নিজস্ব প্রতিনিধি, রায়গঞ্জ: কথিত আছে, শেয়ালের ডাক না শোনা পর্যন্ত কালীমায়ের পুজো শুরু করেন না পূজারী। সেই চিরাচরিত প্রথা মেনে এখনও কালী মায়ের পুজো হয়ে আসছে রায়গঞ্জ শহরের বন্দর আদি করুণাময়ী কালীবাড়িতে। পঞ্চমুণ্ডের আসনে কষ্টি পাথরের তৈরি কালী মা তন্ত্রমতে পূজিতা হন এখানে। এই কালীর পুজো আজও করে আসছেন সাধক বামাখ্যাপার বংশধরেরা। যেখানে শুধু রায়গঞ্জ নয়, ভিনরাজ্য থেকেও ভক্তরা কালীপুজোর রাতে ছুটে আসেন। মন্দিরে ভিড় উপচে পড়ে ভক্তের।
ঐতিহ্যবাহী এই কালীমন্দির পরিচালনা কমিটির অন্যতম সদস্য রূপেশ সাহা বলেন, মন্দির প্রতিষ্ঠার দিনক্ষণ নির্দিষ্টভাবে কিছু জানা নেই। আনুমানিক ৫০০ বছর পুরনো এই মন্দির। তবে মা কালীর মূর্তি প্রতিষ্ঠা হয়েছে ২১৬ বছর আগে। মায়ের কষ্টি পাথরের মূর্তি এসেছিল রাজস্থান থেকে। তারাপীঠে যে নিয়মে পুজো হয়, সেই নিয়মানুসারেই এখানেও পুজো হয়। পূর্বপুরুষদের থেকে শোনা, বামাখ্যাপার বংশধরেরা এই মন্দিরে দীর্ঘ বছর ধরে পুজো করে আসছেন। এবারও তারাপীঠ থেকে পুরোহিত রাজকুমার চট্টোপাধ্যায় আসছেন পুজো করতে।
প্রচলিত আছে, প্রায় পাঁচশো বছর আগে পাঞ্জাব প্রদেশের এক সাধু হেঁটে এসে উপস্থিত হন রায়গঞ্জের কুলিক নদীর বন্দর ঘাটে। ঘাটের কাছেই একটি বটগাছের তলায় বসে সাধনা করে সিদ্ধিলাভ করেন।
তারপরই পঞ্চমুণ্ডের আসন প্রতিষ্ঠা করেন। সেই থেকে এখানে শুরু হয় মা কালীর আরাধনা। সেই বেদিতেই পুজোর প্রচলন হয়। এরপর তৎকালীন দিনাজপুরের রাজা স্বপ্নাদেশ পেয়ে এই স্থানে কালী মন্দির নির্মাণ করেন। সেই থেকেই চলছে পূজার্চনা।
স্থানীয়দের বক্তব্য, এই মন্দিরে কালীপুজোর রাতে আজও দেবীর পায়ের নূপুরের ধ্বনি শোনা যায়। তন্ত্রমতে এখানে দেবী পূজিতা হন। শোল, বোয়াল মাছ ভোগ দেওয়ার পাশাপাশি ছাগ বলিরও প্রচলন রয়েছে।