• সীমান্তে কালীমন্দিরের পুজো ঘিরে মেতে ওঠে বিএসএফও
    বর্তমান | ১৮ অক্টোবর ২০২৫
  • বিষ্ণুপদ রায়, হলদিবাড়ি:

    ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষা শতাব্দী প্রাচীন কালীমন্দিরের পুজোকে ঘিরে ব্যস্ততা তুঙ্গে। হলদিবাড়ি ব্লকের হেমকুমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন কালীতলা বিএসএফ ক্যাম্প লাগোয়া কালীমন্দিরের পুজো আনুমানিক ১৭৫ বছরের প্রাচীন। প্রতিবছর এই মন্দিরের পুজোকে ঘিরে মেতে ওঠে গোটা গ্রাম ও বিএসএফ কর্মীরা।

    পুজো উদ্যোক্তা অতুলদেব অধিকারী, বিজয়দেব অধিকারী, দিলীপ রায়’রা বলেন, মন্দিরে অধিষ্ঠিত কালীদেবী জাগ্রত। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় দেবী নিজে তাঁর মহিমার পরিচয় দেন। সে সময় পাকিস্তানি সেনারা বাংলাদেশের পাশাপাশি এই এলাকায় আক্রমণ চালায়। সেনারা এলাকাজুড়ে প্রচুর বোমা বর্ষণ করে। তাঁদের দাবি, অদ্ভুতভাবে মন্দির লাগোয়া এলাকায় পড়া একটিও বোমা ফাটেনি। মাটিতে পড়তেই সব বোমা নিজে থেকেই নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়। রক্ষা পায় ওই এলাকা সহ লাগোয়া বিএসএফ ক্যাম্পটিও। এই ঘটনার পর থেকেই মন্দিরের দেবীর প্রতি স্থানীয় মানুষ সহ বিএসএফ জওয়ানদের অগাধ বিশ্বাস।

    আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে প্রায় আড়াইশো মিটার দূরে এই কালীমন্দিরের সামনেই রয়েছে কালীতলা বিএসএফ ক্যাম্প। বিএসএফ কর্মীরা স্থানীয়দের সঙ্গে এই পুজোর আয়োজন করেন। এক বিএসএফ কর্মী বলেন, কর্মসূত্রে এখানে এসে মন্দিরের কথা শুনেছি। সেই থেকেই মন্দিরের নানা অনুষ্ঠানে নিজেরা অংশগ্রহণ করি।

    স্থানীয় বাসিন্দা আদালু রায় বলেন, দেশ ভাগের আগেই পুজোর সূচনা হয়। দেশ ভাগের পরও যখন কাঁটাতার ছিল না তখন ওপারের হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ পুজোর দিন এখানে এসে পুজো দিতেন। কাঁটা তার হওয়ায় এখন আর ওই পারের মানুষ এপারে আসতে পারে না।     

    পুজো উদ্যোক্তা সুব্রত রায় বলেন, পুরনো নিয়ম নীতি মেনে আজও এখানে পুজো হয়। আগে পুজোর সময় মন্দিরের সামনেই পাঁঠাবলি দেওয়া হতো। এখন আর পাঁঠা বলি দেওয়া হয় না। আমাদের এই ভদ্রকালীর মন্দিরে পলেস্তারা খসে পড়ছে। যে কোনও সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সেজন্য প্রশাসনের কাছে আমাদের অনুরোধ মন্দিরের সংস্কার করে দেওয়া হোক।
  • Link to this news (বর্তমান)