ধীরে ধীরে প্রাকৃতিক দুর্যোগ কাটিয়ে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে পাহাড় ও সমতল। বাতাসেও হিমের পরশ। ভোরে ও রাতে শীতের আমেজ। এমন আবহাওয়ায় অবাঙালিদের উৎসব ধনতেরসে মেতেছে শিলিগুড়ি। ধনতেরসের দিন কেউ সাধ্যমতো সোনা ও আবার কেউ রুপোর গয়না কেনার পরিকল্পনা করেছেন। তাই বাজার ধরতে কার্যত প্রতিযোগিতায় নেমেছেন স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা। তাঁদের একাংশের টার্গেট আসন্ন বিয়ের বাজার। এজন্য তাঁরা প্রতিষ্ঠানের অলঙ্কার সম্ভার নিয়ে প্রচার শুরু করেছেন।
গত ৪ অক্টোবর ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে লন্ডভন্ড হয়ে যায় পাহাড় ও সমতলের বিস্তীর্ণ অংশ। দুর্যোগ কাটিয়ে এখন ছন্দে ফিরছে পাহাড় ও সমতল। এমন আবহে রাজ্যের অন্যান্য প্রান্তের মতো উত্তরবঙ্গের বাণিজ্য নগরী শিলিগুড়িও মেতেছে ধনতেরসে। এটা মূলত অবাঙালিদের উৎসব। ব্যবসা-বাণিজ্যে সমৃদ্ধের আশায় ধনতেরসের দিন ধনদেবী লক্ষ্মীর আরাধনা করেন অবাঙালিরা। তাঁরা দিনটিতে সাধ্যমতো সোনা ও রুপোর গয়না কেনেন। এজন্য শহরের বিধান মার্কেটের সোনাপট্টি, হিলকার্ট রোড, বর্ধমান রোডের বিভিন্ন সোনার দোকানে জমজমাট ভিড়। অনেকেই আধুনিক গয়নার দাম, মেকিং চার্জ সহ বিভিন্ন বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছেন। বাসিন্দাদের আগ্রহ দেখে ধনতেরসের বাজার ধরতে ঝাঁপিয়েছেন স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা। তাঁরা ব্যানার, হোডিং টাঙিয়ে নিজেদের প্রতিষ্ঠানের প্রচার করছেন।
কয়েকদিন আগে বিধান মার্কেটের একটি স্বর্ণ প্রতিষ্ঠানে কেনাকাটার ফাঁকে হাকিমপাড়ার গৃহবধূ কল্পনা দে বলেন, ধনদেবীর কৃপা লাভ করতেই গয়না ক্রয় করছি। এখন অগ্রিম দিয়ে বুক করে যাচ্ছি। ধনতেরসের দিন বাকি দাম দিয়ে পছন্দের গয়না বাড়ি নিয়ে যাব। এনটিএস মোড়ের একটি স্বর্ণ প্রতিষ্ঠানে সুভাষপল্লির গৃহবধূ রাখি সাহা বলেন, আরএক মাস পরই ভাইঝির বিয়ে। তাঁকে সোনার গয়না উপহার দিতে হবে। তাই ধনতেরসের ছাড়ে গয়না বুকিং করতে এসেছি। হিলকার্ট রোডে একটি স্বর্ণ প্রতিষ্ঠানে মেয়েকে নিয়ে হাজির হয়েছিলেন পিউ দাস। তিনি বলেন, ধনতেরস উপলক্ষ্যে সোনার গয়না তৈরির মজুরিতে কিছুটা ছাড় আছে। তাই মেয়ের ভবিষ্যতের কথা ভেবেই এখন ছাড়ে গয়না কিনছি।
শহরে কালীপুজোর মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে। সঙ্গে চলছে আলোর উৎসব দীপাবলি ও ধনতেরসের প্রস্তুতি। সোনার দাম অস্বাভাবিক হলেও বাজার ধরতে প্রতিযোগিতায় নেমেছেন স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা। কেউ গয়না প্রস্তুতের মজুরির উপর ছাড় দিচ্ছেন। আবার কেউ কেউ নগদ টাকার কেনাকাটার উপর উপহার ঘোষণা করেছেন।
বিধান মার্কেটের এক স্বর্ণ ব্যবসায়ী প্রদীপ কর্মকার বলেন, এখানে হালকা সোনা থেকে সব ধরনের আকর্ষণীয় গয়না রয়েছে। ধনতেরস উপলক্ষ্যে ছাড় শুরু হয়েছে। সোনার গয়নায় মেকিং চার্জে ৩০ শতাংশ, হিরার গয়নায় মেকিং চার্জের উপর ৭৫ শতাংশ ছাড় মিলবে। এধরনের বেশকিছু অফার চলছে। মানুষ দোকানে এসে গয়না দেখছেন, সোনার দাম সম্পর্কে খোঁজ খবর নিচ্ছেন।
এনটিএস মোড়ের আরএক স্বর্ণ ব্যবসায়ী প্রণব হালদার বলেন, সোনার দাম বেশি থাকায় বাজারের অবস্থা কিছুটা অন্যরকম। গোল্ড কয়েন, বিয়ের গিফ্ট আইটেম এগুলির চাহিদা কম। তবে, বিভিন্ন রকম স্কিমে গয়না কেনায় ঝোঁক ক্রেতাদের মধ্যে লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আমাদের প্রতিষ্ঠানেও বেশকিছু ছাড় রয়েছে।