• নিজামুদ্দিন প্ল্যাটফর্মে এ কী কাণ্ড! যাত্রীদের জন্য 'বিনা পয়সায় বিনোদন', বন্দে ভারতের সামনে রেলকর্মীদের ধুন্ধুমার...
    আজকাল | ১৮ অক্টোবর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: রোজকার একঘেয়ে ট্রেন যাত্রায় যাঁরা খানিকটা বৈচিত্র্যের অভাব বোধ করছিলেন, তাঁদের জন্যই যেন এক অভাবনীয় আয়োজন করেছিল ভারতীয় রেল। ঘটনাটি দিল্লির নিজামুদ্দিন স্টেশনের। রেলের উর্দি পরা একদল কর্মী সামান্য বচসার জেরে যা করলেন তাতে স্টেশন প্রায় রণক্ষেত্রের চেহারা নিল।

    ঘটনার সূত্রপাত নিতান্তই সাধারণ কথা কাটাকাটি দিয়ে। কিন্তু এ যে দিল্লির হাওয়া! এখানে কখন যে সামান্য তর্কাতর্কি হাতাহাতিতে পৌঁছে যায়, তা ঠাহর করা মুশকিল। মুহূর্তের মধ্যে প্ল্যাটফর্মের শান্ত পরিবেশ বদলে গেল এক কুস্তির আখড়ায়। একদিকে দাঁড়িয়ে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস, ঠিক তার সামনেই একে অপরের উপর ঝাঁপিয়ে পড়লেন রেলের কর্মীরা। ঘটনাস্থলে উপস্থিত যাত্রীরা হাঁ করে দেখলেন তামাশা।

    লড়াইয়ের সূচনা হয় একটি 'ডাস্টবিন' দিয়ে। বিপক্ষের দিকে সেটিকে ক্ষেপণাস্ত্রের মতো ছুড়ে দিয়ে এক কর্মী যেন এই লড়াই এর উদ্বোধন ঘোষণা করলেন। ব্যস, আর যায় কোথায়! সঙ্গে সঙ্গে বাকিরাও নিজেদের সাধ্যমতো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ময়দানে অবতীর্ণ হলেন। কেউ সপাটে চড় কষালেন, কেউ বা চালালেন কিল ঘুষি। তবে এঁদের মধ্যে মধ্যমণি ছিলেন এক ব্যক্তি। ভিডিওতে দেখা যায় তিনি কোমর থেকে চামড়ার কোমরবন্ধ খুলে সেটিকে চাবুকের মতো ব্যবহার করে বিপক্ষকে শায়েস্তা করতে এগিয়ে যান। তাঁর এই রণকৌশল দেখে উপস্থিত যাত্রীরা তাঁদের ক্যামেরায় এ দৃশ্য বন্দি করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন, কেউ কেউ আবার নিরাপদ দূরত্বে দাঁড়িয়ে এই ‘জলজ্যান্ত নাটক’ উপভোগ করতে থাকেন।

    যাত্রীদের মধ্যে তখন চাপা গুঞ্জন, "বাহ্! রেলের টিকিটের সঙ্গে আজকাল এমন ভরপুর মনোরঞ্জনের ব্যবস্থাও বিনামূল্যে পাওয়া যাচ্ছে!" কেউ কেউ আবার বাজি ধরতেও শুরু করেছিলেন, কোন পক্ষ জিতবে! এই তুলকালামের মাঝে সাধারণ যাত্রীদের অবস্থা ছিল দেখার মতো। কেউ ভাবছিলেন, ট্রেনটা আদৌ ছাড়বে তো? আবার কারও মনে হচ্ছিল, এই উত্তপ্ত মুহূর্তে সঙ্গে যদি চানাচুর বা ঝালমুড়ি থাকত, তবে মন্দ হত না!

    অবশেষে বিচারকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয় রেল সুরক্ষা বাহিনী (আরপিএফ)। তাঁরা এসে যখন এই 'খেলা' থামানোর চেষ্টা করেন, তখনও যেন যুযুধান পক্ষদের উত্তেজনা তুঙ্গে। তাঁদের হাবভাব দেখে মনে হচ্ছিল, যেন তাঁরা বলছেন, "মহাশয়, আর কয়েকটি মুহূর্ত দিন, গল্পের শেষটুকু যে বাকি!"

    এই ঘটনার চিত্র সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই হাসির রোল উঠেছে। নেট ব্যবহারকারীরা রসিকতা করে বলছেন, “আইআরসিটিসি এখন শুধু খাবারই নয়, বিনোদনও পরিবেশন করছে।” কেউ আবার লিখেছেন, “বাড়ি থেকে কাজের পর এবার শুরু হল আখড়া থেকে কাজ!”

    সব মিলিয়ে, নিজামুদ্দিন স্টেশনের সেই বিকেলটা যাত্রীদের কাছে এক অন্য মাত্রা পেয়েছিল। ট্রেন দেরির জন্য বিরক্তি বা কোনওরকম আসন নিয়ে বিতর্ক নয়, তাঁরা সাক্ষী থাকলেন বরং এক চাঞ্চল্যকর ঘটনার। "এটি যে কোনও সিনেমার মারপিটের দৃশ্যকেও হার মানাতে বাধ্য।" দাবি করেন অনেক যাত্রী।
  • Link to this news (আজকাল)