দীপাবলির উৎসবে মাদক পাচারের চেষ্টা, উদ্ধার কোটি টাকার বেশি মাদক, গ্রেপ্তার ১...
আজকাল | ১৮ অক্টোবর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: মালদার কালিয়াচকের একটি গোপন ডেরা থেকে বিপুল পরিমাণ ব্রাউন সুগার পাচার করতে গিয়ে শুক্রবার সন্ধ্যা নাগাদ মুর্শিদাবাদের ফরাক্কা থানার পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হল মালদার দুই যুবক। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতদের হেফাজত থেকে প্রায় ১ কেজি ৭০০ গ্রাম অত্যন্ত উন্নত মানের ব্রাউন সুগার উদ্ধার হয়েছে। উদ্ধার হওয়া মাদকের মূল্য আন্তর্জাতিক বাজারে প্রায় ২ কোটি টাকা বলে জানা গিয়েছে। সাম্প্রতিক সময় রাজ্যের কোনও জেলা থেকে এত বড় অর্থ মূল্যের মাদক উদ্ধার হয়নি বলেই পুলিশ সূত্রে খবর ।
এসডিপিও (ফরাক্কা) শেখ শামসুদ্দিন বলেন ,'শুক্রবার সন্ধ্যা নাগাদ রাজ্য পুলিশের এসটিএফ এবং জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার ক্রাইম সেল ইউনিটের পক্ষ থেকে গোপন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ফরাক্কা থানার পুলিশ শংকরপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অভিযান চালায়। সেখানে কালিয়াচক থানার অন্তর্গত মহব্বতপুর গ্রামের বাসিন্দা জালাল শেখ এবং মাসুম শেখ নামে দুই যুবককে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাঘুরি করতে দেখে পুলিশ তাদের আটক করে। এরপর তাদের সঙ্গে থাকা ব্যাগ এবং অন্যান্য জিনিসপত্র তল্লাশি চালাতেই উদ্ধার হয় প্রায় ১.৭ কেজি ব্রাউন সুগার।'
জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, ধৃত দুই যুবকের কাছ থেকে যে ব্রাউন সুগার উদ্ধার হয়েছে, তা অত্যন্ত উন্নত মানের। সাম্প্রতিক সময়ে পুলিশ এত উন্নত মানের মাদক উদ্ধার করেনি। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, উদ্ধার হওয়া মাদক বাংলাদেশে পাচারের চেষ্টা করেছিল মাদক পাচারের চক্রের সঙ্গে জড়িত লোকজন।
জেলা গোয়েন্দা দপ্তরের এক আধিকারিক জানান, কয়েক বছর আগে পর্যন্ত মুর্শিদাবাদ জেলার লালগোলা থানা এলাকার কয়েকটি গ্রাম মাদক তৈরির 'হাব' হিসাবে পরিচিত ছিল। কিন্তু বারবার পুলিশি অভিযানের ফলে মুর্শিদাবাদ জেলার লালগোলা থানা এলাকায় সমস্ত ধরণের মাদক এবং হেরোইন উৎপাদন কেন্দ্রগুলি সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বর্তমানে মাদক পাচারকারীরা অন্যান্য কয়েকটি জেলার এলাকাকে ব্যবহার করে নতুন করে মাদক বিক্রির চক্র শুরু করেছে।
পুলিশের ওই আধিকারিক জানান, পোস্ত গাছের ফলের আঠা থেকে হেরোইন তৈরি হয় ।তার সঙ্গে অন্যান্য মাদক ও রাসায়নিক মিশিয়ে ব্রাউন সুগার তৈরি করা হয়। অনেক মাদক ব্যবহারকারী ব্রাউন সুগার ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে নিজেদের দেহে সরাসরি প্রবেশ করায়। আবার অনেকে সিগারেটের প্যাকেটের রাংতার ওপর এই মাদক রেখে তার ধোঁয়া নিঃশ্বাসের সঙ্গে শরীরের ভেতরে টেনে নেয়।
গোয়েন্দাদের অনুমান, জাল নোট কারবারীদের বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযান বেড়ে যাওয়ায় তাদের মধ্যে অনেকেই মাদক তৈরির ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েছে। গোয়েন্দাদের আরও অনুমান, হেরোইন এবং ব্রাউন সুগারের গুণগত মান আরও উন্নত করার জন্য মাদক পাচারকারীরা বাইরের রাজ্য থেকে মাদক তৈরির প্রশিক্ষণ আছে এরকম কাউকে নিয়ে এসে মাদক তৈরি করছে।