নকিব উদ্দিন গাজী: পুজো উদ্বোধন করতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। রবিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়দিঘির সাতঘরা এলাকায় কালী পুজোর উদ্বোধন ও রক্তদান শিবিরে আসার পথে বিক্ষোভের মুখে পড়লেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। মথুরাপুর থানার দক্ষিণ বিষ্ণুপুর মোড়ে বিক্ষোভের সম্মুখীন হন। পরে তিনি সাতঘরা এলাকার কালীপুজোর উদ্বোধনে চলে যান।
এনিয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, আমি কোন দলীয় কর্মসূচিতে আসেনি। ধর্ম পালন করতে এসেছি। তাতেই এই বাধা। তাহলে ভাবুন আপনারা কেমন আছেন। জগদ্ধাত্রী পুজোর পর আমি আবার আসবো দলীয় কর্মসূচি নিয়ে। গাড়ির উপরে প্রাণঘাতী হামলা হয়েছে। আমি রাজনৈতিক কর্মীসূচিতে আসিনি। ধর্ম পালন করতে এসেছিলাম। হিন্দুরা পশ্চিমবঙ্গে ধর্ম পালন করতে পারবে না? করুন, যত পারেন করুন। এর শেষ আছে।
সাতঘরা থেকে পাথরপ্রতিমার উদ্দেশ্যে বের হন শুভেন্দু অধিকারী। পাথরপ্রতিমার উদ্দেশ্যে বের হওয়ার পরই খোটির বাজার এলাকায় বিক্ষোভের সম্মুখীন হন শুভেন্দু। যদিও পুলিস ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা নিরাপদেই তার কনভয় বের করে দেন।
বিক্ষোভকারীরা জানান, ভিন রাজ্যে যেভাবে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকরা আক্রান্ত হচ্ছে এবং কেন্দ্রীয় বঞ্চনার প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ কর্মসূচি। যেখানে বিজেপির শাসন রয়েছে সেখানে সব সুযোগ সুবিধে রয়েছে, আমরা বাংলা কেন বঞ্চিত। আমরা জব কার্ড নিয়ে এসে ওঁর কাছে জানতে চেয়েছিলাম। আমাদের হাতে জব কার্ড আর প্লাকার্ড ছিল। হামলা কীভাবে করব! ওঁকে সম্মান জানিয়ে আবেদন করেছি, একশো দিনের টাকা দেওয়া হোক।
ওই ঘটনা নিয়ে এক্স হ্যান্ডেলে প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও রাজ্যপালের দৃষ্টি আকর্ষণ করে শুভেন্দু অধিকারী লিখেছেন, পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলায় আজ আমি বেআইনি বাংলাদেশি মুসলমানদের দ্বারা বারবার আক্রমণের শিকার হলাম। এই বাধা, ভাঙচুর এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার পেছনে ছিলেন আর কেউ নন, তৃণমূলের জেলা পরিষদ সদস্য রেখা গাজি, যাঁকে সাহায্য ও সমর্থন করেছেন এসপি কোটেশ্বর রাও। আমার গাড়ি আটকানোর অন্তত সাতটি জায়গায় চেষ্টা করা হয়েছিল, এবং লালপুর মাদ্রাসার ঠিক সামনে একটি আক্রমণ হয়।
আমি কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যাচ্ছিলাম না, বরং একজন হিন্দু হিসেবে কালীপূজা ও দীপাবলির উৎসবে যোগ দিতে যাচ্ছিলাম। আসলে, এই লোকগুলি, যারা মূলত বেআইনি অনুপ্রবেশকারী, তারা SIR প্রক্রিয়ার কারণে তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত এবং সেই ক্ষোভ থেকেই তারা এমন আচরণ করছে। এই অঞ্চলটি বাংলাদেশের লাগোয়া এবং এই নৈকট্য অনুপ্রবেশকারী-বান্ধব টিএমসি (TMC) ব্যবস্থার সাহায্যে তাদের এখানে থিতু হতে দিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে কি একজন হিন্দু কোনো ধর্মীয় অনুষ্ঠানে স্বাধীনভাবে, কোনো মৌলবাদীর বাধা ছাড়াই অংশ নিতে পারে না? তারা আমাকে ভয় দেখাতে পারবে না, জগদ্ধাত্রী পুজোর সময়ও আমি ফিরে আসব।