• পুজোকেন্দ্রিক ৬০০ বিজ্ঞাপনী হোর্ডিং, ব্যানার খুলে ফেলল কলকাতা পুরসভা
    বর্তমান | ১৮ অক্টোবর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: পুজোর সময় রাস্তার দু’ধারে অস্থায়ী বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য বাঁশের কাঠামো তৈরি করা হয়। গত কয়েক বছর ধরে রাস্তার ধারের ওই কাঠামো তৈরি থেকে শুরু করে পুজোকেন্দ্রিক বিজ্ঞাপনের হোর্ডিং বা ব্যানার খোলা নিয়ে কড়াকড়ি করছে কলকাতা পুরসভা। নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে হোর্ডিং-ব্যানার না খোলায় একাধিক বিজ্ঞাপনদাতা সংস্থাকে জরিমানাও করা হয়েছে। এবছরও পুরসভা নোটিশ দিয়ে জানিয়েছিল, দুর্গাপুজোর দশমীর পর ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে এই ধরনের সব বিজ্ঞাপন খুলে ফেলতে হবে। সেই মতো এবার শহরের অনেকাংশেই পুজোর অস্থায়ী বিজ্ঞাপন খুলে ফেলা হয়েছে। কিন্তু এখনও রয়েও গিয়েছে বহু বিজ্ঞাপন। কোথাও কোথাও হোর্ডিং সরানো হলেও বাঁশের কাঠামো দাঁড়িয়ে আছে। এই অবস্থায় ফের অভিযান চালিয়েছিল কলকাতা পুরসভার বিজ্ঞাপন বিভাগ। শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণ— বিভিন্ন অংশে অভিযান চালিয়ে প্রায় ৬০০ পুজোকেন্দ্রিক অস্থায়ী বিজ্ঞাপনের হোর্ডিং-ব্যানার খুলে ফেলেছে তারা। ৮ থেকে ১০ টি জায়গায় বাঁশের কাঠামো খোলা হয়েছে। পুরসভা সূত্রে খবর, আপাতত ২০টি বিজ্ঞাপনদাতা সংস্থাকে জরিমানার চিঠি পাঠানো হয়েছে। এই সংখ্যা আরও বাড়বে। 

    গত শুক্রবার রাতে প্রথমে ই এম বাইপাস ও ধর্মতলা থেকে চৌরঙ্গী, পার্ক স্ট্রিট ধরে এক্সাইড, গুরুসদয় রোড, সৈয়দ আমির আলি অ্যাভিনিউ সহ সংশ্লিষ্ট এলাকার বিভিন্ন রাস্তা থেকে পুজোর বিজ্ঞাপনগুলি খোলা হয়। সেদিন প্রায় ২০০টি পুজোকেন্দ্রিক বিজ্ঞাপনের ফ্লেক্স-ব্যানার এবং তিনটি জায়গা থেকে বাঁশের কাঠামো খুলে ফেলা হয়। তারপর বুধ ও বৃহস্পতিবার শ্যামবাজার, খান্না, মানিকতলা চত্বর এবং যাদবপুর থানা থেকে বালিগঞ্জ ফাঁড়ি এবং সাদার্ন অ্যাভিনিউতে এমন বিজ্ঞাপনী হোর্ডিং খোলা হয়। এই দু’দিনে প্রায় ৪০০ হোর্ডিং খুলেছেন পুরকর্মীরা। পাশাপাশি আটটি জায়গা থেকে বাঁশের কাঠামো খুলে ফেলা হয়। এক আধিকারিক বলেন, ‘আপাতত নতুন করে কোনও টিম নামানো হবে না। কালীপুজো এবং ছট শেষ হলে নিয়মিত টিম বেরোবে।’ 

    তবে এবছর অনেক ক্ষেত্রেই পুজোকেন্দ্রিক বিজ্ঞাপন সংশ্লিষ্ট পুজো কমিটি বা বিজ্ঞাপনদাতা সংস্থাই সরিয়ে ফেলেছে বলে দাবি পুর কর্তৃপক্ষের। ওই আধিকারিকের ব্যাখ্যা, ‘এবার প্রায় ৭০ থেকে ৮০ ভাগ ক্ষেত্রে নিজেরাই পুজোর পর বিজ্ঞাপন খুলে ফেলেছে। বাঁশের কাঠামো গত বছর পুরোটাই পুরসভাকে খুলতে হয়েছিল। এবার অন্তত ২০ থেকে ৩০ শতাংশ বিজ্ঞাপনদাতা সংস্থা বা পুজো কমিটিই খুলেছে। আশা করি, পরের বছর অভিজ্ঞতা আরও ভালো হবে।’ 

    পুরসভা সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে ২০টি বিজ্ঞাপনদাতা সংস্থাকে জরিমানার চিঠি ধরানো হয়েছে। এক অফিসার জানান, বিজ্ঞাপনের যে স্বাভাবিক রেট রয়েছে, সেই টাকা তো দিতে হবেই। সেই সঙ্গে আরও তিনগুণ বেশি টাকা গুনতে হবে। তার সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে এই ব্যানার ফ্লেক্স বা বাঁশের কাঠামো খোলার খরচও। প্রতিটি বিজ্ঞাপনদাতা সংস্থার থেকে সেই খরচ বাবদ অতিরিক্ত ৬ হাজার টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। গত বছর এই পুজোকেন্দ্রিক বিজ্ঞাপন খুলে জরিমানা বাবদ প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা আয় করেছিল পুরসভা।
  • Link to this news (বর্তমান)