মন্ত্রী-বিধায়কদের বেতন বৃদ্ধি বহু গুণ, বিপর্যয় বিধ্বস্ত হিমাচলে কংগ্রেস সরকারের ‘হরির লুট’
বর্তমান | ১৮ অক্টোবর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: ৪৪৮ জনের মৃত্যু হয়েছে হিমাচল প্রদেশে। ৫ হাজার কোটি টাকার সম্পদ ধ্বংস। ২ হাজারের বেশি ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ ভেঙে মিশে গিয়েছে মাটি অথবা জলে। এখনও পর্যন্ত পঞ্চাশ জনের বেশি নিখোঁজ। হিমাচলের মতো ক্ষুদ্র রাজ্যে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে এই ক্ষয়ক্ষতির পরিসংখ্যান যথেষ্ট উদ্বেগজনক। কারণ, এই রাজ্যের জনসংখ্যা মাত্র ৬৮ লক্ষ। ঠিক এই পরিস্থিতিতে হিমাচলে দলমতনির্বিশেষে বিধায়ক ও মন্ত্রীরা নিজেদের দীপাবলির উপহার দিলেন। কীভাবে? নিজেদের বেতন বৃদ্ধি করে। গত মার্চ মাসে হিমাচল প্রদেশের বিধানসভায় পাশ হওয়া মন্ত্রী-বিধায়কদের বেতনবৃদ্ধি সংক্রান্ত বিলে শুক্রবারই স্বাক্ষর করেছেন রাজ্যপাল। অর্থাৎ চলতি মাস থেকে যা কার্যকর হয়ে যাবে। ফলে সেরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, বিধানসভার স্পিকার, বিধায়ক, মন্ত্রীদের মোট বেতন বহুগুণ বেড়ে যাচ্ছে।
জানা যাচ্ছে, মুখ্যমন্ত্রীর বেতন হবে সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা, স্পিকারের ৩ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা, ডেপুটি স্পিকার ৩ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা। মন্ত্রীরা বেতন পাবেন ৩ লক্ষ ১০ হাজার টাকা। একজন বিধায়ক এখন মাসে পান ২ লক্ষ ১০ হাজার টাকা। সেটা বেড়ে হবে ২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা। সবথেকে বেশি বাড়ছে প্রাক্তন বিধায়কদের পেনশন। ডিএ যোগ করা হলে এখন থেকে তা মাসে ১ লক্ষ ২৯ হাজার টাকা।
হিমাচল প্রদেশে নিয়ম হল, বিধায়ক মন্ত্রীদের বেতন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে কোনও আইন সংশোধন করতে হয়নি। প্রতি পাঁচ বছর অন্তর মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে বেতন বৃদ্ধি হয়। সেপ্টেম্বর মাসেও একের পর এক হড়পা বান এবং মেঘ ভাঙা বৃষ্টি হয়েছে পাহাড়ি এই রাজ্যে। ১৬০০ রাস্তা বন্ধ। কেন্দ্রীয় সরকার ১২০০ কোটি টাকা বিপর্যয় মোকাবিলার অর্থ সহায়তা দিয়েছে। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রাজ্যের বিপর্যয় আকাশপথে পরিদর্শন করেছেন। পর্যটন বাণিজ্য একপ্রকার বিধ্বস্ত। কয়েক হাজার সাধারণ মানুষ গৃহহীন। এখনও চলছে ত্রাণকার্য। বহু মন্দির ও পর্যটন স্থল এখনও অগম্য। ঠিক সেই সময়কালেও সরকারি টাকায় মন্ত্রী বিধায়করা এই বিপুল অঙ্কের বেতন বাড়িয়ে নিতে দ্বিধা করেননি। প্রশ্ন তোলেননি বিরোধী বিজেপি বিধায়করাও। বরং সকলেই খুশি।