সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গুজরাট। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর নিজের রাজ্য। বিজেপির রাজনৈতিক ল্যাবরেটারি। হিন্দুত্বের রাজনীতির আঁতুড়ঘর। সাংগঠনিকভাবেও দেশের মধ্যে মোদিরাজ্যেই সবচেয়ে শক্তিশালী বিজেপি। এ হেন রাজ্যে রাতারাতি মন্ত্রিসভার সব সদস্যকে সরিয়ে দেওয়া এবং বদলে আগের চেয়ে বড় মন্ত্রিসভা গঠন। কেন এত হারাকিরি করল বিজেপি?
এর নেপথ্যে কারণ একাধিক। ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে, টানা দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকায় প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা তৈরি হওয়ার আশঙ্কা ছিল। তাছাড়া দীর্ঘদিন মন্ত্রিসভায় থাকার ফলে সিনিয়র মন্ত্রীদের পরিশ্রমে অনীহা, গয়ংগচ্ছ মানসিকতা তৈরি হওয়ার আশঙ্কা ছিল। তাছাড়া একেকে জন মন্ত্রীর কাঁধে একাধিক দপ্তরের দায়িত্ব ছিল। সেটাও ভাবাচ্ছিল কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে। সেসব সমস্যা মেটাতে ভোটের বছর দুয়েক আগে একটা ঝাঁকুনি দরকার ছিল মন্ত্রিসভায়। অন্তত গেরুয়া শিবিরের শীর্ষ নেতৃত্ব তেমনটাই মনে করছিল। এই কারণগুলি মোটামুটি সকলের জানা। কিন্তু এর বাইরেও একাধিক বড় কারণ আছে।
শোনা যাচ্ছে, রাজ্যে আপের উত্থানে বিজেপি খানিক চিন্তিত। আপের সিনিয়র নেতা গোপাল ইটালিয়া সদ্য উপনির্বাচনে জিতে বিধানসভায় ঢুকেছেন। তিনিই আবার রাজ্যের কৃষকদের নিয়ে রীতিমতো আগ্রাসী আন্দোলন শুরু করেছেন। সেই আন্দোলনে বেশ ভালো সাড়াও পেয়েছেন। গুজরাটের কৃষকদের একটা বড় অংশ পাটিদার। আবার গত লোকসভা নির্বাচনে গুজরাটের বংশকাঁটা আসনটিতে জয় পেয়েছিল কংগ্রেস। ওই কেন্দ্রটি মূলত দলিত ও আদিবাসী অধ্যুষিত। তাছাড়া অন্য আদিবাসী এলাকাগুলিতেও তুলনায় খারাপ ফল করেছে বিজেপি। তাই আদিবাসীদের ক্ষোভেরও একটা জায়গা ছিল। মন্ত্রিসভায় রদবদল করে সেই সব ক্ষোভ প্রশমনের চেষ্টা করা হল।
২৫ সদস্যের মধ্যে ৮ জন ওবিসি, ৬ জন পাটিদার, ৪ জন আদিবাসী, ৩ জন তফশিলি জাতি, ২ জন ক্ষত্রিয় এবং ১ জন ব্রাহ্মণ ও ১ জন জৈন সম্প্রদায়ভুক্ত। এই মন্ত্রিসভা পরিবর্তন গুজরাতে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরের পর সবচেয়ে বড় রদবদল। এতেই স্পষ্ট পাটিদার কৃষক, দলিত এবং আদিবাসীদের বাড়তি নজর দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া ওবিসিরা গুজরাট বিজেপির পুরনো ভোটব্যাঙ্ক। তাই তাঁদেরও মন রাখার চেষ্টা হয়েছে।