বেওয়ারিশ লাশ জমতে জমতে পাহাড় হওয়ার জোগাড়। মালদহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সংক্রমণের আশঙ্কায় তটস্থ বাসিন্দারাও। সমস্যা কয়েকগুণ বেড়েছে একাধিক ফ্রিজার অকেজো হয়ে যাওয়ায়। এই সঙ্কট থেকে পরিত্রাণ পেতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেছে প্রশাসনের সঙ্গে।
মালদহ মেডিকেলের রোগীকল্যাণ সমিতির সদস্য তথা ইংলিশবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। ইতিমধ্যে প্রশাসনিক স্তরে বিস্তারিত আলোচনা করার পর মহকুমা শাসককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনিই মৃতদেহগুলি সৎকারের ব্যবস্থা করবেন। এই কাজ করতে পুরসভা তাঁকে সবরকম সহযোগিতা করবে। মেডিকেল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতদেহ রাখার জন্য মর্গে ছ’টি ফ্রিজার আছে। এক একটিতে ছ’টি করে মৃতদেহ রাখা যায়। অর্থাৎ, মোট ৩৬টি মৃতদেহ একসঙ্গে রাখা সম্ভব। কিন্তু বর্তমানে তার চেয়ে বেশি মৃতদেহ রয়েছে মর্গে। যার অধিকাংশই বেওয়ারিশ। কিছু দেহ আবার পরিজনরা নিতে আসেননি। তাই নির্দিষ্ট সরকারি নিয়ম মেনেই মৃতদেহগুলি প্রশাসনের তরফে সৎকার করতে হবে। এই প্রক্রিয়া শেষ করতে বেশ কিছুটা সময় লেগে যায় বলেই একের পর এক জমতে থাকছে মৃতদেহ। মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এমএসভিপি প্রসেনজিৎ বর বলেন, বর্তমানে মর্গে ৩৬টির বেশি মৃতদেহ জমে আছে। যদিও মেডিকেলের বেশকিছু সূত্রে জানা গিয়েছে, সংখ্যাটা চল্লিশেরও বেশি। ফলে চিন্তা বাড়ছে কর্তৃপক্ষের।
মেডিকেল সূত্রে খবর, এই মৃতদেহগুলি পুজোর সময় থেকে মর্গে জমতে শুরু করেছে। কোনওটির পরিচয় জানা যায়নি। আবার পরিবারের তরফেও কেউ নিতে আসেননি। এদিকে টানা সরকারি অফিস ছুটির থাকার ফলে বেওয়ারিশ লাশ সৎকারের প্রক্রিয়া শুরু করতেও কিছুটা সময় নষ্ট হয়েছে। মুলত মর্গে মৃতদেহের সংখ্যা অনেক বেশি। দ্বিতীয়ত, দেহ রাখার ছ’টি ফ্রিজারের কয়েকটি কিছুদিন খারাপ হয়ে থাকার জন্য পরিস্থিতি আয়ত্বের বাইরে যেতে বসেছে।
এমএসভিপি আরও জানান, ছ’টি ফ্রিজার টানা ২৪ ঘণ্টা ধরে চলছে। স্বাভাবিকভাবে সেগুলি বিভিন্ন সময়ে খারাপ হয়ে যাচ্ছে। মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের কাছে এখন সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ দুটি। এক, নিয়ম মেনে যত দ্রুত সম্ভব মর্গে জমে থাকা বেওয়ারিশ মৃতদেহ সৎকারের ব্যবস্থা করতে হবে। দ্বিতীয়ত, মর্গে জমে থাকা মৃতদেহগুলি থেকে সংক্রমণ যাতে ছড়িয়ে না যায়, সেটা রোধ করা। সেটা হলে, স্থানীয়রাও দুর্গন্ধ থেকে রেহাই পাবেন।