• বৃন্দাবনের চন্দ্রোদয় মন্দির-লজ্জিত গিরগিটি-দাবা-লুডো দক্ষিণ দমদমে জমে উঠেছে থিমযুদ্ধ
    বর্তমান | ১৯ অক্টোবর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বরানগর: বৃন্দাবনের ১১০ ফুটের চন্দ্রোদয় মন্দির থেকে শুরু করে সাপ লুডো ও দাবা। প্রতিনিয়ত রং বদলানো মানুষকে দেখে লজ্জা পাওয়া গিরগিটিও চাইছে মুখোশ পরতে। দক্ষিণ ভারতের রাধাকৃষ্ণ মন্দিরের মতো থিম। সবমিলিয়ে জমজমাট দক্ষিণ দমদমের কালীপুজো। এছাড়াও আছে অন্ধকার দূর করে অন্তরের আলো জ্বালানোর বার্তা বোধিসত্ত্ব। মণ্ডপের পাশাপাশি প্রতিমা ও বাহারি আলোতেও চমক।

    প্রাইভেট রোডের লক্ষ্মীনগর সর্বজনীন শ্যামাপুজো কমিটির থিম, বৃন্দাবনের চন্দ্রোদয় মন্দির। ১১০ ফুট লম্বা। যা ইতিমধ্যে চমক তৈরি করেছে শহরে। এছাড়া দমদম রোড থেকে পুজো মণ্ডপ পর্যন্ত বাহারি আলো নজর কাড়ছে। পুজো কমিটির প্রধান পৃষ্ঠপোষক সুরজিৎ রায়চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের মণ্ডপ দর্শনার্থীদের নজর কাড়বে।’ দমদম রোডে হনুমান মন্দিরের পাশে জপুর জয়শ্রীর কালীপুজো এবার ৫৭ বছরে পা দিয়েছে। থিম, বোধিসত্ত্ব। শান্তির বার্তা ফুটে উঠেছে মণ্ডপের ছত্রেছত্রে। সামনে রয়েছে ধ্যানস্থ বুদ্ধের ছবি। মনের অন্ধকার দূর করে চেতনার আলোয় আলোকিত হওয়ার বার্তা দেওয়া হয়েছে। পুজোর প্রধান উপদেষ্টা সঞ্জয় দাস বলেন, ‘মনের জড়তা ও অন্ধকার দূর করে জ্ঞানের আলো, চেতনা ও শান্তির বার্তা দিতেই আমাদের থিম।’

    মধুগড় মিলচক্র পরিচালিত শ্যামাপুজো ৪৩ বছরে পা দিয়েছে। থিম, মুখোশের আড়ালে। কয়েক হাজার মুখোশ দিয়ে তৈরি হচ্ছে মণ্ডপ। সামনে থাকছে জোকারের মূর্তি। মণ্ডপের মধ্যে থাকছে সদা রং পরিবর্তনকারী বিশালাকার গিরগিটি। প্রতিমা থিমের সাজে সেজে। দু’পাশে গিরগিটিরূপী মানুষ। পুজো কমিটির অন্যতম উদ্যোক্তা গোপাল ঘোষ বলেন, ‘সমাজের সিংহভাগ মানুষ মুখোশের আড়ালে রয়েছে। আসল রূপ চেনা কঠিন। প্রয়োজন ও সুযোগ বুঝে তারা মুখোশও পরিবর্তনও করছে। যা দেখে এখন গিরগিটিও লজ্জা পায়। আমরা আসলে জোকারের অভিনয় করছি। স্বার্থহীন সমাজ গড়ার বার্তা দিতেই আমাদের এই থিম।’

    খামখেয়ালি সংঘ পরিচালিত সর্বজনীন দুর্গোৎসব এবার ৫৮ বছরে পা দিয়েছে। তাদের থিম সাপ-লুডো ও দাবা। চট দিয়ে তৈরি হচ্ছে মণ্ডপ। মডেল ও কারুকাজ হচ্ছে পাট দিয়ে। মণ্ডপের সামনে থাকবে দাবা বোর্ডের বড় বড় ঘুটি। ফুটে উঠবে জীবনযুদ্ধে প্রতিদিনের লড়াইয়ের ছবি। মণ্ডপের অভ্যন্তর সাজবে সাপ, লুডোর বোর্ড ও ঘুটি দিয়ে। ঠাকুরের সাবেকি সাজ। পুজো কমিটির সহ সভাপতি তরুণ ঘোষ বলেন, ‘প্রতিদিনের জীবনযুদ্ধ ও তার উত্থানপতন সাপ-লুডো ও দাবা খেলার মতোই। তা মণ্ডপে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।’ 

    বন্ধুবান্ধব ক্লাবের শ্যামাপুজো ৬০ বছরে পা দিয়েছে। তাদের থিম দক্ষিণ ভারতের রাধাকৃষ্ণ মন্দির। নয়নাভিরাম মন্দিরের পাশাপাশি মূর্তি থাকছে থিমের সাজে সেজে। এখানে দুর্গার পাশাপাশি কালীও থাকবেন। আবার শিব বসবেন একপাশে। অন্যপাশে থাকবে শিবলিঙ্গ। মা আসবেন শান্তির বার্তা নিয়ে। পুজো কমিটির প্রধান পৃষ্ঠপোষক সঞ্জয় সাহা বলেন, ‘যিনি দুর্গা তিনিই কালী। আমরা মায়ের সেই রূপ একসঙ্গে ধরার পাশাপাশি সারা পৃথিবীকে শান্তির বার্তা দিতে চেয়েছি।’
  • Link to this news (বর্তমান)