একমাত্র বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র অনুমোদিত ‘ওরাল রিহাইড্রেশন সলিউশন’ (ওআরএস) ছাড়া কোনও পানীয়কে ওআরএস নাম দিয়ে বিক্রি করা যাবে না! ‘ভুয়ো’ ওআরএস-এর বিক্রি রুখতে এ বার কড়া পদক্ষেপ করল কেন্দ্রের খাদ্য সুরক্ষা ও গুনমান দফতর (এফএসএসএআই)। নয়া নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, হু-র অনুমোদন ছাড়া এখন থেকে কোনও খাদ্যপণ্যের নামকরণে ‘ওআরএস’ শব্দটি রাখা যাবে না। শুধু, তা-ই নয়, এ ধরনের সমস্ত পণ্য বাজার থেকে সরিয়ে ফেলার ব্যবস্থা করতে হবে।
১৪ অক্টোবর জারি করা ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, সমস্ত খাদ্যপণ্যের নাম ও বিজ্ঞাপন থেকে ‘ওআরএস’ শব্দটি অবিলম্বে সরিয়ে ফেলতে হবে। এমনকি, ট্রেডমার্কের অংশ হিসেবেও পণ্যের নামে এই শব্দটি ব্যবহার করা যাবে না। ২০০৬ সালের খাদ্য সুরক্ষা ও গুণমান আইনের অধীনে এই নির্দেশ হয়েছে। বলা হয়েছে, একমাত্র বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দ্বারা অনুমোদিত পণ্যই ওআরএস নাম ব্যবহার করে বাজারে আনা যাবে।
এর আগে ২০২২ সালেও এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশিকা জারি করেছিল কেন্দ্র। ‘বিকল্প ওআরএস’ নাম দিয়ে খাদ্যপণ্যের বিক্রি এবং বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপন রুখতে ওই পদক্ষেপ করা হয়েছিল। তবে নির্দেশে বলা হয়েছিল, যে কোনও সংস্থার নামের সঙ্গে শেষে বা প্রথমে ওআরএস শব্দটি জোড়া যাবে। সঙ্গে ‘এটি হু-র অনুমোদিত ওআরএস নয়’— পণ্যের লেবেলে এই মর্মে সতর্কীকরণও দেওয়া থাকতে হবে। কিন্তু তাতে উল্টে দেখা যায়, ফলের রস নির্ভর পানীয় কিংবা নন-কার্বেনেটেড মিষ্টি পানীয়ের ক্ষেত্রেও ‘ওআরএস’ শব্দটি দেদার ব্যবহার করা হচ্ছে। এর পরেই এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আন্ত্রিক, ডায়রিয়া কিংবা শরীরে জলশূন্যতা (ডিহাইড্রেশন)-এর ক্ষেত্রে ওআরএস-এর জুড়ি মেলা ভার। দেহে জলশূন্যতা দেখা দিলে প্রয়োজনীয় লবণ ও শর্করা শরীর থেকে বেরিয়ে যেতে থাকে। সেই ঘাটতি মেটাতে রোগীকে ওআরএস খাওয়ানোর প্রচলন রয়েছে। তবে এ ধরনের ‘ভুয়ো’ ওআরএস-এর বিক্রি বাড়তে থাকায় স্বাস্থ্যক্ষেত্রেও গুরুতর ঝুঁকির সম্ভাবনা থাকে। কারণ, হু-র অনুমোদন ছাড়াই দেশের বহু ওষুধের বিপণিতে ‘ওআরএস’ নামে সেই সব পণ্য বিক্রি করা হচ্ছিল। সেই আবহেই এ বার কড়া পদক্ষেপ করল কেন্দ্র।