• দরজার বন্ধ করে টাকা ভাগাভাগি বিধায়ক-সহ ৩ নেতার! ভাইরাল ভিডিও নিয়ে কী বলছে তৃণমূল?
    প্রতিদিন | ১৯ অক্টোবর ২০২৫
  • সৌরভ মাজি, বর্ধমান: বন্ধ দরজার আড়ালে তৃণমূল বিধায়কের টাকা ভাগাভাগির ভিডিও ভাইরাল! আর তা নিয়ে নতুন করে তোলপাড় পড়ে গিয়েছে বর্ধমানের রাজনৈতিক মহল। ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, ব্যাগে করে টাকা ভরে এনেছেন পূর্ব বর্ধমানের গলসি ১ পঞ্চায়েত সমিতির সহকারী-সভাপতি অনুপ চট্টোপাধ্যায়। টেবিলে নামিয়ে থোকা থোকা টাকার গোছা তিনজনের মধ্যে ভাগ-বাটোয়ারা করছে। অনুপবাবু বাদে টাকার ভাগিদার বাকি দু’জন পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ পার্থ মণ্ডল ও বিধায়ক নেপাল ঘোড়ুই। কিন্তু কোথা থেকে এল এত কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা? তার কোনও জবাব নেই। যদিও ভাইরাল ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি ‘সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল’। এনিয়ে পার্থ মণ্ডলের বক্তব্য, তা ২ বছর আগেকার। লোকসভা নির্বাচনের সময়ে রাজনৈতিক কর্মসূচির জন্য ওই টাকা বিলি করা হচ্ছিল এবং ডায়েরিতে তার হিসেব রাখা হয়। এনিয়ে যথারীতি শাসকদলের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন বিরোধীরা।

    ভাইরাল ভিডিওতে ঠিক কী দেখা গিয়েছে? একটি বন্ধ ঘরে বিধায়ক নেপাল ঘোড়ুইয়ের সঙ্গে সিগারেটে টান দিতে দিতে ডায়েরিতে কিছু একটা লিখছেন গলসি ১ পঞ্চায়েত সমিতির সহকারী সভাপতি অনুপ চট্টোপাধ্যায়। বিধায়কের সামনে বাণ্ডিলে লক্ষাধিক টাকা। তবে কি ভাগ-বাটোয়ারার হিসাব লিখছিলেন অনুপ? প্রশ্ন আছে আরও। ওই থোকা থোকা টাকা কিসের? তা কোথা থেকেই বা এল তৃণমূল নেতাদের কাছে? কীসের উদ্দেশে তা তিনজনের মধ্যে ভাগাভাগি হচ্ছে? বর্তমানে গলসি ১ পঞ্চায়েত সমিতির সর্বেসর্বা অনুপ চট্টোপাধ্যায়। ভোটাভুটি করে তাঁকে দ্বিতীয়বার সমিতির সহকারীর চেয়ারে বসিয়েছেন কৃষি কর্মাধ্যক্ষ পার্থ মণ্ডলই। তিনি আবার বিধায়ক নেপাল ঘোড়ুইয়ের ছায়াসঙ্গী। সমিতির সবটাই নিয়ন্ত্রণ করেন অনুপ ও পার্থ।

    বছর দুইয়েক আগে বিনা টেন্ডার, এমনকী কোনও কাজ না করেই মিড ডে মিলের রান্নাঘর সংস্কারের ১৩,৭১,৯০৫ টাকা পেয়ে গিয়েছিলেন অনুপ চট্টোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ এক ঠিকাদার। দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে সংবাদমাধ্যমে খবর হওয়ার পরই তড়িঘড়ি রান্নাঘর মেরামতির কাজ শুরু করেছিলেন তৎকালীন বিডিও দেবলীনা দাস।

    রবিবার ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি নিয়ে পার্থ মণ্ডল দাবি করেন, ”এটি দুই বছর আগেকার। গত লোকসভা ভোটের আগে নির্বাচনী খরচের জন্য ওই টাকা দলের তরফে পাওয়া গিয়েছিল। রাজনৈতিক কর্মসূচি করার জন্য টাকা বণ্টন করা হচ্ছিল। একটা ডায়েরিতে তা নোট করেও রাখা হচ্ছিল। আর সিসি ক্যামেরার আওতায় ছিল ঘরটি। তাই ওই ভিডিও কেউ শত্রুতা করে এভাবে ছড়িয়ে দিয়েছে। লোকসভা ভোটের সময়ও দলের উচ্চ নেতৃত্বের কাছে ওই ভিডিও পাঠানো হয়েছিল। দলীয় নেতৃত্বের কাছে আমি ও বিধায়ক গিয়ে এই বিষয়ে কথা বলে পুরো ঘটনাটা জানিয়েওছিলাম সেই সময়।”

    গলসির বিধায়ক নেপাল ঘোড়ুই ও গলসি-১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি অনুপ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা যায়নি। বিজেপি নেতা রমন সিং বলেন, “তৃণমূল মানেই দুর্নীতি আর কাটমানি। অনুপ্রেরণার ফল এই ভিডিওতে প্রকাশ পাচ্ছে। কাটমানির টাকা ভাগ-বাটোয়ারা করছে বিধায়ক ও নেতারা।”
  • Link to this news (প্রতিদিন)