লাল সন্ত্রাসমুক্ত ত্রাসের অবুঝমাঢ়-উত্তর বস্তার! একযোগে আত্মসমর্পণ ২০৮ মাওবাদীর
প্রতিদিন | ১৭ অক্টোবর ২০২৫
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একটা সময় ছিল, যখন অমুঝমাঢ়-বস্তারের মতো অঞ্চল ছিল লাল সন্ত্রাসের আঁতুড়ঘর। যার ঘন জঙ্গলে ঢুকতে রীতিমতো ভয় পেত জওয়ানরাও। আতঙ্কের প্রহর কাটিয়ে অবশেষে সেখানে ফিরল শান্তি! শুক্রবার এই সমস্ত অঞ্চল থেকে একযোগে আত্মসমর্পণ করলেন ২০৮ জন মাওবাদী। এই বিরাট সংখ্যায় মাওবাদীদের আত্মসমর্পণের পর প্রশাসনের আশা ছত্তিশগড়ের আজমেঢ় অঞ্চল ও উত্তর বস্তার অঞ্চল কার্যত মাওবাদী শূন্য। নিরাপত্তাবাহিনীর পাখির চোখ এখন দক্ষিণ বস্তার।
লাগাতার অভিযান। একের পর এক শীর্ষ কমান্ডারের মৃত্যু দেশে মাওবাদীদের কোমর ভেঙে দিয়েছে। এই অবস্থায় সরকারের প্রস্তাব মেনে আত্মসমর্পণের ঝোঁক বেড়েছে মাওবাদীদের মধ্যে। মাসখানেক আগে কিষেনজির স্ত্রী সুজাতা-সহ শতাধিক শীর্ষ মাও কমান্ডার। সে ধারা অব্যাহত রয়েছে। শুক্রবার মাওবাদীদের এই আত্মসমর্পণের তথ্য প্রকাশ্যে এনেছেন বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লেখেন, ছত্তিশগড়ের জন্য এটা ঐতিহাসিক দিন। বস্তারে এক নতুন ভোরের সূত্রপাত। বিপুল অস্ত্র-সহ শুক্রবার আত্মসমর্পণ করেছেন ২০৮ জন। যাঁদের মধ্যে ১১০ জন মহিলা ও ৯৮ জন পুরুষ। তাঁদের কাছ থেকে যে অস্ত্র পাওয়া গিয়েছে সেগুলি হল, ১৯টি একে-৪৭, ১৭টি এসএলআর, ২৩টি ইনসাস, একটি ইনসাস এলএমজি এবং ৩৬টি .৩০৩ রাইফেল। এছাড়াও অসংখ্য পিস্তল, লঞ্চার-সহ বিপুল সংখ্যায় অস্ত্র জমা দিয়েছে মাওবাদীরা।
উল্লেখ্য, ২০২৬ সালের মার্চ মাসের মধ্যে দেশ থেকে মাওবাদকে পুরোপুরি নির্মূল করা হবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেই লক্ষ্যে জোরকদমে শুরু হয়েছে কাজ। শাহ জানিয়েছেন, “গত ২ দিনে ছত্তিশগড় এবং মহারাষ্ট্রে মোট ২৫৮ জন মাওবাদী আত্মসমর্পণ করেছেন। যারা হিংসাত্যাগ করে মূল স্রোতে ফিরছেন তাঁদের স্বাগত জানাই। কিন্তু যারা এখনও বন্দুক চালিয়ে যাবে তাঁদের নিরাপত্তা বাহিনীর মারণ শক্তির মুখোমুখি হতে হবে।”
প্রসঙ্গত, মাওবাদীদের অস্ত্র ত্যাগ করাতে ‘নকশাল আত্মসমর্পণ এবং আক্রান্তদের পুনর্বাসন নীতি ২০২৫’-এ বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছে ছত্তিশগড় সরকার। যেখানে আত্মসমর্পণকারী মাওবাদীদের পুনর্বাসন, চাকরি, আর্থিক পুরস্কার এবং আইনি সুরক্ষা প্রদান করা হয়। মাওবাদী নেতাদের পদ অনুযায়ী সুবিধা প্রদান করা হয় নয়া পুনর্বাসন নীতিতে। রাজ্য কমিটি, আঞ্চলিক কমিটি, কেন্দ্রীয় কমিটি এবং পলিটব্যুরোর সদস্যদের মতো উচ্চপদস্থ ক্যাডারদের এককালীন পাঁচ লক্ষ টাকা অনুদান দেওয়া হয়। যাঁরা লাইট মেশিনগান-সহ আত্মসমর্পণ করবেন, তাঁরাও পাবেন পাঁচ লক্ষ টাকা নগদ পুরস্কার। যে সব ক্ষেত্রে মাওবাদী ইউনিটের ৮০ শতাংশ সদস্য একসঙ্গে আত্মসমর্পণ করবেন, সেখানে দ্বিগুণ পুরস্কার প্রদান করা হবে। পুনর্বাসনের এই প্যাকেজে রয়েছে চাকরি এবং সন্তানদের শিক্ষায় সাহায্যও।