সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সীমান্তে সবসময় অনুপ্রবেশ রুখে দেওয়া সম্ভব হয় না। স্পষ্ট ভাষায় নিজের মন্ত্রক এবং সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ‘ব্যর্থতা’ মেনে নিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তাঁর দাবি, সীমান্তের পরিস্থিতি সহজ নয়। বহু রকম প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হয়। অনুপ্রবেশের কথা স্বীকার করলেও সেটাকে ব্যর্থতা হিসাবে দেখতে নারাজ শাহ। উলটে তিনি তোপ দাগছেন বাংলা তথা ঝাড়খণ্ডের সরকারকে।
বঙ্গে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ এবং জনবিন্যাস বদল নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সরব বিজেপি। কিন্তু এ ইস্যুতে রাজ্যের শাসকদলকে কাঠগড়ায় তুলতে গেলেই পালটা প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রককে। তৃণমূল প্রশ্ন তোলে, সীমান্ত রক্ষা তো বিএসএফের এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের দায়িত্ব। তাহলে অনুপ্রবেশের দায় কেন রাজ্য সরকারে উপর চাপানো হয়?
শনিবার এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন শাহ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য, “সীমান্ত এলাকাটা সহজ জায়গা নয়। প্রচুর নদীনালা থাকে, বনজঙ্গল থাকে, পাহাড় থাকে। সেখানে সবসময় ফেন্সিং লাগানোও সম্ভব হয় না। ২৪ ঘণ্টা নজরদারিও সম্ভব নয়। অনেক সময় চেক পোস্ট তৈরি করলেও সেটা ভেসে যায়। যারা বাংলাদেশ বা পাকিস্তান সিমান্তে গিয়েছেন, তাঁরা জানেন। লুটিয়েন্স দিল্লিতে বসে প্রশ্ন তোলা সহজ।” এরপরই পালটা রাজ্য সরকারগুলির উপর দায় ঠেলেছেন শাহ। তাঁর দাবি, “রাজস্থান, গুজরাট, অসমে আমাদের সরকার সেখানে অনুপ্রবেশ হয় না। কিন্তু বাংলা, ঝাড়খণ্ডে অন্য দলের সরকার সেখানেই কেন অনুপ্রবেশ? কারণ তৃণমূলের মতো দল ভোটব্যাঙ্কের জন্য অনুপ্রবেশকারীদের আশ্রয় দেয়। রেড কার্পেট বিছিয়ে তাঁদের স্বাগত জানানো হয়।”
শাহের প্রশ্ন, “অনুপ্রবেশের পর অনুপ্রবেশকারীরা যেখানে থাকার জন্য যাচ্ছেন, সেখানে কেন নজরদারি চালানো হয় না? একটা গ্রামে নতুন কেউ এলে কেন স্থানীয় প্রশাসন জানবে না?” শাহের হুঙ্কার, ২০২৬-এ বাংলায় মমতার সরকারকে উৎখাত করতে পারলে অনুপ্রবেশও বন্ধ হবে। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কি ঘুরিয়ে নিজের মন্ত্রকের ব্যর্থতাই মেনে নিলেন না? স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক কি স্রেফ রাজ্যের ঘাড়ে দায় চাপিয়ে নিজের ব্যর্থতা আড়াল করতে পারে? তাছাড়া বিজেপি শাসিত ত্রিপুরা, অসমেও কিন্তু অনুপ্রবেশ বড় সমস্যা। খোদ অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা একাধিকবার রাজ্যের জনবিন্যাস বদল নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।