• কুশমণ্ডি আমিনপুর জমিদার বাড়ির মাটিয়া কালীর পুজোয় এখনও নামে ভক্তের ঢল
    বর্তমান | ১৮ অক্টোবর ২০২৫
  • সোমেন পাল , গঙ্গারামপুর:

    আমিনপুরের শতাব্দী প্রাচীন মাটিয়া কালীপুজোর দিন এখনও মাটিতে শোওয়ার রীতি রয়েছে গ্রামে। কুশমণ্ডি আমিনপুর জমিদার বাড়িতে পঞ্চমুণ্ডীর আসনে মাটিয়া কালীর পুজো হয়ে আসছে প্রায় ৭০০ বছর ধরে। তবে একসময়ের সর্বজনীন কালীপুজো আজ সীমাবদ্ধ হয়েছে জমিদার বাড়ির বর্তমান বংশধরদের মধ্যে। 

    শোনা যায়,অখণ্ড দিনাজপুর জেলার হরিপুর স্টেটের জমিদার সিংহরাজা রাঘবেন্দ্র রায় চৌধুরীর পূর্বপুরুষ প্রায় ৭০০ বছর আগে স্বপ্নাদেশে মাটিয়া কালীর পুজো শুরু করে কুশমণ্ডির আমিনপুর এলাকায়। তারপর থেকেই বংশপরম্পরায় রীতি মেনে, প্রজাদের নিয়ে মাটিয়া কালীর পুজো হয়ে আসছে। সে সময় থেকে দেবীর নির্দেশ অনুযায়ী মাটিয়া কালীর কোনও মন্দির নেই। পঞ্চবৃক্ষের নীচে পুজো হয়ে থাকে। লোকমুখে প্রচারিত, মাটিয়া কালী এতটাই জাগ্রত ছিলেন যে, আশপাশের লোকেরা খাটে ঘুমোতে পারতেন না। সবাই মাটিতে ঘুমোতেন। এখনও এলাকার লোক পুজোর দিন মাটিতেই ঘুমোন। 

    জমিদারের বংশধরেরা মাটিয়া কালীর মন্দির তৈরি করার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। মাটিয়া কালীর পাশেই জমিদার সুবিশাল শিবমন্দির তৈরি করেছেন। এই পুজোর বিশেষত্ব, মাটিয়া কালী প্রতিমা তৈরির জন্য খড় আসে মুসলিম পরিবারের বাড়ি থেকে। দীপাবলি অমাবস্যার দিন প্রতিমায় রং ও সাজসরঞ্জাম পরানো হয়। অমাবস্যা তিথিতে প্রথমে তন্ত্রমতে ও তার পরের প্রহরে বৈষ্ণবমতে মাটিয়া কালী পুজো হয়ে থাকে। মনস্কামনা পূরণ হলে ভক্তরা দেবীকে স্বর্ণালংকার ও পাঁঠা উত্সর্গ করেন। কয়েকশো পাঁঠা বলিও হয় কালীপুজোর রাতে। 

    জমিদার বাড়ির বধূ সুতপা রায় চৌধুরী বলেন, আজও প্রতিমা তৈরির খড় মুসলিম পরিবারের বাড়ি থেকে আসে। পুজোর পর প্রসাদ বিতরণ হয়। পুজোর পরের দিন শোভাযাত্রা করে জমিদারের পুকুরে প্রতিমা নিরঞ্জন  করা হয়। ( মাটিয়া কালীর বেদী। - নিজস্ব চিত্র।)
  • Link to this news (বর্তমান)