ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সমীক্ষার (এসআইআর) বিরোধিতায় হিংসা ছড়ানোর চেষ্টা হলে গুলি চলবে বলে হুঁশিয়ারি দিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। বুধবার কলকাতায় বিজেপির তফসিলি উপজাতি মোর্চার ডাকা মিছিল শুরুর আগে সুকান্ত এই মন্তব্য করেছেন। একটি সম্প্রদায়ের নাম করে তিনি এই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। পাল্টা ‘আগুন জ্বলা’র হুঁশিয়ারি শোনানো হয়েছে তৃণমূলের তরফ থেকে।
মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছিল বিজেপির জনজাতি সাংসদ খগেন মুর্মু এবং বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের উপরে হামলার প্রতিবাদে। রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও উত্তরপূর্ব উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত-সহ বঙ্গ বিজেপির প্রথম সারির প্রত্যেক নেতা (হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শমীক ভট্টাচার্য ছাড়া) বুধবারের এই মিছিলে উপস্থিত ছিলেন। কলেজ স্কোয়্যার থেকে শুরু হয়ে মিছিল যায় ধর্মতলার ডোরিনা ক্রসিং পর্যন্ত। মিছিল শুরুর আগে কলেজ স্কোয়্যারের সামনে দাঁড়িয়ে ভাষণ দেওয়ার সময়ে সুকান্ত-সহ একাধিক নেতার মুখেই এসআইআর প্রসঙ্গ উঠে আসে। সুকান্তের হুঁশিয়ারি অন্য সকলকে ছাপিয়ে যায়।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, ‘‘সাধারণ মুসলিম ভাইদেরকে, যাঁরা আমাদের ভোট দেন না, তাঁদেরও বলছি, তৃণমূলের নেতাদের কথায় রাস্তায় নামবেন না। রাস্তায় নামলে কেন্দ্রীয় বাহিনী নামবে। যে রকম মুর্শিদাবাদে নেমেছিল।’’ এখানেই থামেননি সুকান্ত। হুঁশিয়ারির সুর আরও চড়িয়ে তিনি বলেন, ‘‘যদি ভাঙচুর করেন, দোকানঘর পোড়ান, বাড়িতে আক্রমণ করেন, তৃণমূলের কোনও নেতার ছেলের জীবন যাবে না। কেন্দ্রীয় বাহিনী নামলে কিন্তু গুলি চলবে, আপনার বাড়ির লোকেদের গুলি লাগবে। তৃণমূলের নেতারা এসি ঘরে বসে থাকবেন। তাঁদের কিন্তু গুলি লাগবে না। তাই তৃণমূলের ফাঁদে পা দেবেন না।’’ সুকান্তের পরামর্শ তথা আশ্বাস, ‘‘আগে ভাল করে বুঝুন। মুসলিম হন, হিন্দু হন, যাঁরা ভারতীয়, তাঁদের নাম ভোটার তালিকায় থাকবে।’’
গত এপ্রিলে যখন মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ান, শমসেরগঞ্জ এলাকায় হিংসাত্মক পরিস্থিতি তৈরি হয়, তখনও দ্রুত বিএসএফ নামানোর বিষয়ে সুকান্তের সক্রিয় ভূমিকা ছিল। রাজ্যে এসআইআর কয়েক দিনের মধ্যেই শুরু হবে বলে যখন বিজেপি নেতারা বার বার দাবি করছেন, তখন ফের সুকান্তের মুখে একই রকম হুঁশিয়ারিকে তাই অনেকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন।
তৃণমূলের তরফ থেকেও পাল্টা হুঁশিয়ারি শোনানো হয়েছে। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা ব্যারাকপুরের সাংসদ পার্থ ভৌমিক বলেছেন, ‘‘আমাদের একটাই বক্তব্য। কোনও বৈধ ভোটারের নাম বাদ দেওয়া যাবে না। বাদ গেলে আগুন জ্বলে যাবে।’’