• মন্ত্রী সাবিনাকে বাংলাদেশে পাঠানোর হুমকি সুকান্তর
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ১৬ অক্টোবর ২০২৫
  • এসআইআর সংক্রান্ত বিষয়কে ঘিরে রাজ্যের রাজনৈতিক উষ্ণতা যথেষ্ট বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই পরিস্থিতি যে কোনো মুহূর্তে আরও তীব্র বিস্ফোরণাত্মক হয়ে উঠতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এই ইস্যুতে স্পষ্ট করেছেন যে, ‘প্রত্যেক বৈধ ভোটারের নাম থাকাটা জরুরি’। তিনি বলেন, ‘যাঁরা বৈধ ভারতীয় নাগরিক, তাঁদের নাম রাখা হবে। কিন্তু যাঁরা বাংলাদেশি হয়ে অনুপ্রবেশ করেছেন, তাঁদের নাম তালিকায় থাকবে না।’

    সুকান্ত মজুমদারের এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে মালদহে অনুষ্ঠিত বিজয়া সম্মিলনী থেকে বক্তব্য দিতে গিয়ে তৃণমূলনেত্রী সাবিনা ইয়াসমিন নির্বাচন কমিশনকে কড়া আক্রমণ করেছেন। তিনি ঐ সভায় হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘একটা লোকের নামও যদি অযাচিতভাবে ভোটার তালিকা থেকে বাদ যায়, তাহলে আমি সাবিনা ইয়াসমিন মোথাবাড়িকে লন্ডভন্ড করে রেখে দেব।’

    সাবিনা আরও বলেন, ‘২০০২ সালে নদী ভাঙনে বা অন্য কোনও কারণে নথি নষ্ট হওয়া অনেক মানুষ রয়েছেন; তাঁদের নাম যদি এবারও বাদ দেওয়া হয়, আমরা ছেড়ে কথা বলব না।’ এই আক্রমণাত্মক ভাষা রাজনৈতিক মহলে বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। এ বিষয়ে পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। তিনি সাবিনার উদ্দেশে বলছেন, ‘যদি আপনার নাম এসআইআর-এ না থাকে এবং আপনি যদি বাংলাদেশি হন, আপনাকেও এখানে রাখা হবে না। আপনাকেও বাইরে যেতে হবে।’ মজুমদার বলেন, বিষয়টি আইনি ও প্রশাসনিক তদন্তের বিষয়।

    এই আবহে নির্বাচন কমিশনের সদস্যরা ইতিমধ্যেই কয়েকটি জেলা ঘুরে দেখেছেন এবং এসআইআর-এর প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গিয়েছে। রাজ্যের কিছু এলাকায় ইতিমধ্যে দলীয় কর্মসূচি ও জনসভা আরও জোরদার করা হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো তাদের সমর্থকদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা করছেন।

    রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এসআইআরকে কেন্দ্র করে সাম্প্রতিক এই উত্থান-পতন কয়েকটি সংবেদনশীল প্রশ্ন সামনে এনেছে। প্রথমত বৈধ নাগরিকত্ব প্রমাণের সমস্যা, নদীভাঙন ও দস্তাবেজ নষ্ট হওয়া এবং রাজ্যের জনসংখ্যাগত জটিলতা। তাঁরা আশঙ্কা করছেন, যদি সাংবিধানিক ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা সময়মতো ও স্বচ্ছভাবে না চলে, তাহলে মানুষের ক্ষোভ দ্রুত মারাত্মক হিংসাত্মক রূপ নিতে পারে।

    স্থানীয় প্রশাসন ও নিরাপত্তা বাহিনী ইতিমধ্যে সতর্কতা জারি করেছে এবং নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মেনে চলার উদ্যোগ নিচ্ছে। নির্বাচনী ব্যবস্থা ও ভোটার তালিকার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে সকল পক্ষকেই আলোচনায় বসার আহ্বান জানানো হয়েছে। তবে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক আবহে সেই উত্তেজনা সহজে কমার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)