নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: ‘বিস্তারিত ভোটার তালিকা দিতে বাধ্য নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনের আগে তাদের চূড়ান্ত তালিকা দিতেই হবে। আমরাও নজর রাখছি। মোটেই মামলা বন্ধ করছি না।’ বৃহস্পতিবার এই ভাষাতেই এসআইআর ইশ্যুতে নির্বাচন কমিশনকে সমঝে দিল সুপ্রিম কোর্ট। আগেই শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিয়েছিল, এতটুকু আইনবিরুদ্ধ কিছু হয়েছে প্রমাণ পেলে গোটা ইন্টেনসিভ রিভিশন বাতিল করে দেবে তারা। সেই আশঙ্কার বাতাবরণ যে বজায় রয়েছে, তা আরও একবার বুঝিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। ৪ নভেম্বর পরবর্তী শুনানি হবে। তার মধ্যে কমিশন চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করবে। সেখানে দেখাতে হবে, একজন বৈধ ভোটারের নামও বাদ যায়নি। এ ব্যাপারে নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত নজরদারি রাখবে সর্বোচ্চ আদালত।
বিহারে স্পেশাল ইন্টেনসিভ রিভিশনের (এসআইআর) পর বাদ পড়েছে ৬৮ লক্ষ ৬৬ হাজার নাম। আর অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন ২১ লক্ষ ৫৩ হাজার ভোটার। ফলে গত ৩০ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশনের প্রকাশিত চূড়ান্ত তালিকায় ভোটার সংখ্যা হয়েছে ৭ কোটি ৪২ লক্ষ। ফলে এসআইআর বিতর্ক জারি রয়েছে। আর সুপ্রিম কোর্টের মামলাও। ২৪৩ আসনের বিহার বিধানসভায় আগামী ৬ নভেম্বর প্রথম দফার ভোট। তার ঠিক দু’দিন আগে সুপ্রিম কোর্ট পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করায় নির্বাচন কমিশন খানিকটা চাপে। এদিন শুনানিতে বারবার মামলার মূল আবেদনকারী অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মসের (এপিডিআর) আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ কমিশনের স্বচ্ছতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। বলেন, ‘কেন নাম বাদ দেওয়ার কারণ স্পষ্ট করছে না কমিশন? দুই দফার ভোটে ১৭ অক্টোবর এবং ২০ অক্টোবর প্রার্থীর মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষদিন। অথচ এখনও ভোটার তালিকা প্রকাশ করছে না কেন?’
যদিও কমিশনের আইনজীবী রাজেশ দ্বিবেদী বলেন, ‘আগামী ২১ তারিখ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ হবে। ওই তালিকার ভিত্তিতেই ভোট হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ভোটপর্ব চলছে। আর এডিআর এখন তালিকা বিশ্লেষণে নেমেছে! আগে তো ভোট হতে দিন। প্রশান্ত ভূষণের পালটা মন্তব্য, ‘ভোট হয়ে গেলে আর কী হবে? বৈধ ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়ছে কি না, সেটাই তো আমাদের উদ্বেগের বিষয়।’ তখনই পর্যবেক্ষণে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীকে পাশে রেখে বিচারপতি সূর্য কান্তর মন্তব্য, ‘কমিশন তার নিজের দায়িত্ব ভালো করেই জানে। আমাদেরও নজর আছে। কমিশনকে ভোটার তালিকা প্রকাশ করতেই হবে। ২১ অক্টোবর সেটা করুক কমিশন। তখন দেখা যাবে কারা থাকল, আর কারা বাদ গেল। ফলে বিষয়টি এখানেই শেষ হয়ে যায়নি। আমরা মামলা বন্ধ করছি না।’
একইসঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট জানতে চায়, বাদ যাওয়ার ভোটারদের যে জেলাস্তরে আইনি সহায়তার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, তার কী হল? জবাবে কমিশনের আইনজীবী জানান, একজনও আবেদন করেনি। মুসলমানদের নাম বাদ দেওয়ার অভিযোগ মিথ্যা। কমিশন অত্যন্ত স্বচ্ছভাবে কাজ করছে। যদিও কমিশনের বিরোধিতা করে আবেদনকারী প্রশ্ন তুলেছে, এতই যদি স্বচ্ছ, তাহলে পুরো তথ্য কেন প্রকাশ করা হচ্ছে না?