্তু পরে কাজ করতে দেয় না। উন্নয়নের কাজে এই ধরনের বাধা বরদাস্ত করা হবে না। পানীয় জল স্পর্শকাতর বিষয়। কালীপুজো, ছটপুজোর পর আমি নিজে যাব এবং দাঁড়িয়ে থেকে কাজ শুরু করাব। মার্কাস স্কোয়ারে বিকল্প জলাধার তৈরি না হলে মহম্মদ আলি পার্কের জলাধারের সংস্কারের কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। মধ্য কলকাতায় বিস্তীর্ণ অঞ্চলে পানীয় জল সরবরাহ বন্ধ করা যাবে না। সেই কারণেই প্রায় ভগ্ন অবস্থার মহম্মদ আলি পার্কের জলাধারের কাজ শুরু করা জরুরি। এই পার্কে ব্রিটিশ আমলে তৈরি যে জলাধারটি রয়েছে, সেটি পার্কের প্রায় ৭৫ শতাংশ দখল করে রয়েছে। ২০১৯ সালে এই জলাধারে ফাটল দেখা দেয়। ধস নামে পার্কের একটি অংশে। জলাধারের গভীরতা প্রায় ২০ ফুট। সেসময় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ দল ও পুরসভার আধিকারিকরা নীচে নেমে ট্যাঙ্কের অবস্থা দেখেছিলেন।

    পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মহম্মদ আলি পার্কের জলাধার বন্ধ না রেখে সংস্কার সম্ভব নয়। আবার প্রায় সাড়ে চার মিলিয়ন গ্যালন ক্ষমতাসম্পন্ন এই জলাধার বন্ধ রাখাও অসম্ভব। বহু এলাকায় জল এখান থেকে সরবরাহ করা হয়। প্রায় পাঁচ লক্ষ মানুষ এই জলাধারের জলের উপর নির্ভরশীল। তাই মার্কাস স্কোয়ারে সম পরিমাণ ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন বিকল্প জলাধার নির্মাণ করে সেখান থেকে জল সরবরাহ চালু করার পরই মহম্মদ আলি পার্কের জলাধার সংস্কার করা হবে।
  • Link to this news (বর্তমান)