দলীয় সাংসদ, বিধায়কের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা এবং দুর্গাপুরের ধর্ষণ-কাণ্ডের প্রতিবাদে পথে নেমে সরাসরি ‘বদলা’র হুঁশিয়ারি দিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেই সঙ্গে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) প্রক্রিয়ার বিরোধিতায় পথে নামলে ‘গুলি চলবে’ বলে হুঁশিয়ারি শোনা গেল কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদারের গলায়। পাল্টা জেলায় জেলায় উত্তেজনা ছড়ালে তার দায় কে নেবে, এই প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।
উত্তরবঙ্গে দুর্গত এলাকায় ত্রাণ বিলি করতে গিয়ে বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু ও দলের বিধানসভার সচেতক শঙ্কর ঘোষের আক্রান্ত হওয়া ও দুর্গাপুরের ধর্ষণ-কাণ্ডের প্রতিবাদে রাজ্য বিজেপির ডাকে বুধবার কলেজ স্কোয়ার থেকে ধর্মতলার ডোরিনা ক্রসিং পর্যন্ত মিছিল ছিল। নেতৃত্বে ছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত , রাজ্য সাধারণ সম্পাদক লকেট চট্টোপাধ্যায়, জ্যোতির্ময় সিংহ মাহাতো প্রমুখ। মিছিলে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। বিশেষ করে, আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষের উপস্থিতি ছিল নজর-কাড়া। এই মিছিলকে কেন্দ্র করে দীর্ঘ সময় মধ্য কলকাতা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছিল।
মিছিল শেষে সভা থেকে শুভেন্দু বলেছেন, “এক জন আদিবাসী মূলবাসী মানুষ, যিনি দু’বারের সাংসদ, ভোট চাইতে নয়, ত্রাণ নিয়ে দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়াতে গিয়েছিলেন। জেহাদিরা তাঁকে আক্রমণ করেছে। এই ঘটনা প্রমাণ করে দিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তাঁর দল, পুলিশ-প্রশাসন আদিবাসী-বিরোধী।’’ এর পরেই তাঁর হুঁশিয়ারি, “এই রক্ত দেখে আপনাদের রক্ত গরম হয়েছে তো? আদিবাসীরা আমাদের সৃষ্টিকর্তা। জল-জঙ্গলের মালিক। এর জন্য বদল চাই। আর বদল হলে সুদে-আসলে বদলা হবে!’’
তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের পাল্টা বক্তব্য, ‘‘বদল যেখানে হবেই না, সেখানে এ সব বলে উত্তেজনা ছড়াচ্ছেন কেন? এতে জেলায় জেলায় বিজেপি কর্মীরা উত্তেজিত হয়ে কিছু করলে তার দায়িত্ব কি শুভেন্দু নেবেন? তা ভেবে এই রকম প্ররোচনা দেবেন।’’
মিছিল শুরুর আগে হুঁশিয়ারির সুর শোনা গিয়েছে সুকান্তের গলাতেও। কলেজ স্কোয়ারের সভামঞ্চ থেকে তিনি এসআইআর-প্রসঙ্গ উল্লেখ করে ফের বলেছেন, “সংখ্যালঘু ভাইয়েরা যাঁরা আমাদের ভোট দেন না, তাঁদের কাছে আবেদন, তৃণমূলের কথা শুনে রাস্তায় নামবেন না। গাড়িতে আগুন দেওয়া, বাড়ি-দোকান ভাঙচুর, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করলে কিন্তু কেন্দ্রীয় বাহিনী নামবে। আর সোজা গুলি করবে! কোনও তৃণমূল নেতার ছেলের কিছু হবে না। ওরা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে বসে থাকবে। প্রাণ যাবে আপনার। তাই তৃণমূলের পাতা ফাঁদে পা দেবেন না!’’ তৃণমূলের পাল্টা অভিযোগ, বিজেপির নেতা ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরাই এসআইআর নিয়ে উত্তেজনা তৈরি করছেন।