• উত্তরবঙ্গে বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ১৭৩টি হাই ও প্রাথমিক স্কুল, রিপোর্ট প্রশাসনের
    বর্তমান | ২০ অক্টোবর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: ভয়বাহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে উত্তরবঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত বহু স্কুল। প্রশাসন সূত্রের খবর, ক্ষতিগ্রস্ত স্কুলের সংখ্যা ১৭৩টি। সেগুলির কোনওটির দেওয়াল, কোনওটির শ্রেণিকক্ষ, আবার কোনওটির ছাদ, সীমানা প্রচীর, সিঁড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে পুজোর বন্ধের মধ্যে স্কুল সংস্কার করতে তৎপর শিক্ষাদপ্তর। ইতিমধ্যে তারা এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে রিপোর্টও সংগ্রহ করেছে। 

    চলতি সপ্তাহে দার্জিলিংয়ে প্রশাসনিক বৈঠক মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রাথমিক স্কুল, হাইস্কুল ও কলেজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সংশ্লিষ্ট স্কুল ও কলেজগুলি শীঘ্রই মেরামত করা হবে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় বই বিতরণ করা হয়েছে। উত্তরবঙ্গের শিক্ষার উন্নয়নে ব্যয় করা হয়েছে ১০ হাজার কোটি টাকা। শিক্ষাদপ্তরের এক অফিসার জানান, ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত স্কুলগুলির তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় সেগুলি সংস্কার করা হবে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। 

    চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে প্রবল বর্ষণ, ধস ও নদীর জলস্ফীতিতে লন্ডভন্ড হয়ে যায় উত্তরবঙ্গের পাহাড় ও সমতল। প্রকৃতির সেই রোষের তাণ্ডব দার্জিলিং পাহাড়, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহার জেলায় ছিল বেশি। তাতে রাস্তা, বাড়ি, চাষের জমির পাশাপাশি বহু স্কুল ক্ষগ্রিস্ত হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্ত স্কুল বাড়ির সংখ্যা ১৭৩টি। এরমধ্যে প্রাথমিক স্কুলের সংখ্যা সর্বাধিক, ৯৪টি। বাকি ৭৯টি হাইস্কুল।

    ক্ষতিগ্রস্ত স্কুলগুলি গুরুত্ব দিয়ে মেরামত করার দাবি তুলেছেন অভিভাবকদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, এখন পুজোর ছুটি চলছে স্কুলগুলিতে। কাজেই বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্ত স্কুলগুলি এখনই মেরামত করা উচিত। স্কুল খোলার পর তা করা সম্ভব হবে না। তখন ক্ষতিগ্রস্ত স্কুলে বসেই ছাত্রাছাত্রীদের ক্লাস করতে হবে। এতে দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা। 

    বিপর্যয় বিধ্বস্ত জেলাগুলির মধ্যে দার্জিলিং অন্যতম। এই জেলার পাহাড়ের অংশে ক্ষতিগ্রস্ত স্কুলের সংখ্যা ৩০টির বেশি। প্রশাসন সূত্রে খবর, পাহাড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হাইস্কুলের সংখ্যা ২০টি। সেগুলি দার্জিলিং শহর, রংভি, সুখিয়াপোখরি, ঘুম, লামাহাটা, পানিঘাটা প্রভৃতি এলাকায়। এরবাইরে ক্ষতিগ্রস্ত প্রাথমিক স্কুলের সংখ্যা ১২টি। সেগুলি দুধিয়া, লোয়ার ব্লুমফিল্ড, পেডিখোলা, ঘুম, টুংসুং প্রভৃতি এলাকায় অবস্থিত। 

    প্রশাসন এক আধিকারিক জানান, সংশ্লিষ্ট প্রাথমিক স্কুলগুলির মধ্যে একটিতে কোনও ছাত্রছাত্রী নেই। সেটির টয়লেট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরবাইরে একটি স্কুলের উপর ধসে পড়েছে পাহাড়ের মাটি, বোল্ডার। সেটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া প্রাথমিক ও হাই মিলিয়ে দশটি স্কুলের ওয়াল, তিন থেকে চারটি স্কুল ও একটি হোস্টেলের ছাদ, তিন-চারটির শ্রেণিকক্ষ, দু’টির পিলার, জলের পাইপ লাইন, চারটির টয়লেট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইতিমধ্যে বিপর্যয় বিধ্বস্ত এলাকা ঘুরে ক্ষতিগ্রস্ত স্কুলগুলির ছবিও তোলা হয়েছে। 

    দার্জিলিং জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (প্রাথমিক ও হাইস্কুল) তাপস বিশ্বাস বলেন, ব্লক প্রশাসনের সহযোগিতায় ক্ষতিগ্রস্ত স্কুলগুলির তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। তা রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানোও হয়েছে। শীঘ্রই সেগুলির সংস্কার কাজ শুরু হবে বলেই আশা করছি। - ফাইল চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)