গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়ে ফের ডুবে গেল ট্রলার। বকখালি থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে ডুবে যাওয়া ট্রলার থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ১৬ জন মৎস্যজীবীকে। বুধবার সকালে উদ্ধার হয়েছে ফ্রেজারগঞ্জ উপকূল থানার বিজয়বাটির বাসিন্দা কমল জানা (৩৭) নামে এক মৎস্যজীবীর দেহ। এখনও নিখোঁজ এক জন। তাঁর খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে প্রশাসন।
‘কাকদ্বীপ মৎস্যজীবী ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক বিজন মাইতি বলেন, ‘‘আবহাওয়া তখন খারাপ ছিল না। কিন্তু হঠাৎ ঢেউয়ের ধাক্কায় ট্রলার উল্টে যায়। এক জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে, এক জন এখনও নিখোঁজ। ট্রলারের যান্ত্রিক ত্রুটি ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে।
এসডিপিও (সাগর) সুমনকান্তি ঘোষ জানিয়েছেন, উপকূল রক্ষী বাহিনী ও প্রশাসন তল্লাশি চালাচ্ছে। আবহাওয়া যতক্ষণ অনুকূলে থাকবে, ততক্ষণ অনুসন্ধান চলবে।
পুলিশ সূত্রের খবর, মঙ্গলবার নামখানার হরিপুরের লালগঞ্জ থেকে ২৩ জন মৎস্যজীবীকে নিয়ে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যায় তিনটি ট্রলার। যেখানে ট্রলারডুবি হয়েছিল, সেই জায়গাটি তুলনামূলক ভাবে অগভীর। ভাটার সময়ে সেখানে খুঁটি পুঁতে জাল ফেলার কাজ চললেও জোয়ারে সে গভীরতা বোঝা যায় না বলে জানাচ্ছেন অভিজ্ঞ মৎস্যজীবীরা। সেখানেই ১৮ জন মৎস্যজীবীকে নিয়ে ডুবে যায় ‘এফবি মঙ্গলচণ্ডী’ নামে ট্রলারটি।
১৬ জন সাঁতরে অন্য একটি ট্রলারে উঠে প্রাণে বাঁচেন। এখনও নিখোঁজ দেবনিবাসের বাসিন্দা দেবনাথ কর। বুধবার সকালে দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রলারটিকে যখন উপকূলে টেনে আনা হয়, তখনই কমলের দেহ পাওয়া যায় ট্রলারের খোলের মধ্যে। উদ্ধার হওয়া ১৬ জন মৎস্যজীবীকে উপকূলে ফিরিয়ে এনে প্রাথমিক চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা হয়।
দুর্ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে ট্রলারের মাঝি ভোলা ভুঁইয়া বলেন, ‘‘গভীর সমুদ্রে জাল পেতে মাছ ধরছিলাম। হঠাৎ বড় ঢেউ এসে ধাক্কা দেয়। মুহূর্তের মধ্যে ট্রলার উল্টে যায়। আমরা কয়েক জন জলে ঝাঁপ দিই। দূরে থাকা অন্য ট্রলারে গিয়ে উঠি। কিন্তু সারা রাত খুঁজেও দু’জনকে পাওয়া যায়নি!’’