• ঘুষ-তদন্তে সিবিআইয়ের হাতে ধৃত পাঞ্জাব পুলিশের ডিআইজি
    বর্তমান | ১৮ অক্টোবর ২০২৫
  • নয়াদিল্লি: আইপিএস আধিকারিকের বিরুদ্ধে ৮ লক্ষ টাকা ঘুষের মামলা। তারই তদন্তে নেমে পাঞ্জাবের শীর্ষ পুলিসকর্তার ‘যখের ধনে’র খোঁজ পেল কেন্দ্রীয় এজেন্সি। তল্লাশিতে পাঁচ কোটি টাকা নগদ, বিলাবহুল গাড়ি, বিপুল গয়না ও দামি ঘড়ির হদিশ মিলেছে। জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত পুলিশ আধিকারিকের নাম হরচরণ সিং ভুল্লার। পাঞ্জাবের রোপার রেঞ্জের ডিআইজি পদে রয়েছেন ২০০৯ ব্যাচের আইপিএস আধিকারিক। ইতিমধ্যেই তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে সিবিআই। অভিযোগ, স্থানীয় ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া ফৌজদারি মামলা মিটিয়ে নিতে মোটা টাকা ঘুষ নিতেন ভুল্লার। একাজে মিডলম্যান হিসেবে কাজ করত কৃষ্ণা নামে এক ব্যক্তি। তাকেও গ্রেপ্তার করেছে এজেন্সি। শুক্রবার ধৃত দু’জনকে আদালতে তোলা হয়েছিল। বিচারক তাঁদের ১৪ দিনের বিচারবিভাগীয় হেপাজতের নির্দেশ দিয়েছে। ভুল্লারের অবশ্য দাবি, সমস্ত অভিযোগ মিথ্যা। তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। উল্লেখ্য, তাঁর বাবা এম এস ভুল্লার পাঞ্জাব পুলিশের ডিজি ছিলেন।

    তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, দিন পাঁচেক আগে পাঞ্জাবের ফতেগড় সাহিবের স্ক্র্যাপ ডিলার আকাশ ভাট্টা ওই আইপিএসের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে গত বৃহস্পতিবার মামলা দায়েরের পর তদন্ত শুরু করে সিবিআই। অভিযোগ, একাধিক ব্যবসায়ীকে মিথ্যা মামলা ফাঁসাতেন ওই আইপিএস। তারপর কেস তুলে নেওয়ার টোপ দিয়ে দিয়ে মোটা টাকা ঘুষ নিতেন। একলপ্তে দিতে না পারলে তা মাসিক কিস্তিতে মেটানোরও সুযোগ ছিল। দুর্নীতি চক্রে মিডলম্যান হিসেবে কাজ করত কৃষ্ণা। তার মাধ্যমেই টাকা তুলতেন অভিযুক্ত আইপিএস। ইতিমধ্যেই তদন্তকারীরা একটি ভয়েস রেকর্ড পেয়েছেন। তাতে শোনা যাচ্ছে, ওই ব্যবসায়ীকে কৃষ্ণা বলছে, ‘আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসের পেমেন্ট হয়নি।’

    এক আধিকারিক জানিয়েছেন, তদন্তে নেমে ফাঁদ পাতে সিবিআই। ঘুষের আট লক্ষ টাকা দিতে চণ্ডীগড়ের সেক্টর ২১—এ ডেকে পাঠানো হয়। আইপিএসের হয়ে কৃষ্ণা সেখানে আসে। তাকে হাতেনাতে ধরেন তদন্তকারীরা। এরপর তাদের সামনেই অভিযোগকারী ব্যবসায়ী ও অভিযুক্ত আইপিএসের মধ্যে কথাও হয়। তাতেই গোটা বিষয়টি আরও পরিষ্কার হয়ে যায়। তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে সিবিআইয়ের টিম মোহালির অফিস থেকে ডিআইজি ভুল্লারকে হেপাজতে নেয়। পরে তাঁকে গ্রেপ্তারও করেন তদন্তকারীরা। তারপরই রোপার, মোহালি ও চণ্ডীগড়ে ছড়িয়ে থাকা ভুল্লারের বাড়ি, অফিস, সম্পত্তিতে হানা দেয় কেন্দ্রীয় এজেন্সি। সেখান থেকে অন্তত পাঁচ কোটি নগদ, দেড় কেজি সোনা ও গয়না, পাঞ্জাবের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে থাকা সম্পত্তি কাগজ, মার্সিডিজ ও অডি গাড়ির চাবি, ২২টি বহুমূল্য ঘড়ি, ৪০ লিটার বিদেশি মদ সহ বহু সামগ্রী বাজেয়াপ্ত হয়েছে। মিলেছে ডাবল ব্যারেল শর্টগান, একটি পিস্তল, একটি রিভালবার ও একটি এয়ারগান। পাশাপাশি কৃষ্ণার বাড়ি থেকে ২১ লক্ষ টাকা নগদও উদ্ধার করেছেন তদন্তকারীরা। 
  • Link to this news (বর্তমান)