কলকাতার বৃষ্টি বিপর্যয়ে মৃতদের পরিবারের পাশে মুখ্যমন্ত্রী, চাকরির নিয়োগপত্র ও আর্থিক সাহায্য
দৈনিক স্টেটসম্যান | ১৮ অক্টোবর ২০২৫
কলকাতায় বৃষ্টি বিপর্যয়ে মৃতদের পরিবারকে আর্থিক সাহায্য ও চাকরি দেওয়ার কথা আগেই ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মতো শুক্রবার শেক্সপিয়র সরণির একটি কালীপুজোর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান থেকে মৃতদের পরিবারের সদস্যের হাতে চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেন তিনি। পাশাপাশি পরিবার পিছু ২ লক্ষ টাকার চেকও তুলে দেন। ভবানীপুরে তাঁর ‘বহিরাগত’ মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক তৈরি হওয়ায় এদিন নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে দেন মমতা। তিনি জানিয়েছেন, বহিরাগত বলতে তিনি ভবানীপুরে বসবাসকারী মানুষদের বোঝাননি। তাঁর কথার অন্য অর্থ বের করা হচ্ছে।
চলতি বছর দুর্গাপুজোর আগে কলকাতায় অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হয়েছিল। গোটা শহরে জমে গিয়েছিল জল। যাদবপুর, তারাতলা, ভবানীপুর-সহ কলকাতার একাধিক এলাকা ছিল জলমগ্ন। এর জেরে কার্যত স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল জনজীবন। বিপর্যয়ের পরের দিন সকালে মোমিনপুর, নেতাজিনগর, ঠাকুরপুকুর-সহ শহরের বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মোট ১২ জনের মৃত্যু হয়। এই ঘটনার জন্য সিইএসসিকে দায়ী করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মৃতদের পরিবারের একজন সদস্যকে
সিইএসসির চাকরি ও আর্থিক সাহায্য দেওয়া উচিত বলেও জানান তিনি। যদি তারা চাকরি না দেয় সেক্ষেত্রে মৃতদের আত্মীয়কে স্পেশাল হোমগার্ডের চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দেন মমতা। বুধবার দার্জিলিঙের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে তিনি কলকাতায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃতদের পরিবারের একজন সদস্যকে চাকরি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন তিনি। শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের হাতে চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেন।
‘বহিরাগত’ মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক তৈরি হতেই মুখ্যমন্ত্রী এদিন স্পষ্ট করে দেন যে, তিনি বহিরাগত বলতে ভবানীপুরে বসবাসকারী মানুষদের বোঝাতে চাননি। তিনি মিটিংয়ে দলের কাউন্সিলরদের প্রশ্ন করেছিলেন, বস্তি থেকে গরিব মানুষকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে, তাঁদের জন্য বাংলার বাড়ি বানানো হচ্ছে না কেন? তাঁর কথায়, ‘কেউ যদি জমি কিনে নেন, আর তাঁর জন্য ২০০ জন মানুষকে তাড়িয়ে দেন— তা মানবিক নয়। বৈঠকে আমি সেটাই বোঝাতে চেয়েছিলাম।’ তিনি আরও বলেন, ‘ভবানীপুর আমার বাড়ি, এখানকার সকলে আমার নিকটজন। আমি ভবানীপুরের কারও বিরুদ্ধে বলিনি। আমি শুধু চেয়েছি, গরিব মানুষ যেন বাঁচে, বস্তির মানুষ যেন জায়গা পায়।’
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার ভবানীপুর তৃণমূলের বিজয়া সম্মিলনীতে ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখতে গিয়ে মমতা বলেছিলেন, ‘ভবানীপুরটা পুরো বহিরাগতদের দিয়ে ভরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বাইরে থেকে এসে অনেকেই জায়গা কিনে বাড়ি তৈরি করছে। কিন্তু ফ্ল্যাটে থাকলেও তাঁরা পাচ্ছেন না জল, ড্রেনেজ। সেই পরিকাঠামোও নেই।’ এরপর মমতার বহিরাগত তত্ত্বের অন্য ব্যাখ্যা করা হয়। এই ঘটনায় গোদি মিডিয়াকে দায়ী করেছেন মমতা। মিডিয়ার এই অংশ ভুল তথ্য ছড়াতে ‘ওস্তাদ’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, তিনি যা বলেন গদি মিডিয়া তার উল্টো করে দেয়।