মার্কিন মুলুকে ভারতীয়দের জন্য আরও কড়াকড়ি! স্রেফ এক নিয়মে আগামী তিন বছর অংশ নিতে পারবেন না গ্রিন কার্ড লটারিতেও, জানেন কেন?...
আজকাল | ১৭ অক্টোবর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: অভিবাসনের জন্য গ্রিন কার্ডের লটারি। ২০২৮ সাল পর্যন্ত ভারতীয়রা আর এই লটারি ব্যবস্থায় অংশ নিতে পারবেন না। স্বাভাবিকভাবেই মার্কিন মুলুকে আরও কঠিন হচ্ছে ভারতীয়দের পরিস্থিতি। বন্ধ হয়ে যাচ্ছে অভিবাসনের অন্যতম সহজ পথটিও।
কেন এই সিদ্ধান্ত?
প্রথমেই উল্লেখ্য, দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় ফেরার পর থেকেই অভিবাসন নীতি নিয়ে উঠে পড়ে লেগেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। একে একে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। এবার জানা গেল, ২০২৫ থেকে ২০২৮, ভারতীয়রা আমেরিকায় অভিবাসনের জন্য গ্রিন কার্ড লটারিতে অংশই নিতে পারবেন না।
কী এই গ্রিন কার্ড লটারি?
গ্রিন কার্ড লটারি চলতি ভাষায়, খাতায় কলমে আমেরিকা ডাইভারসিটি ভিসা। বহু বছর আগে, মার্কিন মুলুকে অভিবাসনে বৈচিত্র আনার লক্ষ্যেই এই ব্যবস্থা চালু হয়েছিল। তবে এবার ভারতীয়রা এই লটারিতে অংশ নিতে না পারার পিছনে রয়েছে মার্কিন মুলুকের অভিবাসন নীতির নিয়ম।
নিয়ম, গত পাঁচ বছরে যদি কোনও দেশ থেকে ৫০ হাজারের কম বাসিন্দা সে দেশে থাকতে যান, তবেই সেই দেশের আরও বাসিন্দা এই গ্রিন কার্ড লটারির মাধ্যমে অভিবাসন পেতে পারেন। কিন্তু তথ্য, ভারত থেকে ৫০ হাজারের বেশি মানুষ ইতিমধ্যেই গত পাঁচ বছরের নিরিখে চলে গিয়েছেন মার্কিন মুলুকে।
ফলে এই নিয়মের কারণেই আর অন্যান্য ভারতীয়রা গ্রিন কার্ড লটারি ব্যবস্থার অংশ হতে পারবেন না। একইসঙ্গে তথ্য, ২০২১ সালে ভারত থেকে ৯৩,৪৫০ জন বাসিন্দা মার্কিন মুলুকে থাকতে গিয়েছেন। ২০২২ সালে গিয়েছেন ১,২৭০১০ জন ভারতীয় এবং ২০২৩ সালে ৭৮,০৭০ জন ভারতীয় আমেরিকায় গিয়েছেন।
তাহলে আর কী উপায় খোলা থাকছে ভারতীয়দের জন্য?
একটি রাস্তা বন্ধ হওয়ার পরেও, উপায় থাকছে আরও কয়েকটি। ভারতীয়দের কাছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী অভিবাসনের জন্য যদিও উপায় কম।
তবে বাকি পথগুলির মধ্যে রয়েছে H-1B ওয়ার্ক ভিসাকে স্থায়ী বসবাসের ভিসায় রূপান্তর করা, বিনিয়োগ-ভিত্তিক অভিবাসন, আশ্রয় অথবা পারিবারিক স্পনসরশিপের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন।
কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন কঠোর ব্যবস্থার অধীনে, এই প্রতিটি পথই দিনে দিনে সংকুচিত হচ্ছে, যা আবেদনকারী এবং নিয়োগকর্তা দু'পক্ষকেই উদ্বিগ্ন করছে সময় যত এগোচ্ছে, তত। ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসনের প্রতি কঠোর মনোভাবের কারণে ভারতীয়দের সে দেশে স্থায়ী বসবাসের সুযোগ পাওয়ার বিষয়টি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। অভিবাসন বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই কঠোর নীতিমালা আবেদনকারীদের জন্য প্রায় সকল পথ বন্ধ করে দিচ্ছে এবং নিয়োগকর্তাদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করছে।
সাম্প্রতিক পররাষ্ট্র দপ্তরের নির্দেশিকাগুলি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যাচাই-বাছাই বৃদ্ধি এবং ব্যাকগ্রাউন্ড চেক দীর্ঘায়িত-সহ একগুচ্ছ কঠোর নিয়মকানুন চালু হয়েছে। বিশেষ করে ছাত্র ভিসার সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়গুলিতে আরও কড়াকড়ি হয়েছে। বিদেশী কূটনীতিকদের এমন আবেদনকারীদের উপর নজর রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাঁরা সম্ভাব্য বিপরীত অবস্থানের প্রতি মনোভাব রাখে, অর্থাৎ যাঁরা বিদেশী সন্ত্রাসী এবং জাতীয় নিরাপত্তার জন্য অন্যান্য হুমকির পক্ষে কথা বলেন, সহায়তা করেন বা সমর্থন করেন। অথবা যারা বেআইনিভাবে ইহুদি-বিরোধী অত্যাচারে জড়িত। তা নিয়ে মার্কিন মুলুকে সাম্প্রতিককালে ব্যাপক ধরপাকড়ের ঘটনাও ঘটেছে।