বহিরাগত এনে ভোটার বানানো হচ্ছে রাজ্যে, সতর্কবার্তা মমতার
বর্তমান | ১৮ অক্টোবর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বাংলাকে বঞ্চনার অভিযোগ তো ছিলই, এবার সরাসরি বহিরাহগতদের রাজ্যে এনে ভোটার বানানোর চক্রান্তের কারিগর হিসেবে গেরুয়া শিবিরের দিকে তির ছুড়লেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এব্যাপারে তৃণমূল কাউন্সিলারদের মমতার সতর্কবার্তা, বাইরে থেকে কেউ এসে বাংলার কোনও স্থানে আসর পেতে বসছে কি না, তার দিকে সবসময় নজর রাখা জরুরি।
ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনের দিন যত এগিয়ে আসছে, ততই কেন্দ্রের শাসক দলের সঙ্গে রাজনৈতিক টানাপোড়েন বাড়ছে তৃণমূলের। বাংলাকে অপমান, মিথ্যা রটানোর ব্লু-প্রিন্ট তৈরির অভিযোগ তারা করছে বিজেপির বিরুদ্ধে। আর ঠিক এই আবহে সামনে চলে এসেছে বহিরাগত প্রসঙ্গ। সেই তালিকায় রয়েছে ভবানীপুর সহ রাজ্যের একাধিক বিধানসভা আসন। বিশেষ করে ভবানীপুরকে বলাই হয় মিনি ভারতবর্ষ। এখানে সব ধর্ম, সম্প্রদায়ের মানুষের সহাবস্থান। অভিযোগ, এলাকার বাসিন্দা নন এমন বেশ কিছু লোকজনকে বিজেপি বাইরে থেকে নিয়ে আসছে। এই বিষয়টি গত মঙ্গলবার ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের বিজয়া সম্মিলনিতে তুলে ধরেন মমতা। এ ব্যাপারে আরও সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দিলেন শুক্রবার। এদিন গিরিশ পার্ক ফাইভ স্টার স্পোর্টিং ক্লাবের কালীপুজোর উদ্বোধনে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বহিরাগত বলতে একটি রাজনৈতিক দলকে বলেছি। যারা বাইরে থেকে লোক নিয়ে এসে এখানে আমাদের ভোটারের নামের পাশে ১০টা বাইরের লোকের নাম তোলে, যাতে এখানকার ভোটাররা ভোট দিতে না পারেন।’ মুখ্যমন্ত্রীর আরও অভিযোগ, ‘এখানকার সবাই বাংলার মানুষ। কিন্তু নির্বাচনের নাম করে কিছু বহিরাগত চলে আসে। তারা হোটেল, গেস্ট হাউস ভাড়া করে থাকে। এমনকি ফ্ল্যাটও কিনে নেয়। তারা এখানকার বাসিন্দাই নয়। কখনও দু’জায়গায় ভোটারের নাম থাকতে পারে না। কাউন্সিলার ও দলের নেতাদের বলেছি, সব দিকে নজর রাখতে।’
এদিন জানবাজার ও শেক্সপিয়র সরণির কালীপুজোর উদ্বোধন গিয়েও মমতার বক্তব্যে উঠে এসেছে বহিরাগতদের বাংলায় আসর পেতে বসার প্রসঙ্গ। সেখানে তিনি বলেন, ‘আমি আমার এলাকার ওয়ার্ডগুলিকে খুব ভালো চিনি। দীর্ঘদিন ধরে যাঁরা এলাকার বাসিন্দা, তাঁদের সম্পর্কে কিছু বলিনি। তাঁরা সকলেই বাংলার মানুষ। এখানে দোকান, ব্যবসা করছেন তাঁরা। তাঁরা এখানকার ভোটার। নোট বাতিল, করোনার সময় আমি পাশে দাঁড়িয়েছিলাম। সব উৎসবে একসঙ্গে থাকি। যাঁরা অপপ্রচার করছেন, তাঁরা ঠিক করছেন না।’ উলটে তিনি রাজস্থান, বিহার, গুজরাতের কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন। সব ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে মমতার বার্তা, ‘কেন্দ্রের রিপোর্টেই কিন্তু কলকাতা নিরাপদতম। কিন্তু ডাবল ইঞ্জিনের বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে যেভাবে নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে, তাতে ওই শহরগুলিই নিরাপদ নয়!’