দীপাবলিতে ‘হিট’ ১২ বছরের বালকের তৈরি মোমবাতি, গৃহসজ্জার নানা সামগ্রী
বর্তমান | ১৭ অক্টোবর ২০২৫
দিব্যেন্দু বিশ্বাস, নয়াদিল্লি; ফি বছর দীপাবলির আগে মোমবাতি, নানান বাহারি আলো থেকে ঘর সাজানোর নানান জিনিসের চাহিদা থাকে তুঙ্গে। এ বছর দীপাবলির সেই বাজারে রীতিমতো ‘সুপারহিট’ ১২ বছরের এক কিশোরের তৈরি মোমবাতি ও গৃহসজ্জার বিভিন্ন সামগ্রী। পড়াশোনার চাপ সামলে আপাতত নিজের প্যাশনেই অক্সিজেন খুঁজে নিচ্ছে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া উজ্জ্বল অচ্যুতা। স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে এনিয়ে বিশেষ উৎসাহ না থাকলেও উজ্জ্বলের পাশে রয়েছেন তার বাবা-মা, আত্মীয়রা। নিজের তৈরি সামগ্রী বিক্রির জন্য প্রথমবার ‘স্টল’ও দিয়েছে উজ্জ্বল। যদিও প্রতি সন্ধ্যায় সেই ‘স্টল’ সামাল দিচ্ছেন তার মা-বাবা। পড়াশোনার চাপ ও স্কুলের হোমওয়ার্ক সামলে কখনও কখনও মা-বাবার সঙ্গে স্টলে বসছে উজ্জ্বল। সবদিক দক্ষভাবে সামাল দেওয়ার পাশাপাশি ক্রেতাদের সঙ্গে দরদামও করছে সে।
ন্যাশনাল ক্যাপিটাল রিজিওনের (এনসিআর) অন্যতম প্রধান শহর গাজিয়াবাদ। দিল্লি থেকে উত্তরপ্রদেশের এই জেলা শহরের দূরত্ব কমবেশি ২৫ কিলোমিটার। উজ্জ্বল অচ্যুতা এবং তার বাবা-মা আদতে অন্ধ্রপ্রদেশের এল্লুরের বাসিন্দা। তবে তাদের বর্তমান নিবাস গাজিয়াবাদ। এখানেই দু’টি জায়গায় ‘স্টল’ দিয়েছে উজ্জ্বল। বাহারি ডিজাইনের মোমবাতি, দীপাবলি স্পেশাল ‘হোম ডেকর’, ফ্রিজ ম্যাগনেটই তার বিশেষত্ব। উজ্জ্বলের বাবা পেশায় একজন ব্যবসায়ী। মা গৃহবধূ। তাঁরা বলছিলেন, ‘চাইলে আমরা ওকে সামগ্রী তৈরিতে সাহায্য করতে পারি। তাহলে আরও বেশি সামগ্রী যেমন তৈরি হবে, তেমনই গুণমানও বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু উজ্জ্বল তা চায় না। ছোট হাতে ও যেটুকু পারছে, তার পুরো কৃতিত্বই ওর। এখানে সহযোগিতা করে ওর কৃতিত্বে কেউ ভাগ বসাতে চাই না। এই সমস্ত সামগ্রী তৈরির কাঁচামালও উজ্জ্বল নিজেই বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে ফোনে কথা বলে আনানোর ব্যবস্থা করে। ওর বাবা-মা হিসেবে আমরা শুধু যাবতীয় খরচ দিয়ে দিই। তবে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে এসব খরচ ও নিজেই জোগাড় করে নিতে পারবে। আমাদের সাহায্য লাগবে না।’
উজ্জ্বলের ‘স্টলে’ রকমারি সামগ্রীর মূল্য ৭৫ টাকা থেকে শুরু। তবে এক হাজার টাকার সামগ্রীও আছে। দীপাবলির সময় উত্তর ভারত সহ দেশের বহু স্থানে উপহার দেওয়ার রীতি রয়েছে। সেই গিফট বক্সও নিজের হাতে সাজিয়ে বিক্রি করছে উজ্জ্বল। নিজের প্যাশনকে এখনই ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে ব্যবহার করলে পড়াশোনায় প্রভাব পড়বে না? উজ্জ্বলের বাবা-মায়ের দাবি, ‘পড়াশোনার ব্যাপারে ছেলে অত্যন্ত সিরিয়াস। স্কুলে প্রতি বছর গড়ে ৮০ শতাংশ নম্বর পায়।’ উজ্জ্বল বলে, ‘আমি ক্লাস সিক্স থেকে আঁকা শিখছি। তখনই প্রথম ফ্রিজ ম্যাগনেট তৈরি করেছিলাম। ধীরে ধীরে মোমবাতি, ঘর সাজানোর বিভিন্ন সামগ্রী তৈরি করতে শুরু করি। ইচ্ছে আছে, আগামী বছর লাড্ডু, হাতি, স্টার ছাড়াও আরও নানান ধরনের মোমবাতি তৈরি করার।’ পড়াশুনোর পাশাপাশি আপাতত নিজের সৃষ্টিসুখেই মগ্ন থাকতে চায় উজ্জ্বল।