• মারধরে গ্রেফতার অন্য রোগীর পরিজন
    আনন্দবাজার | ১৭ অক্টোবর ২০২৫
  • শিশু-মৃত্যুর জেরে মঙ্গলবার এগরা মহকুমা হাসপাতালে পুলিশকর্মীকে মারধরের ঘটনায় ধৃত চার জনই ওই হাসপাতালের অন্য রোগীদের পরিজন বলে পুলিশ সূত্রের খবর। হাসপাতালে শিশু বিভাগে শয্যার তুলনায় রোগীর চাপ বেশি থাকায় চিকিৎসা পরিষেবা ধাক্কা খাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

    মঙ্গলবার ভোরে এগরার আলংগিরি এলাকায় স্বপন প্রধানের দু'মাসের শিশুপুত্রের মৃত্যু হয় এগরা মহকুমা হাসপাতালে। চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগ তোলেন শিশুর পরিজনেরা। তাঁরা দোতলায় শিশুর মৃতদেহের কাছে যেতে চাইলে কর্তব্যরত পুলিশের হোমগার্ড ও হাসপাতালের নিরাপত্তাকর্মীরা বাধা দেন এবং হোমগার্ড কটূক্তি করেন বলে অভিযোগ। তাতে ক্ষুব্ধ জনতা মারধর শুরু করে। কর্তব্যরত হোমগার্ডকে বেধড়ক মারধর করা হয়। তাঁর উর্দি ছিঁড়ে যায়।

    হাসপাতালের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে বেশ কয়েক জন হামলাকারীকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে চার জনকেগ্রেফতারও করা হয়েছে। এঁদেরমধ্যে দু’জন হলেন চকদই-এরকামরুল হোসেন ও পটাশপুরের রাজশেখর মাইতি। এসডিপিও(এগরা) দেবীদয়াল কুণ্ডু জানিয়েছেন, ধৃত চার জনই এগরা মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি অন্য রোগীর পরিজন। যদিও ধৃতেরা পুলিশের কাছে দাবি করেছেন যে, তাঁরা মারধরে জড়িত ছিলেন না।

    এগরা মহকুমা হাসপাতালে পরিষেবা পরিকাঠামোয় সমস্যার কথা স্বাস্থ্যকর্তারা অবশ্য এক রকম মেনে নিয়েছেন। তমলুক জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বিভাস রায় বলেন, ‘‘হাসপাতালে নির্দিষ্ট শয্যা তুলনায় অনেক বেশি শিশুকে ভর্তি নিতে হয়। কাউকে তো ফেরানো যায় না।’’

    হাসপাতালের দোতলায় শিশু বিভাগে ২০টি শয্যা রয়েছে। দু'মাসের নীচে শিশুদের এসএনসিইউতে রেখে চিকিৎসা করা হয়। হাসপাতাল সূত্রের দাবি, ওয়ার্ডে শিশুদের ২০টিশয্যায় প্রতিদিন গড়ে ৪০-৫০ জনশিশু ভর্তি থাকে। অনেকসময় মেঝেতে রেখেও শিশুদের চিকিৎসা করতে হয়। শিশুরোগীর চাপ সামাল দিতে হিমশিম অবস্থাহয় হাসপাতালের। ফলে, চিকিৎসায় ফাঁক থেকে যায়। জরুরি পরিস্থিতি ছাড়া, হাসপাতাল থেকে অন্যত্র শিশুকে ‘রেফার’ করতে গেলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে স্বাস্থ্যভবনে কৈফিয়ত দিতে হয়। তাই ‘রেফার’ করার আগে ভাবনা-চিন্তা করতে হয় চিকিৎসকদের। তাতে কিছু ক্ষেত্রে রেফারে দেরি হলে, শিশুর অবস্থার অবনতি হতে পারে।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)