সংবাদদাতা, ঝাড়গ্রাম: ঝাড়গ্রামের সাপধরার হরিণা গ্রামে সোরেন পরিবারের কালীপুজো ৭২বছরেরও বেশি পুরনো। এখানে কালী কন্যারূপে পূজিতা হন। রাজ্যের বিভিন্ন এলাকার পাশাপাশি ভিনরাজ্য থেকেও ভক্তরা এই পুজোয় আসেন।
পরিবারের সদস্যরা জানান, বহুবছর আগে পূর্বের সমতল এলাকায় চাষের কাজে গিয়েছিলেন এই গ্রামের দিনমজুর ধর্মদাস সোরেন। তাঁর কর্মস্থলের সামনেই শ্মশানের মন্দিরে সাধুরা থাকতেন। তিনি লোকমুখে শুনেছিলেন, ওই মন্দিরের শ্মশানের সামনে একটি চিমটে পোঁতা রয়েছে। সেটি কেউ উদ্ধার করতে পারলে দৈবশক্তির অধিকারী হবে। সোরেন পরিবারের দাবি, ধর্মদাস সেই চিমটে উদ্ধার করে দৈবশক্তি পান। পরে বাড়ি ফিরে এসে কালীমন্দির প্রতিষ্ঠা করেন।
স্থানীয়দের কাছে ‘কুটু যান’ বা ‘সাধু যান’ নামে পরিচিত ছিলেন ধর্মদাস সোরেন। তাঁর মৃত্যুর পর ছেলে ও বউমারা এই পুজো চালিয়ে আসছেন। ধর্মদাস সোরেনের ছেলে পেশায় স্কুলশিক্ষক রাজকুমার সোরেন বলেন, মা কালী আমাদের কুলদেবী। বাবার হাত ধরেই এখানে কন্যারূপে তাঁকে পুজো করা হয়। সেসময়ই মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কোনও ঝাঁড়ফুক বা তুকতাক নয়, মানুষ যাতে জীবনে সঠিক পথে চলতে পারেন, সেই জন্য শুভশক্তির আরাধনা হয়। বাবা গরিব দিনমজুর ছিলেন। তিনি বলেছিলেন, প্রথম দিন চিমটে উদ্ধারের সময় তাতে আগুন জ্বলে উঠেছিল। পরদিন সেটি উদ্ধার করেন। বাড়ি ফেরার পর কিছু অলৌকিক ঘটনা ঘটেছিল। সেই থেকে পুজো শুরু হয়। ওই চিমটে আমার কাছেই আছে। আমি ও আমার স্ত্রী, দাদা-বউদি পালা করে পুজো আয়োজন করি। এবার কুম্ভমেলায় গিয়ে জুনা আখড়ার নাগা সাধুদের সঙ্গে আলাপ হয়েছিল। তাঁরা আমাদের কালীমন্দির দর্শনে এসেছিলেন। বাড়ির কাছে বাবার স্মৃতিতে একটি সেবাশ্রম তৈরি করা হচ্ছে। এলাকার দুঃস্থ ছেলেমেয়েদের সেখানে বিনামূল্যে শিক্ষা, খাবার ও চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হবে।