পুজোর দিন ভক্তদের সুবিধার্থে বুড়া কালীর মন্দিরে চারজন পুরোহিত
বর্তমান | ১৮ অক্টোবর ২০২৫
সুজয় সরকার , হিলি:
বালুরঘাট শহরের ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন পুজোগুলির অন্যতম তহবাজার এলাকার বুড়াকালী মাতার পুজো। পরম্পরা ও নিয়ম নিষ্ঠাই এখানকার পুজোর মূল আকর্ষণ। মন্দিরে অধিষ্ঠিত দেবীর বছরভর নিত্যপুজো হয়। পাশাপাশি প্রতিবছর দীপান্বিতা কালীপুজোতে দেবীর বিশেষ পুজোর আয়োজন করা হয়। এবছরও পুজো উপলক্ষ্যে নব কলেবরে মন্দির চত্বরকে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা হয়েছে। দীপান্বিতা অমাবস্যায় দেবীর বিশেষ পুজো উপলক্ষ্যে এখন মন্দির প্রাঙ্গণে সাজসাজ রব।
শতাব্দী প্রাচীন এই পুজোয় ভক্তেরও সমাগম ঘটে।
পুজোর দিন দেবীকে লাল বেনারসি ও নানান স্বর্ণালংকার পরিয়ে সাজানো হয়। এখানকার মায়ের পুজোতে মহাপ্রসাদ হিসাবে থাকে বোয়াল মাছ, প্রথম বলি দেওয়া পাঁঠার মাংস, ডাল, আতপ চালের ভাত, সবজি, লুচি, পায়েস সহ একাধিক পদ। পুজো কমিটির পক্ষ থেকে এবারও দুটি পাঁঠা বলি দেওয়া হবে। ভক্তদের মানতের পাঁঠাও বলি হয়।
পুজোর দিন সকাল থেকে বুড়াকালী মাতার মন্দিরে ভক্তদের সমাগম বাড়তে থাকে। বিকেলের পর থেকে পুজো দিতে ভক্তদের লম্বা লাইন পড়ে যায়। শুধু বালুরঘাট শহর নয়, জেলার বিভিন্ন প্রান্ত এমনকী পার্শ্ববর্তী জেলা থেকেও প্রচুর ভক্ত আসেন।
এই পুজো ঠিক কখন কীভাবে শুরু করেছিল, সে সম্পর্কে সঠিক তথ্য ও সন তারিখ জানা যায় না। তবে কথিত আছে, বহুবছর আগে হঠাৎ করে এখানে দেবী মায়ের অস্তিত্ব উপলব্ধি করে পুজোর প্রচলন শুরু হয়েছিল। মাটি থেকে উঠে আসা কষ্ঠি পাথরে দেবী পুজোর প্রচলন হয়। আবার একাংশের মতে, শহরের পাশে বহমান আত্রেয়ী নদী থেকে ভেসে ওঠে বুড়া কালী মাতার বিগ্রহ বা শিলা খণ্ড। এক তান্ত্রিক সেই সময় এই বিগ্রহকে তুলে নিয়ে এসে পুজোর প্রচলন করেছিলেন। প্রথমে টিনের চাল দেওয়া ঘরে দেবীর পুজো শুরু হলেও পরবর্তীতে পাকা মন্দির গড়ে উঠেছে।
ভক্তদের সুবিধার্থে পুজো কমিটি এবার একাধিক ব্যবস্থা নিয়েছে। পুজোর দিন ভক্তরা এসে যাতে তাৎক্ষণিক ভোগ দিতে পারেন, তার জন্য একজন মূল পুরোহিত সহ মন্দির প্রাঙ্গনে অতিরিক্ত চারজন পুরোহিত থাকবেন। পুণ্যার্থী ও ভক্তদের সুবিধার্থে ১০ অক্টোবর থেকে কুপন সংগ্রহের আগাম ব্যবস্থা করা হয়েছে। পুজোর পরদিন সকাল সাতটা থেকে দেবীর পুজোর অন্নভোগ বিতরণ করা হবে।
এপ্রসঙ্গে এবারের পুজো কমিটির সম্পাদক অমিত মহন্ত বলেন, পুজোর দিন পুণ্যার্থীরা যাতে সুষ্ঠুভাবে দেবী মায়ের দর্শন করতে পারেন ও ভোগ দিতে পারেন, তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পুজো সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে প্রশাসনের সহযোগিতায় একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তা জোরদার করতে পুজোর দিন মন্দির চত্বরে প্রচুর পুলিশ ও সিভিক মোতায়েন থাকবে।