বধূর অস্বাভাবিক মৃত্যু গুজরাতে নাবালক ছেলেকে দিয়ে দেহ পাঠানো হল কাটোয়ায়
বর্তমান | ১৯ অক্টোবর ২০২৫
সংবাদদাতা, কাটোয়া: গুজরাতের সুরাতে কাটোয়ার এক গৃহবধূর মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। শনিবার সকালে বধূর মৃতদেহ একটি গাড়িতে করে তাঁর নাবালক ছেলেকে দিয়ে কাটোয়ায় বাপেরবাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম রুকসোনা বেগম(৩০)। পরিবারের লোকজন পুনরায় ময়নাতদন্ত করার জন্য মৃতদেহ কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান। মৃতার পরিবারের দাবি, মৃত্যুর কারণ সঠিকভাবে তদন্ত করুক পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার বাড়ি ভাতারের নিত্যানন্দপুর ডাঙাপাড়ায়। তিনদিন আগে ওই বধূর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ১৫বছর আগে কাটোয়ার গাঙ্গুলিডাঙার রুকসোনার সঙ্গে নিত্যানন্দপুরের যুবক মফিজুল শেখের বিয়ে হয়। তাদের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। ছেলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েকে নিয়ে মফিজুল গুজরাতের সুরাতে থাকত। সেখানে এমব্রয়ডারির কাজ করত। বিয়ের পর সেখানে একটি কারখানাও খুলেছিল। ওই কারখানায় কয়েকজন কারিগর কাজ করেন। এদিন সকালে আচমকা একটি গাড়িতে রুকসোনার মৃতদেহ নিয়ে কাটোয়ার গাঙ্গুলিডাঙা গ্রামে মৃতার বাপেরবাড়িতে আসে নাবালক ছেলে। মফিজুল গুজরাত থেকে স্ত্রীর মৃতদেহ নিয়ে ভাতারের নিত্যানন্দপুর পর্যন্ত আসেন। সেখানে গাড়ি থেকে মফিজুল নেমে যান। বাপেরবাড়িতে জানানো হয়েছে, রুকসোনা স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া করে তিনদিন আগে সেখানে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। সেখানকার হাসপাতালে রুকসোনার মৃতদেহ ময়নাতদন্তও করা হয়েছে। কিন্তু মৃতার বাপের বাড়িতে এতদিন সেসব কিছুই জানানো হয়নি।
বধূর মা নুরজাহান শেখ বলেন, পুলিশ তদন্ত করে মৃত্যুর সঠিক কারণ খুঁজে বের করুক। বিয়ের পর থেকে আমার উপরও শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করত জামাই। সুরাতে কারখানা করবে বলে আমার কাছ থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা নিয়েছিল জামাই। প্রায়ই মেয়েকে মারধর করত। কাটোয়া থানার পুলিশ জানিয়েছে, এখনও কোনও লিখিত অভিযোগ হয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে দেখা হবে।
এদিন মৃতের পরিবারের লোকজন কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে পুনরায় ময়নাতদন্তের দাবি জানান। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নতুন করে ময়নাতদন্ত করা হয়নি। বধূর নাবালক ছেলে জানায়, বাবা মাকে খুব মারত। মা কাঁদত। মায়ের কি যে হল কিছুই বুঝতে পারছি না।