• বিপর্যস্ত পাহাড় এখন স্বাভাবিক, দার্জিলিং জমজমাট হওয়া সময়ের অপেক্ষা?
    এই সময় | ১৮ অক্টোবর ২০২৫
  • দুর্যোগ কেটেছে। বিদায় নিয়েছে বর্ষাও। দুর্যোগের ধাক্কায় রুদ্ধ ১০ নম্বর জাতীয় সড়কও ফের খুলে দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই পাহাড়ে দেখা মিলছে পর্যটকদের। দার্জিলিংয়ের ম্যালে, পরিচিত ক্যাফেতে দেখা মিলছে চেনা ছন্দের। সিকিমেও দীপাবলির ছুটির জন্য নতুন করে বুকিং বেড়েছে। এই আবহে কালীপুজো-দীপাবলি পর থেকে শীত ও নতুন বছরের ছুটির সময়ে পর্যটকদের ভিড়ের আশা করছেন উত্তরবঙ্গের পযর্টন ব্যবসায়ীরা।

    কয়েকদিন আগেও পাহাড় ও ডুয়ার্সের পর্যটন নিয়ে এতটা আশা দেখা যাচ্ছিল না। প্রবল বন্যা ও ব্যাপক বৃষ্টিতে তছনছ হয়ে গিয়েছে ডুয়ার্স ও পাহাড়ের বিস্তীর্ণ এলাকা, ঘটেছে প্রাণহানিও। কিন্তু তারপরেও ধীরে ধীরে সমস্যা কাটিয়ে ছন্দে ফেরার চেষ্টা করছে পাহাড়। হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ডেভলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘দুর্যোগ কেটে যাওয়ার পরে পাহাড়ে পর্যটনের পরিস্থিতি ক্রমশ বদলাচ্ছে। বড়দিনে উত্তরবঙ্গে দার্জিলিং-ডুয়ার্স-সিকিম মিলিয়ে পর্যটনের একটা সুদিন ফেরার ইঙ্গিত আমরা পাচ্ছি।’

    গত ৪ অক্টোবরের ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের পরে অনেকেরই মনে হয়েছিল, ২০২৩ সালের মতোই এ বারও উত্তরবঙ্গের পর্যটন মুখ থুবড়ে পড়বে। ২০২৩ সালেও ৪ অক্টোবরেই উত্তর সিকিমের হিমবাহ হ্রদ দক্ষিণ লোনার্কের বাঁধ ভেঙে গিয়েছিল। তার জন্য তছনছ হয়ে যায় গোটা সিকিম ও কালিম্পং। সেই ধাক্কা সামাল দিতে এক বছর কেটে গিয়েছিল। এই বারও ৪ অক্টোবর প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাবে দার্জিলিং জেলা এবং ডুয়ার্সের বিস্তীর্ণ এলাকা বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে। যদিও এ বারের প্রাকৃতিক দুর্যোগে সিকিমে তেমন প্রভাব পড়েনি।

    পাহাড় ও ডুয়ার্সের ধাক্কা গত পনেরো দিনে যে সামলানো গিয়েছে, তার কৃতিত্ব পুরোপুরি প্রশাসনকেই দিচ্ছেন বাসিন্দা ও পর্যটন ব্যবসায়ীরা। দুর্গতদের উদ্ধার করা হয়েছে, ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। ধসে বিধ্বস্ত রাস্তা সারানো হয়েছে। ১০ নম্বর জাতীয় সড়কও যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। গ্যাংটক ও দার্জিলিংয়ে হোটেল ব্যবসা করেন কল্পক দে। তিনি বলেন, ‘গ্যাংটকে হোটেলের বুকিং দীপাবলির আগেই পঞ্চাশ শতাংশ পেরিয়ে গিয়েছে। বড়দিনে আরও জমজমাট ভিড় আশা করছি।’ উত্তর সিকিমের ক্ষেত্রে নানা শর্ত চাপানো রয়েছে ঠিকই। কমপক্ষে দু’রাত ও তিনদিনের বুকিং ছাড়া এ বার পর্যটকদের লাচুং যাওয়ার পারমিট দেওয়া হচ্ছে না। গাড়ি চালক স্থানীয় কি না সেটাও যাচাই করা হচ্ছে। তার পরেও লাচুংয়ে রোজই পর্যটকদের গাড়ি ঢুকছে। ইস্টার্ন হিমালয়ান ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুর অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক দেবাশিস চক্রবর্তীর মতে, এ বার শীতে উত্তরবঙ্গে পর্যটন ক্ষেত্রে ভালো ব্যবসা হবে। তিনি বলেন, ‘উত্তরবঙ্গের পর্যটনে দুর্যোগ আক্ষরিক অর্থেই এ বার কাটছে। ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক খোলা থাকলে বড়দিনে ভালোই ব্যবসা হবে।’

  • Link to this news (এই সময়)