গুণ-ভাগ পারছে না অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়ারা, হবে রেমেডিয়াল ক্লাস
বর্তমান | ২০ অক্টোবর ২০২৫
অভিষেক পাল, বহরমপুর:
অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়ারা গুণ, ভাগ করতে পারছে না। বড় সংখ্যার যোগ দিলেই ঘাবড়ে যাচ্ছে। জেলার প্রাথমিক, উচ্চ প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলে এবার নিউমেরিক্যাল ক্লাসে জোর দেওয়া হচ্ছে। দুর্বল পড়ুয়াদের খুঁজে পৃথক ক্লাস করাবেন অঙ্ক ও বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক শিক্ষিকারা। এই বিশেষ ক্লাসের নাম দেওয়া হয়েছে ‘রেমেডিয়াল ক্লাস’। এর ফলে পড়ুয়াদের অঙ্ক ভীতি যেমন কমবে, তেমনই পড়াশোনার মান বাড়বে। পুজোর পর পুরোদমে বিদ্যালয় খুললে যাতে এই ক্লাসগুলি প্রতিটি স্কুলে অবশ্যই করানো যায় সেজন্য জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার মুর্শিদাবাদ জেলাশাসকের অফিসের কনফারেন্স হলে জেলার শিক্ষাদপ্তরের বিভিন্ন পর্যায়ের আধিকারিকদের নিয়ে একটি বৈঠক হয়। সেখানে ডিআই ও এসআইরা হাজির ছিলেন। নিউমেরিক্যালে জোর দেওয়ার পাশাপশি পড়ুয়াদের রিডিং হ্যাবিট বাড়ানোর কাজও শুরু করেছে স্কুলগুলি। সেই কাজ কেমন চলছে এদিনের বৈঠকে খোঁজ নেন জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা।
অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) দিননারায়ণ ঘোষ বলেন, মিড ডে মিলের আগে বা পরে একটা করে রেমেডিয়াল ক্লাস নেওয়া হবে। প্রাথমিকের পড়ুয়াদের আগে দুটি সংখ্যার যোগ বিয়োগ করানো হবে। তারপর গুণ ও ভাগ শিখবে। প্রতিটি স্কুলের ম্যাথস বা সায়েন্সের টিচার এই ক্লাস করাবেন। হাইস্কুলের রেমেডিয়াল ক্লাস নেওয়া হবে দুর্বল পড়ুয়াদের বাছাই করে। যারা আগে যোগ বিয়োগ পারছে, তাদেরকে গুণ ও ভাগ করানো হবে। বড় সংখ্যার গুণ ও ভাগ পারছে না বহু পড়ুয়া। তাদের মানোন্নয়ন করানোর জন্য নিউমেরিক্যালে জোর দেওয়া হচ্ছে। আমাদের টার্গেট তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির আগে যোগ বিয়োগ যেন সকল পড়ুয়ারা শিখে যায়। তাহলে হাইস্কুলে উঠে সমস্যায় পড়বে না তারা। মোটামুটি প্রতিটি ক্লাসের ২৫-৩০ শতাংশ ছেলেমেয়ে নিউমেরিক্যালে দুর্বল।
পাশাপাশি গত আগস্ট মাস থেকে চলছে রিডিং পড়ার বিশেষ ক্লাস। জেলার অধিকাংশ স্কুলে একটি সমীক্ষা করে দেখা গিয়েছে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়ারাও বই দেখে বাংলা ও ইংরেজি রিডিং পড়তে পারে না। রিডিং হ্যাবিট বাড়ানোর জন্য রিডিং রেমেডিয়াল ক্লাসের আয়োজন করে প্রতিটি স্কুল। তবে বেশ কিছু স্কুলে শিক্ষক-শিক্ষিকারা নিজেরা রিডিং পড়ে গিয়েছেন এবং পড়ুয়ারা তারপরে রিডিং পড়েছে। এর ফলে অধিকাংশ পড়ুয়ারা এখনও রিডিং পড়াতে উন্নতি করতে পারেনি। সেদিনের বৈঠকে স্কুলের আধিকারিকদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে কীভাবে এই রিডিং রেমেডিয়াল ক্লাস করাতে হবে। প্রতিটি ক্লাসের দুর্বল পড়ুয়াদের ডেকে তাদের নির্দিষ্ট দিনে ব্ল্যাকবোর্ডের সামনে বই দেখে রিডিং পড়ার সুযোগ দিতে হবে। এমন প্র্যাকটিস চলতে থাকলে তবেই পড়ুয়ারা ভালো পড়ার তাগিদ অনুভব করবে। দিননারায়ণবাবু বলেন, গত আগস্ট মাস থেকে শুরু হয়েছে রিডিং পড়ার বিশেষ ক্লাস। সেখানে আমরা অনেকটাই এগতে পেরেছি। প্রতিটি ক্লাসে ব্ল্যাক বোর্ডের সামনে এসে পড়ুয়াদের রিডিং পড়তে হবে। তাতে সাহস বাড়বে এবং বই দেখে সঠিকভাবে পড়ার অভ্যাস তৈরি হবে। কিছু কিছু বিদ্যালয় এই রিডিং রেমেডিয়াল ক্লাস করালেও সেখানে কিছুটা পদ্ধতিগত ভুল ছিল। সঠিকভাবে ক্লাসের জন্য পুজোর পর থেকে রিডিং পড়ার ক্ষেত্রেও আরও জোর দেওয়া হবে।