বিসর্জনের আগে মনসা পুজো ও ছাগবলি, ৩০০ বছরের প্রথা মাকড়দহের মুখোপাধ্যায়দের
বর্তমান | ১৯ অক্টোবর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া: বাঁশের খুঁটিতে নারকেল পাতা জড়িয়ে নতুন শাড়ি দিয়ে ঢেকে তৈরি করা হত মণ্ডপ। সেখানে তন্ত্রমতে পুজো করা হত দক্ষিণাকালীকে। বর্তমানে দেবীর পুজো হয় বাড়ির মন্দিরে। বিসর্জনের আগে হয় মনসার পুজো। দিতে হয় ছাগবলি। তিন শতাব্দী ধরে প্রথা বজায় রেখেছে ডোমজুড় মাকড়দহের মুখোপাধ্যায় পরিবার। মাকড়দহের ব্যানার্জি পাড়ার মুখোপাধ্যায় বাড়ির কালীপুজো প্রায় ৩০০ বছরের পুরনো। বাড়ির পূর্বপুরুষ মতিলাল মুখোপাধ্যায় জমিদারি সূত্রে আমতার ঝিখিরা থেকে চলে এসেছিলেন এখানে। ঝিখিরার বাড়ি থেকে নিয়ে আসা ইট মাকড়দহের বাড়িতে বেদী হিসেবে স্থাপন করে শুরু করেছিলেন কালীপুজো। সে সময় বাঁশের খুঁটিতে নারকেল পাতা জড়িয়ে তৈরি করা হত মণ্ডপ। শামিয়ানা বানানো হত নতুন সুতির শাড়ি দিয়ে। কালীপুজোর রাতে ছাগবলির পাশাপাশি বিসর্জনের সময়ও বলি হত বাড়িতে। কয়েকবছর আগে বাড়িতে তৈরি হয়েছে স্থায়ী মন্দির। সেখানে এখন পুজোর আয়োজন হচ্ছে। নিয়ম নিষ্ঠায় এতটুকুও খামতি হয় না বলে দাবি মুখোপাধ্যায় পরিবারের। মেদিনীপুর থেকে বংশানুক্রমে পুরোহিত এসে পুজো করেন এই বাড়িতে। প্রথমে লক্ষ্মীকে ভোগ নিবেদন করে পুজো সম্পন্ন করা হয়। এরপর কালীমূর্তি স্থাপন হয়। পরিবারের সদস্যরা খিচুড়ি, পায়েস, তরকারি, নানারকম ভাজা করেন। বাড়ির চতুর্থ প্রজন্মের সদস্য তপনকুমার মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘দেবীর ভোগ গ্রামবাসীদের মধ্যে বিতরণ করা হয়। পুজোর পরদিন নরনারায়ণ সেবা হয়। জমিদারিত্ব আর নেই। এখন পরিবারের সবাই মিলেই পুজোর ব্যয়ভার বহন করে।’ মুখোপাধ্যায় বাড়ির কালীপুজোর বিসর্জনেও রয়েছে বিশেষ নিয়ম। পুজোর পরদিন দেবীকে শোভাযাত্রা করে নিয়ে যেতে হয় মনসাতলায়। সেখানে প্রথমে মনসার পুজো হয়। এরপর ছাগবলি। নিজস্ব চিত্র