• ১০৭টি সিঁড়ি ভেঙে উঠতে হয় সেভকেশ্বরী কালীমন্দিরে
    বর্তমান | ১৮ অক্টোবর ২০২৫
  • সঞ্জিত সেনগুপ্ত, শিলিগুড়ি:

    পাহাড় কেটে তিনশো ফুট উঁচুতে তৈরি হয়েছে মায়ের মন্দির। এখানে রয়েছে  দক্ষিণাকালীর মূর্তি। সেভক পাহাড়ে মন্দিরটি হওয়ায় এর নাম সেভকেশ্বরী কালীমন্দির।  মায়ের দর্শন পাওয়ার জন্য সেভক পাহাড়ে ১০৭টি সিঁড়ি ভেঙে উঠতে হবে। কালীপুজোর দিন ভক্তদের ঢল নামে এই মন্দিরে। শিলিগুড়ি ও লাগোয়া এলাকা শুধু নয়, কলকাতা, নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ থেকেও বহু মানুষ কালীপুজোর দিন এখানে আসেন। রাত জেগে পুজো দেন। ভোর হতেই প্রসাদ নিয়ে ফিরে যান।

    শিলিগুড়ি শহর থেকে ২০ কিমি দূরে সেভকেশ্বরী মন্দির। শিলিগুড়ি থেকে গ্যাংটক, কালিম্পং বা  ডুয়ার্স যাওয়ার পথে সেভক পাহাড়ে ওঠার মুখে রাস্তার বাঁদিকে এই কালীমন্দির। স্বপ্নে পাওয়া এই মন্দির জাগ্রত বলে প্রচলিত। কথিত আছে, এখানে মানত করে সকলেরই মনোবাসনা পূর্ণ হয়। তাই সারা বছরই এখানে ভক্তদের ভিড় লেগে থাকে। এই রাস্তা দিয়ে যাওয়ার পথে অনেক গাড়ি দাঁড়িয়ে যায়। মন্দিরে গিয়ে পুজো দিয়ে যাত্রা করেন সকলে। 

    পুরোহিত নন্দকিশোর গোস্বামী বলেন, সেভকে রাজ্য সরকারের একটি অফিসের কর্মী ছিলেন মাতৃসাধক দীনেন্দ্রনাথ সান্যাল। তিনি স্বপ্নে দেখেন সেভক পাহাড়ের জঙ্গলে ঢাকা পড়ে রয়েছে পঞ্চমুণ্ডির আসন ও ত্রিশূল। সেই মতো জঙ্গল কেটে আসন বের করে সেভক পাহাড়ে তিনি কয়েক জনের সহযোগিতায় ১৯৫২ সালে এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। মন্দিরের সামনে সেই পঞ্চমুণ্ডির আসন ও ত্রিশূল রাখা আছে। তারপর ভক্ত সংখ্যা বাড়তে থাকে। ভক্তদের সহযোগিতায় ১৭ বছর আগে মন্দির ও সিঁড়ি পাকা করা হয়। 

    মন্দিরকে কেন্দ্র করে কালীপুজোর রাত সেভক পাহাড়ে নামে আলোকের ঝরনাধারা। নিত্যপুজোর পাশাপাশি প্রতি অমাবস্যায় এখানে বড় করে মায়ের পুজো হয়। কালীপুজোর দিন ধুমধাম করে পুজো হয়। ভক্তদের পুজোর ডালায় ভরে যায়। এখনও একইরকম ধুমধাম করে পুজো হচ্ছে। তবে দু’বছর আগে এখানে পশুবলি বন্ধ হয়ে যায়। পরিবর্তে ফল ও সবজি বলি দেওয়া হয়। ভক্তরা কেউ পশু বলি মানত করে থাকলে তা মা’কে উৎসর্গ করে ছেড়ে দেওয়া হয়।
  • Link to this news (বর্তমান)