সস্তায় আইফোন কেনার টোপ দিয়ে জালিয়াতি, দিল্লি থেকে ধৃত প্রতারক
বর্তমান | ১৭ অক্টোবর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: সস্তায় আইফোনের টোপ গিলেছিলেন এক ব্যবসায়ী। যে টোপ দিয়েছিল,সে নিজেকে এজেন্ট হিসেবে পরিচয় দিয়েছিল। তার কাছ থেকে সস্তার গল্প শুনে লেটেস্ট মডেলের ১৪টি আইফোন বুক করে বসেন ওই ব্যবসায়ী। প্রতারকের কথামতো অনলাইনে পেমেন্টও করে দেন। এরপর জালিয়াত ওই স্টোরে গিয়ে সেখান থেকে ১৪টি ফোন নিয়ে উধাও হয়ে যায়। প্রতারিত ওই ব্যবসায়ীর অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে অভিযুক্ত মনোজ আগরওয়ালকে দিল্লি থেকে গ্রেফতার করল ভবানীপুর থানা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সস্তায় আইফোন পাওয়া যাবে, এই মর্মে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজ্ঞাপন দিত মনোজ। বলত, তার সঙ্গে বিভিন্ন আইফোন স্টোরের যোগের কথা। নিজেকে এজেন্ট হিসেবে পরিচয় দিয়ে কাস্টমারদের জানাত, তার মাধ্যমে ফোন কিনলে ১৫-২০ শতাংশ ছাড় পাওয়া যাবে। বিভিন্ন মডেলের আইফোনের ছবিও সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করত সে। সেখানে প্রকৃত দাম ও ছাড় দিয়ে দাম— দুটোই লেখা থাকত। তা দেখে ভবানীপুরের ওই ব্যবসায়ী এ মাসের গোড়ায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ফোনের বিভিন্ন মডেলের ছবি পাঠায় মনোজ। তা থেকে ১৪টি আইফোন বেছে নিয়ে অর্ডার করেন ওই ব্যবসায়ী। মনোজ জানায়, অনলাইনে পেমেন্ট করতে হবে। এরপর ক্যুরিয়ারের মাধ্যমে তাঁর কাছে পৌঁছে যাবে ফোনগুলি। পেমেন্টের লিংকও দিয়ে দেয়। সেইমতো পেমেন্ট করেন ক্রেতা। তিনি যে প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে পেমেন্ট করেছেন, তা জেনে নেয় অভিযুক্ত। এরপর আইফোন স্টোরে গিয়ে বলে, সে এই ফোনগুলি বুক করেছিল। পেমেন্ট হয়ে গিয়েছে। তারপর ১৪টি আইফোন নিয়ে উধাও হয়ে যায়। ব্যবসায়ী ফোন না পেয়ে লেনদেনের সূত্র ধরে আইফোন স্টোরের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পারেন, তাঁর ফোনগুলি ডেলিভারি হয়ে গিয়েছে। প্রতারিত হয়েছেন বুঝতে পেরে তিনি লিখিত অভিযোগ করেন ভবানীপুর থানায়।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, নদীয়ার বাসিন্দা এই জালিয়াত যথেষ্ট টেকস্যাভি। সে এই কায়দায় বিভিন্ন জনের নামে বুক করা আইফোন তুলে নিয়েছে। মোবাইল টাওয়ারের সূত্র ধরে জানা যায়, সে দিল্লিতে রয়েছে। এরপর সেখানে হানা দিয়ে মনোজকে গ্রেফতার করে বৃহস্পতিবার কলকাতায় নিয়ে আসে ভবানীপুর থানার পুলিশ। উদ্ধার হয়েছে অনেকগুলি আইফোন। জানা গিয়েছে, যারা সস্তায় আইফোন কেনার টোপ গিলতেন, তাঁদের পেমেন্টের লিংক পাঠাত সে। প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে জেনে নিত, পেমেন্টের টাকা কোন স্টোরে ঢুকেছে। এরপর সেখানে হানা দিয়ে ফোন হাতিয়ে চম্পট দিত সে। পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজ্ঞাপন দিয়ে ও ভুয়ো নথি তৈরি করে সেগুলি কিছুটা কম দামে বিক্রি করত।