চুঁচুড়া শহর লাগোয়া সুগন্ধার গ্রামে চিকনগুনিয়ার সংক্রমণ, আতঙ্ক এলাকায়
বর্তমান | ১৮ অক্টোবর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: হুগলির সুগন্ধার গ্রামে চিকনগুনিয়া সংক্রমণকে ঘিরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সুগন্ধার জারুয়া গ্রামে অনেক গ্রামবাসীর জ্বর, গাঁটে ব্যথা ও গায়ে ফুসকুড়ির মতো লক্ষণ দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যেই স্থানীয় এলাকায় ক্যাম্প করে রক্তপরীক্ষা করেছে হুগলি জেলার স্বাস্থ্যদপ্তর। তাতে অন্তত ৩০ জনের শরীরে চিকনগুনিয়ার ভাইরাস পাওয়া গিয়েছে। সাম্প্রতিক অতীতে হুগলিতে ডেঙ্গু সংক্রমণ নিয়ে উদ্বেগের আবহ তৈরি হলেও চিকনগুনিয়ার দাপট সেভাবে দেখা যায়নি। সেই নিরিখে গত কয়েক বছরে এবারই প্রথম চিকনগুনিয়ার সংক্রমণ স্বাস্থ্যকর্তাদের ভাবাতে শুরু করেছে।
পোলবা-দাদপুর ব্লকের ওই গ্রামের পরিবেশ নিয়ে স্থাস্থ্যকর্মীদের একাংশ ইতিমধ্যেই উষ্মা প্রকাশ করেছেন। স্বাস্থ্যকর্মীদের দাবি, চিকনগুনিয়া ছড়ায় এমন মশার আঁতুড়ঘরের পরিবেশ গ্রামে তৈরি হয়েছে। পরিচ্ছন্নতার অভাব সেখানে বিশেষভাবে দেখা যাচ্ছে। এনিয়ে জেলার স্বাস্থ্যদপ্তর প্রচারে নেমেছে। নাগরিক সচেতনতা তৈরির পাশাপাশি, পঞ্চায়েতের তরফে সাফাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। তবে আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে এডিস মশার দু’টি প্রজাতি চিকনগুনিয়া ছড়িয়ে দেয়। এলাকায় বেশিরভাগ মানুষের মধ্যে সংক্রমণ আছে বলেই আশঙ্কা। সেক্ষেত্রে চিকনগুনিয়া আরও কতটা ছড়াবে, তা অনুমান করা কঠিন। যদিও হুগলির মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ মৃগাঙ্কমৌলি কর বলেন, ভয়াবহ আতঙ্কের পরিবেশ নেই। ডেঙ্গুর মতোই চিকনগুনিয়া একটি ভাইরাসঘটিত রোগ। যা এডিসের অন্য একটি প্রজাতি মানুষের মধ্যে এই রোগ ছড়ায়। এলাকায় মশার বাড়বাড়ন্ত রুখতে হবে, পরিবেশ স্বচ্ছ রাখতে হবে। সুগন্ধার ওই গ্রামে বেশকিছু বাসিন্দার শরীরে সংক্রমণ পাওয়া গিয়েছে। তাঁদের মশারির ভিতরে রাখা হয়েছে। গ্রামে স্বাস্থ্যশিবির বসিয়ে জ্বর ও অন্যান্য উপসর্গের গতিপ্রকৃতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে। গ্রাম পরিদর্শনে গিয়েছিলেন চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদার। তিনি বলেন, স্বাস্থ্যদপ্তর তৎপরতার সঙ্গে কাজ করছে। স্থানীয় পঞ্চায়েতকে সাফাই সহ যাবতীয় পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে। আমরা মানুষের পাশে আছি। দুর্গাপুজোর পরপরই গ্রামে জ্বর, সর্দির মতো সমস্যায় ভুগতে শুরু করেছিলেন বাসিন্দারা। কিন্তু পরে তা শরীরজুড়ে তীব্র ব্যথা, ভয়াবহ জ্বরের দিকে বাঁক নেয়। সেইসঙ্গে শরীরে বেশকিছু ভাইরাস সংক্রমণের লক্ষণ প্রকাশিত হতে শুরু করে। এরপরই স্বাস্থ্যদপ্তর সক্রিয় হয়ে ওঠে। রক্ত পরীক্ষায় দেখা যায়, ব্যাপকভাবে চিকনগুনিয়া সংক্রমণ ছড়িয়েছে। তাতেই আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে।