• মুর্শিদাবাদ মেডিকেলে জয়েন্ট সেল টিউমারের সফল অস্ত্রোপচার হল
    বর্তমান | ২০ অক্টোবর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: এক পায়ের হাঁটুতে জয়েন্ট সেল টিউমার হয়েছিল কান্দির গোকর্ণের যুবতী অঞ্জিলা বিবির। বিশাল আকারের টিউমারের জন্য তাঁর পা কেটে বাদ দেওয়ার মতো পরিস্থিতি দেখা দিয়েছিল। কিন্তু মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছয় ঘণ্টার সফল অস্ত্রোপচারে টিউমার বাদ দিলেন চিকিৎসকরা। সুস্থ হয়ে উঠে এখন স্বাভাবিকভাবে চলাফেরাও করতে পারছেন অঞ্জিলা। রবিবার তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হয়। সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে এমন উন্নতমানের চিকিৎসা পরিষেবা পেয়ে খুশি অঞ্জিলার পরিবার।

    দু’বছর ধরে মুম্বইতে চিকিৎসা করিয়ে সুরাহা হয়নি। অবশেষে আগস্ট মাসে মুর্শিদাবাদ মেডিকেলে ভর্তি হন অঞ্জিলা বিবি। ৮ আগস্ট থেকে তাঁর চিকিৎসা শুরু করা হয়। মেডিকেলে বায়োপসি পরীক্ষায় টিউমার ধরা পড়ে।  টিবিয়া ও ফিমারের ঠিক মাঝে টিউমারটি ছিল। টিবিয়া হল পায়ের হাঁটুর নীচের দিকের হাড়। ফিমার তার উপরের অংশের হাড়। এই দুই হাড়ের সংযোগস্থলে একদিকে পাঁচ ও অন্যদিকে চার সেন্টিমিটার টিউমারটি হয়েছিল। সেটির সাইজ দেখে চিকিৎসকরা আঁতকে উঠেছিলেন। তড়িঘড়ি অস্ত্রোপচার না হলে পা কেটে বাদ দেওয়া ছাড়া কোনও উপায় থাকবে না বলে তাঁরা বুঝতে পারেন। সেজন্য পরিবারের সম্মতি নিয়ে একটি টিম তৈরি করে তাঁর পায়ের পরীক্ষানিরীক্ষা করা হয়। অস্ত্রোপচারের আগে সবরকম রক্ত পরীক্ষা, এমআরআই, সিটি স্ক্যান বিনামূল্যে মেডিকেলেই হয়েছে।

    এরপর ১৮সেপ্টেম্বর ছয় ঘণ্টা ধরে অস্ত্রোপচার হয়। চিকিৎসকদের টিমে ছিলেন মেডিকেলের অর্থোপেডিক বিভাগের প্রধান ডাঃ হিরণ্ময় দেব, ডাঃ নবারুণ সাহা ও ডাঃ ওয়াসিম বারি।

    হিরণ্ময়বাবু বলেন, এধরনের বড় টিউমারের ক্ষেত্রে অনেকসময় হাঁটুর উপর থেকে পা কেটে বাদ দিতে হয়। আমাদের প্রধান লক্ষ্য ছিল, রোগীর পা বাদ না দিয়ে টিউমার কেটে বাদ দেওয়া। তারপর হাড়ে ইমপ্লান্ট বসিয়ে রোগীকে নিজের পায়ে দাঁড় করানো। প্রায় ছয় ঘণ্টা অস্ত্রোপচার করে টিউমার বাদ দিয়ে বিশেষ এন্ডোপ্রস্থেসিস লাগানো হয়। অস্ত্রোপচারের ১৫দিন পর স্টিচ কাটা হয়। সেলাইয়ের জায়গায় একটা ইনফেকশন হয়েছিল। তবে এখন তা ঠিক আছে। অস্ত্রোপচারের পর পায়ের আকারও স্বাভাবিক আছে। রোগী স্বাভাবিকভাবে হাঁটাচলাও করছেন। রবিবার তাঁকে ছুটি দেওয়া হয়।

    অঞ্জিলার স্বামী জমিউদ্দিন শেখ বলেন, একবছর আগে থেকে স্ত্রী হাঁটতে পারত না। মুম্বইতে অনেকবার ডাক্তার দেখিয়েও লাভ হয়নি। এখানকার ডাক্তারদের চিকিৎসায় ও স্বাভাবিকভাবে হাঁটতে পারছে। সমস্ত ডাক্তারবাবুর কাছে আমি কৃতজ্ঞ।
  • Link to this news (বর্তমান)