সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ার: আলিপুরদুয়ার ১ নং ব্লকের শালকুমারে দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ও শিসামারা বাঁধ পরিদর্শন করলেন শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক। গোটা পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধেই সুর চড়ালেন রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী। তিনি আজ, বৃহস্পতিবার বলেন, ফি’বছর এই ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে ডুয়ার্সের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি ইন্দো-ভুটান যৌথ নদী কমিশন। যেটার জন্য মুখ্যমন্ত্রী বার বার কেন্দ্রকে চিঠি দিচ্ছেন। বার বার কথা বলছেন। কিন্তু কেন্দ্র কোনও পদক্ষেপ করছে না। এদিন সকাল থেকে শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক শালকুমারের বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখেন। ঘুরে দেখে শিসামারা নদীর ভেঙে যাওয়া ক্ষতবিক্ষত বাঁধও। পরে দুর্গত এলাকার মানুষের হাতে শ্রমমন্ত্রী ত্রাণ সামাগ্রীও তুলে দেন। দুর্যোগে হারিয়ে যাওয়া বাসিন্দাদের হাতে বিকল্প নথিপত্রও তুলে দেন। শ্রমমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন এলাকার বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল, সরকারি দপ্তরের অফিসার ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও।ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে ও দুর্গতদের সঙ্গে কথা বলার পর শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক বলেন, মানুষ ইতিমধ্যেই ত্রাণ পেয়েছে। রাজ্য সরকার সব ব্যবস্থা করেছে। দুর্যোগে যাঁদের নথিপত্র হারিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ইতিমধ্যেই তাঁদের হাতে বিকল্প নথি তুলে দেওয়া হয়েছে। বিকল্প নথির জন্য দুর্গত এলাকায় ক্যাম্প হচ্ছে। মানুষ যথেষ্ট খুশি। পরে শ্রমমন্ত্রী বলেন, আমাদের একটাই বক্তব্য ফি’বছর ভুটানের জলের ও ডলোমাইটের জেরে উত্তরের তিন চারটি জেলা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। মানুষের চাষবাস নষ্ট হচ্ছে। জমি নষ্ট হচ্ছে। নদীর পাড় ভাঙছে, বাঁধ ভাঙছে। তার জন্যই এই অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি ইন্দো-ভুটান রিভার কমিশন। কিন্তু সেই কমিশন গঠন করা হচ্ছে না।এরপরেই মন্ত্রী মলয় ঘটক কেন্দ্রকে নিশানা করে বলেন, কেন্দ্র এই অঞ্চলের মানুষের দাবির কথা শুনছে না। যে কমিশনের কথা মুখ্যমন্ত্রীও বার বার বলছেন। কেন্দ্রকে বার বার চিঠি দিচ্ছেন। কিন্তু কেন্দ্র কোনও পদক্ষেপ করছে না। মলয়বাবু মনে করিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী বার বার বলছেন বাংলার বন্যাগুলি ‘ম্যানমেড’ বন্যা। এর প্রতিবাদে আমরা ইতিমধ্যেই মাইথন ও পাঞ্চেতে প্রতিবাদ সভা করেছি। রাজ্যকে না জানিয়ে হাজার হাজার কিউসেক জল ছাড়া হচ্ছে ডিভিসি থেকে। সেই ম্যানমেড জলে ভাসছে হাওড়া, হুগলি ও পূর্ব বর্ধমান। শ্রমমন্ত্রী বলেন, অথচ তার জন্য ডিভিসি কর্তৃপক্ষ রাজ্যকে কোন ক্ষতিপূরণও দিচ্ছে না। কেন্দ্রকে ফের নিশানা করে শ্রমমন্ত্রী বলেন, ২০১১ সালের পর থেকে কেন্দ্র দুর্যোগে রাজ্যকে কোনও ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে না। কেন্দ্রের এই বঞ্চনার কথা মানুষের সামনে তুলে ধরতে হবে।