আজকাল ওয়েবডেস্ক: তামিলনাড়ু সরকার বুধবার এক বিবৃতিতে স্পষ্ট জানিয়েছে, “রাজ্যে হিন্দি ভাষার সব রূপ নিষিদ্ধ করার মতো কোনো বিল আনা হচ্ছে না” — এমন খবর সম্পূর্ণ মিথ্যা। সম্প্রতি কিছু সংবাদমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দাবি ওঠে যে মুখ্যমন্ত্রী এম. কে. স্ট্যালিন রাজ্য বিধানসভায় একটি বিল উপস্থাপন করেছেন, যাতে হিন্দি ভাষায় লেখা হোর্ডিং, সিনেমা কিংবা অন্য যেকোনো ধরনের হিন্দি ভাষার প্রচার নিষিদ্ধ করা হবে। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই রাজনৈতিক মহলে বিতর্ক শুরু হয়।
তবে স্ট্যালিন নেতৃত্বাধীন দ্রাবিড় মুননেত্র কাজগম (ডিএমকে) সরকারের ফ্যাক্ট-চেক ইউনিট এক্স প্ল্যাটফর্মে সেই দাবি নস্যাৎ করে জানায়, “তামিলনাড়ু সরকার হিন্দি ভাষা নিষিদ্ধ করার মতো কোনো বিল আনার পরিকল্পনা করছে — এই দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও মিথ্যা। বিধানসভার সচিবালয়ও নিশ্চিত করেছে যে, এই বিষয়ে কোনো প্রস্তাব জমা পড়েনি।” সরকারের ফ্যাক্ট-চেক টিম আরও জানায়, “এই দাবির কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই। মুখ্যমন্ত্রী বা সরকার— কেউই এমন কোনো উদ্যোগ নেননি।”
এই ভুয়ো খবরকে কেন্দ্র করে রাজ্যে ‘হিন্দি আরোপ’ বিতর্ক ফের জোরদার হয়। বিজেপি-র তামিলনাড়ু শাখার সভাপতি কে. অন্নামালাই এক্স-এ পোস্ট করে ডিএমকে সরকারের সমালোচনা করে লেখেন, “অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যেখানে গুগলের সঙ্গে ১৫ বিলিয়ন ডলারের এআই ডেটা সেন্টার স্থাপনের জন্য ঐতিহাসিক চুক্তি করছেন, সেখানে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যে হিন্দি নিষিদ্ধ করার বিল আনার ব্যস্ততায় আছেন! ডিএমকে-র রাজনীতি একেবারে করুণ ও লক্ষ্যভ্রষ্ট।”
অন্নামালাইয়ের এই মন্তব্যের জবাবে ডিএমকে সাংসদ পি. উইলসন পাল্টা কটাক্ষ করে বলেন, “এই তথাকথিত ‘অ্যান্টি-হিন্দি বিল’-এর দাবি সম্পূর্ণ ভুয়ো খবর, যা ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের ফ্যাক্ট-চেক বিভাগ যাচাই করে মিথ্যা প্রমাণ করেছে। অন্নামালাই কি পাথরের নিচে বাস করছেন? তিনি কি জানেন না যে আমাদের মুখ্যমন্ত্রী এম. কে. স্ট্যালিনের দ্রাবিড় মডেল সরকার ইতিমধ্যেই লক্ষ কোটি টাকার বিদেশি বিনিয়োগ রাজ্যে এনেছে?”
তিনি আরও তথ্য দিয়ে জানান, “২০২১ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ৮৯৩টি সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষরিত হয়েছে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক কোম্পানির সঙ্গে, যার মাধ্যমে ১০,০৭,৯৭৪ কোটি টাকার বিনিয়োগ এসেছে এবং প্রায় ৩১,৫৩,৮৬২টি কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে তামিলনাড়ুতে।”
এই পুরো ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রাজনৈতিক মহলে আবারও পরিষ্কার হয়েছে, হিন্দি বিরোধিতা বা নিষিদ্ধ করার কোনো বিল তামিলনাড়ু সরকার আনেনি। বরং, রাজ্য সরকার এই খবরকে “সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর প্রচার” বলে অভিহিত করেছে। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জনগণকে অনুরোধ করা হচ্ছে যেন তারা এমন ভুয়ো খবর বিশ্বাস না করেন এবং যাচাই না করে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার না করেন।