• যুগলের যৌনতা নজরে পড়তেই গণধর্ষণের ‘গল্প’? দুর্গাপুর কাণ্ডে ‘মিসিং লিংক’ খুঁজছে পুলিশ
    প্রতিদিন | ১৮ অক্টোবর ২০২৫
  • সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: দুর্গাপুরে ডাক্তারি ছাত্রী ধর্ষণ কাণ্ডে এখনও অজস্র প্রশ্ন। আর সেসবের উত্তর দ্রুত পেতে ‘মিসিং লিংক’ খুঁজছেন তদন্তকারীরা। এদিকে, ঘটনার ৮ দিন আপাতত শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ হয়ে উঠেছেন নির্যাতিতা। শুক্রবার তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হল। তদন্তের স্বার্থে পুলিশের নজরদারিতে আপাতত দুর্গাপুরেই কোনও ভাড়াবাড়িতে থাকবেন ওই নির্যাতিতা। এখনই তাঁকে ওড়িশা নিয়ে যাওয়া যাবে না।

    তদন্তকারীরা যেসব প্রশ্নের জবাব এখনও পাচ্ছেন না, সেগুলি হল ধর্ষণে যুক্ত কি একজনই নাকি আরও কেউ? সহপাঠী যদি ধর্ষণের ‘চেষ্টা’ করার আগেই দুষ্কৃতীরা ঘটনাস্থলে চলে আসে তাহলে ধর্ষণের ঘটনা ঘটাল কে? দুষ্কৃতীরা এই ঘটনার পর মোবাইলে কার কার সঙ্গে কথা বলেছিল? নির্যাতিতাকে ঘটনাস্থলে ফেলে সহপাঠী পালালই বা কেন? উভয়ের যৌনতা ধরা পড়ে যেতেই কী গণধর্ষণের গল্প বানানো হয়? ধৃত সহপাঠীর সঙ্গে ধৃত অপর পাঁচ অভিযুক্তের কারও সঙ্গে কি পূর্ব পরিচয় ছিল? শুক্রবার ফের ফরেনসিক টিম ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করে।

    এদিকে এই মামলার সরকারি আইনজীবী হিসাবে বিভাস চট্টোপাধ্যায় দায়িত্ব নেওয়ার পর বেশ কিছুটা নিশ্চিন্ত পুলিশ। সরকারি দুঁদে আইনজীবীর পাশাপাশি তিনি একজন বিশিষ্ট সাইবার বিশেষজ্ঞও। তার কাছে মামলা সংক্রান্ত সমস্ত নথি ও ধৃতদের জেরা করে কী কী মিলেছে তা তুলে দিয়েছে পুলিশ। এর বাইরেও বেশ কিছু তথ্যের একটি তালিকাও বিভাসবাবু তুলে দিয়েছেন তদন্তকারীদের হাতে। মামলা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্যে এই তথ্য গুলো প্রয়োজন বলে জানান তিনি। গণধর্ষণ যে নয়, তা প্রায় প্রমাণিত। কিন্তু ধর্ষণকারী কে, তা জানতে ফরেনসিক-সহ বেশ কিছু রিপোর্টের উপর নির্ভর করতে হবে। সেগুলো এখনও মেলেনি বলেই পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।

    সহপাঠীকে অকুস্থলে নিয়ে গিয়ে ফের একবার ঘটনার পুনর্নিমাণ করা হতে পারে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। কারণ, এখনও অভিযুক্তদের বয়ান পরস্পর বিরোধী। এমনকি নির্যাতিতাও ঘনঘন বয়ান পালটাচ্ছে বলেই তদন্ত প্রক্রিয়া বিঘ্নিত হচ্ছে। আদালতের নির্দেশে বেসরকারি হাসপাতাল বাইরের পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক হলেও ভিতরের পরিস্থিতি এখনও গুমোট। এদিন ডাক্তারি পড়ুয়ার গনধর্ষণের তদন্তে পরাণগঞ্জের জঙ্গলে ফের ফরেনসিক দল আসে সঙ্গে ছিলেন নিউ টাউনশিপ থানার আধিকারিকরা। প্রথম কর্ডন হওয়া জায়গা এবং বৃহষ্পতিবার যে নতুন করে জায়গা কর্ডন করা হয়েছিল, দুই জায়গা থেকেই নির্যাতিতার রক্তের নমুনা সংগ্রহ করেন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা। ইতিমধ্যেই অভিযুক্তের বাইক এবং সাইকেল বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ।

    এদিন ধর্ষণ কাণ্ড নিয়ে মুখ খোলেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী। রাজ্যের সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া বলেন, “ইতিমধ্যেই বন্ধু-সহ ৬ জন গ্রেপ্তার। জিরো টলারেন্স নীতি নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বিরোধীরা একবার বিহার, ইউপি, মধ্যপ্রদেশ ঘুরে আসুন।” মন্ত্রীদের কেন দেখা নেই এই ঘটনায়? বিরোধীদের এই প্রশ্নের জবাবে রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক বলেন, “পুরো ঘটনাটাই তদন্ত সাপেক্ষে। তাই যদি কেউ কিছু বলেন তিনি মুর্খ।”
  • Link to this news (প্রতিদিন)