• রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা না করেই পাহাড়ে ‘মধ্যস্থতাকারী’, মোদীকে চিঠি দিয়ে আপত্তি মমতার
    এই সময় | ১৮ অক্টোবর ২০২৫
  • রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের আগে পাহাড়ের সমস্যার স্থায়ী সমাধানে প্রাক্তন আইপিএস পঙ্কজ কুমার সিংকে ‘মধ্যস্থতাকারী’ হিসেবে নিয়োগ করেছিল কেন্দ্র। কিন্তু রাজ্যের সঙ্গে কোনও আলোচনা না করেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে, এই অভিযোগ তুলে ও এই নিয়োগ প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

    প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে দেওয়া চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, ‘এই নিয়োগের বিষয়টি জিটিএ-র আওতাভুক্ত এলাকার শান্তি, প্রশাসনিক স্থিতিশীলতার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কযুক্ত। আর জিটিএ পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আওতাধীন একটি স্বয়ংশাসিত সংস্থা। কিন্তু তা সত্ত্বেও বিষয়টি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গে কোনও আলোচনা করা হয়নি।’ এই ধরনের পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর উপরে আঘাত বলেও উল্লেখ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

    পশ্চিমবঙ্গ সরকার, কেন্দ্রীয় সরকার এবং গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার মধ্যে ত্রিপাক্ষিক চুক্তি সইয়ের মধ্য দিয়েই ২০১১ সালের ১৮ জুলাই দার্জিলিংয়ে গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ) তৈরি হয়েছিল, সেই কথাও এই চিঠিতে উল্লেখিত হয়েছে।

    পাহাড়ে শান্তি এবং সম্প্রীতি বজায় রয়েছে, এই বার্তা সামনে রেখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লেখেন, ‘২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পরে তৃণমূল সরকারের ক্রমাগত চেষ্টায় তা সম্ভব হয়েছে। আর এই শান্তি বজায় রাখার জন্য ইচিবাচক পদক্ষেপ করা জারি রাখবে রাজ্য সরকার।’ পাহাড়ে শান্তি বজায় রাখার জন্য গোর্খা সম্প্রদায় বা জিটিএ এলাকায় যে কোনও পদক্ষেপ রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা করে নেওয়া উচিত বলে উল্লেখ করেন মমতা। এই ধরনের সংবেদনশীল বিষয়ে একতরফা সিদ্ধান্ত সংশ্লিষ্ট এলাকার শান্তি ও সম্প্রীতির পক্ষে ঠিক নয় বলেও উল্লেখ করেছেন মমতা।

    এই বিষয়গুলি মাথায় রেখে রাজ্যের সঙ্গে পূর্ব আলোচনা ছাড়াই প্রাক্তন আইপিএস পঙ্কজ কুমার সিংকে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে নিয়োগের সিদ্ধান্তটি পুনরায় বিবেচনা করা এবং প্রত্যাহার করার আবেদন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য এবং কেন্দ্রের মধ্যে পারস্পরিক সম্মানের প্রসঙ্গও উল্লেখ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

    উল্লেখ্য, পাহাড়ের রাজনৈতিক সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য দীর্ঘদিন ধরেই দাবি করে আসছিল গোর্খাদের বিভিন্ন সংগঠন। তাদের দাবিগুলির মধ্যে রয়েছে দার্জিলিং, কালিম্পং, তরাই-ডুয়ার্সের একাংশকে নিয়ে আলাদা গোর্খাল্যান্ড রাজ্য গঠনের বিষয়টিও। পাশাপাশি, পাহাড়ের ১১টি জনজাতিকে তফশিলি উপজাতির আওয়ায় আনার দাবিও করা হয়েছে। ২০২৬ সালে বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে এই দাবিগুলি নিয়ে আলোচনার জন্য প্রাক্তন আইপিএস অফিসার পঙ্কজ কুমার সিংয়ে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে নিয়োগ করার বিষয়টি যে অত্যন্ত বার্তাবহ, তা মনে করছিল রাজনৈতিক মহল।

  • Link to this news (এই সময়)