• বিএলও-রা তৃণমূলের মঞ্চে, কমিশনে অভিযোগ
    আনন্দবাজার | ১৭ অক্টোবর ২০২৫
  • তৃণমূলের বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চ। সেখানে উপস্থিতদের সঙ্গে নির্বাচন কমিশন নিযুক্ত একাধিক ‘বুথ লেভেল অফিসার’ (বিএলও)-দের পরিচয় করালেন তৃণমূলের জেলা নেতা। খড়্গপুর শহরের খরিদার এই ঘটনার পরে বিএলওদের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। দলের অন্দরেও প্রশ্ন উঠেছে। সূত্রের খবর, কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, অভিযোগ পেয়েই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রিপোর্ট পেলে, পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।

    খড়্গপুরের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল পুরপ্রতিনিধি নমিতা চৌধুরীর উদ্যোগে বুধবার রাতে বিজয়া সম্মিলনী হয় তৃণমূলের ব্যানারে। ছিলেন তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি দেবাশিস চৌধুরী ওরফে মুনমুন। তিনি নমিতার স্বামী। সে মঞ্চেই বসেছিলেন অণিমা মুখোপাধ্যায়, রামানন্দ তিওয়ারি, রবীন্দ্র নাথ, চন্দনা দাস মহান্তি-সহ শহরের আট জন বিএলও। দেবাশিস তাঁদের নাম ধরে ডেকে দাঁড় করিয়ে পরিচয় করিয়ে দেন।

    রাজ্যে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) নিয়ে হইচই চলছে। বিএলওদের নিরপেক্ষতায় জোর দিয়েছে কমিশন। ওই অনুষ্ঠানের ভিডিয়ো এক্স হ্যান্ডলে দিয়ে নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ওই বিএলওদের শাস্তি চেয়ে তাঁর প্রশ্ন, “গণতন্ত্রের রক্ষকরাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বৈরাচারী শাসনে হাতের পুতুল।” রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককে চিঠি দিয়ে প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক আশুতোষ চট্টোপাধ্যায় সংশ্লিষ্ট বিএলওদের অপসারণ চেয়েছেন। খড়্গপুরের সিপিএম নেতা মধুসূদন রায় বলেন, “শুক্রবারই (আজ) প্রশাসনে অভিযোগ জানাব।”

    মহকুমাশাসক (খড়্গপুর) পাটিল যোগেশ অশোকরাও বলেন, “বিএলওরা রাজনৈতিক কর্মসূচিতে থাকতে পারেন না। দেখতে হবে, ওই বিএলওরা কেন গিয়েছিলেন। কেউ অভিযোগ করলে শো-কজ় করব।”

    তৃণমূলনেতা দেবাশিস বৃহস্পতিবার বলেছেন, “ওঁরা নতুন বিএলও হয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে ওয়ার্ডের নাগরিকদের পরিচয় নেই। তাই পরিচয় করিয়েছি।” তৃণমূলের মেদিনীপুর জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা অবশ্য মানছেন যে, “এটা একেবারেই করা যায় না। এতে দল বিড়ম্বনায় পড়ল।”

    তৃণমূলের মঞ্চে থাকা বিএলওদের মধ্যে হিতকারিণী হাই স্কুলের শিক্ষক রবীন্দ্র নাথ বলেন, “পুরপ্রতিনিধি ডেকেছিলেন। তাই গিয়েছিলাম।” তবে ওই স্কুলেরই করণিক রামানন্দ তিওয়ারির বক্তব্য, “না বুঝেই গিয়েছিলাম।” শাস্ত্রী শিক্ষা নিকেতনের শিক্ষিকা চন্দনা দাস মহান্তির দাবি, “যাওয়ার পরে বুঝেছি, তৃণমূলের অনুষ্ঠান।” অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী অণিমা মুখোপাধ্যায়ের কথায়, “পরিচয় করাবে বলে ডেকেছিল। পরে বুঝতে পেরে চলে এসেছি।”
  • Link to this news (আনন্দবাজার)