নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: ছ’ বছর ধরে মামলা পড়ে। অথচ সিবিআই তার শুনানির জন্য তদ্বিরই করেনি। তাই কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশই বহাল রাখল সুপ্রিম কোর্ট। সারদা চিটফান্ড ইস্যুতে রাজ্য পুলিসের ডিজি রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের জামিন বাতিল মামলা শুক্রবার খারিজ করে দিল দেশের প্রধান বিচারপতি বি আর গাভাই এবং বিচারপতি কে বিনোদ চন্দ্রনের বেঞ্চ। যদিও সিবিআইয়ের আইনজীবী তথা কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা মামলাটি জিইয়ে রাখার প্রবল চেষ্টা চালান। কিন্তু কেন গত ছ’ বছর সিবিআই কিছুই করেনি? প্রধান বিচারপতি তা নিয়ে প্রশ্ন করায় আমতা আমতা করতে থাকেন তুষার মেহতা।
‘কৌশলে’ তিনি জামিন বাতিল মামলাটি জিইয়ে রাখার চেষ্টা করেন। বলেন, এটির সঙ্গে আদালত অবমাননার মামলাটিও শুনুন। তাহলেই বুঝতে পারবেন। কিন্তু প্রধান বিচারপতি জানিয়ে দেয়, ওটা তো আলাদা মামলা। আলাদাই শুনব। অগত্যা তুষার মেহতা হাল ছাড়েন। বলেন, ‘মাননীয় বিচারপতির বেঞ্চ যা ঠিক করবে, মেনে নেব।’ এই মামলায় রাজীব কুমারের হয়ে ছিলেন আইনজীবী বিশ্বজিৎ দেব। তিনি বলেন, ‘অহেতুকই এই জামিন বাতিলের মামলা করেছিল সিবিআই। আমার মক্কেলকে বদনাম করার জন্যই সিবিআইয়ের এই স্পেশাল লিভ পিটিশন।’
তবে জামিন বাতিলের মামলা খারিজ করে দেওয়া হলেও রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলাটি চলবে বলেই জানিয়ে দিল সর্বোচ্চ আদালত। আট সপ্তাহ পরে ওই মামলার শুনানি হবে। আদালত অবমাননার এই মামলাটিও অযৌক্তিক বলেই এদিন সুপ্রিম কোর্টে দাবি করেন রাজ্য এবং রাজীব কুমারের আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি এবং কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। সিংভি বলেন, ‘রাজীব কুমার একজন রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত অফিসার। ২০১৪-১৭ থেকে তদন্তে সবরকম সহযোগিতা করেছেন। তারপর সিবিআই কিছু করেনি। সুপ্রিম কোর্টের অনুমতিক্রমেই হাইকোর্টে আবেদন করে ২০১৯ সালে জামিন পেয়েছেন রাজীব কুমার।
যদিও তুষার মেহতার সওয়াল, আদালত অবমাননার বিষয়টি অত্যন্ত সিরিয়াস। কলকাতায় তদন্তের কাজে সিবিআইয়ের অফিসারদের হেনস্তা করা হয়েছিল। মহিলা অফিসারদেরও ছাড়া হয়নি। তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। সেই সময়ের কলকাতা পুলিসের কমিশনার রাজীব কুমারকে বাঁচাতে মুখ্যমন্ত্রী পর্যন্ত চলে গিয়েছিলেন। বিষয়টি অত্যন্ত সিরিয়াস।
সওয়ালে মুখ্যমন্ত্রীর প্রসঙ্গ তোলায় প্রতিবাদ করেন আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, অহেতুক মুখ্যমন্ত্রীর কথা তোলা হচ্ছে। কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। উভয়পক্ষের মিনিট ছ’য়েক সওয়াল-জবাব শেষে বিচারপতি বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, আদালত অবমাননার মামলাটি চলবে। আট সপ্তাহ পর শুনব।