• ‘কিছু না করেই ৮ কোটির সম্পত্তি কীভাবে?’ ভোটমুখী বিহারে তেজস্বীকে কটাক্ষ বিজেপি, জেডিইউ-র
    প্রতিদিন | ১৭ অক্টোবর ২০২৫
  • বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: বিহার ভোটের মুখে লালুপুত্র তেজস্বী যাদবের সম্পত্তির পরিমাণ নিয়ে সরগরম পাটলিপুত্রের রাজনীতি। নির্বাচন কমিশনে মনোনয়ন জমা দিতে গিয়ে তিনি যে হলফনামা পেশ করেছেন তাতে সম্পত্তির পরিমাণ দেখানো হয়েছে ৮ কোটি টাকা। এত সম্পত্তির মালিক হলেন কিভাবে তেজস্বী, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে রাজনৈতিক মহলে। আক্রমণ শানিয়েছে নীতিশ কুমারের দল জেডিইউ এবং বিজেপি। বিজেপি নেতৃত্বের প্রশ্ন, দুর্নীতি করে তেজস্বী যাদব যে অর্থ রোজগার করেছেন হলফনামায় তার উল্লেখ নেই কেন। লালুপুত্রের বিরুদ্ধে আরও তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে বলে দাবি জেডিইউ-এর। যদিও সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করেছে সিবিআই।

    বিহারের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী তথা আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদবের সম্পদের পরিমাণ নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে জোর আলোচনা শুরু হয়েছে। স্থাবর-অস্থাবর মিলিয়ে তিনি প্রায় ৮ কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক। ‌এই বিপুল সম্পদের উৎস কী, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। অন্যদিকে বিজেপির কটাক্ষ, লালুপুত্রের ঘুষের টাকা গেল কই?‌ তিনি তো হলফনামায় এই অর্থের কোনও উল্লেখ করেননি।

    পাটনার অদূরে রাঘোপুর বিধানসভা কেন্দ্রে মঙ্গলবার মনোনয়নপত্র পেশ করেন‌ তেজস্বী। সেখানে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা করা হলফনামায় তিনি উল্লেখ করেছেন, ২০২৪-২৫ সালে তাঁর বাৎসরিক আয়ের পরিমাণ ছিল ১১ লক্ষ ৪৬ হাজার ৬১০ টাকা।‌ আয়কর রিটার্নে তেজস্বী এই হিসাব পেশ করেছেন।‌ ২০২১-২২ সাল‌ থেকে আয়কর রিটার্নের ধারাবাহিক হিসাব পেশ করেছেন এই নেতা। সেই হিসাবে দেখা যাচ্ছে, বিগত পাঁচ বছর ধরে প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বীর আয় ভাল পরিমাণে বেড়েছে। ২০২০-২১ সালে‌‌ তেজস্বীর আয়ের পরিমাণ ছিল দু’লাখ ১৪ হাজার টাকা। ‌হলফনামার বিরোধী শিবিরের মুখ্যমন্ত্রী মুখ তেজস্বী জানিয়েছেন, তাঁর স্থাবর সম্পত্তির বাজারদর ছ’কোটি টাকার বেশি। এছাড়া প্রায় দু’কোটি টাকার অঅস্থাবর সম্পত্তি আছে। ‌

    সমাজমাধ্যমে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, তেজস্বীর এই বিপুল সম্পদের উৎস কী? কারণ তিনি এই মুহূর্তে কোনও ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত নন।‌ বিধানসভার সদস্য হিসেবে পেনশনই একমাত্র তাঁর রোজগার।‌ কেউ কেউ বলছেন যদি বিবাহসূত্রে শ্বশুরবাড়ি থেকে সম্পদ পেয়ে থাকেন, তবে তা যৌথ সম্পত্তির তালিকাভুক্ত হওয়ার কথা। কিন্তু তেজস্বী তাঁর স্ত্রীর রোজগারের পৃথক তালিকা ফলকনামায় জমা করেছেন। এই সুযোগে বিজেপি এবং জেডিইউ নেতারা প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন, রেলের টাকা, জমির বিনিময়ে চাকরি এবং দুটি হেরিটেজ হোটেল বেসরকারি কোম্পানিকে লিজ দেওয়ায় তেজস্বী যে বিপুল টাকা পেয়েছেন হলফনামায় তার উল্লেখ নেই।

    প্রসঙ্গত, দুটি মামলাতেই মূল আসামি লালু প্রসাদ যাদব। তিনি ২০০৪ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত রেলমন্ত্রী থাকাকালীন জমির বিনিময়ে বহু মানুষকে রেলে চাকরি দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। এছাড়া রাঁচি ও পুরীতে অবস্থিত রেলের দুটি হেরিটেজ হোটেল বেসরকারি কোম্পানিকে বেআইনিভাবে লিজ দিয়েছেন বলে সিবিআই আদালতে চার্জশিট পেশ করেছে। প্রথম মামলায় শুনানি শেষ হয়েছে। ‌এখন শুধু বাকি সাজা ঘোষণা। দ্বিতীয় মামলায় আদালতে সিবিআই চার্জশিট পেশ করেছে। আদালত সিবিআই-এর চার্জশিটকে মান্যতা দিয়ে বিচার শুরুর নির্দেশ দিয়েছে।
  • Link to this news (প্রতিদিন)