• বেআইনি বাজি ঠেকাতে আরও সক্রিয় লালবাজার, শহরে চিহ্নিত ২৮ ক্র্যাকার প্রোন জোন
    বর্তমান | ২০ অক্টোবর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: কালীপুজোর আগে তল্লাশি চালিয়ে বিপুল বাজি উদ্ধার করল পুলিশ। গত সাতদিনে প্রায় পাঁচ হাজার কেজি উদ্ধার হয়েছে।

    এই পরিসংখ্যান তুলে ধরে কালীপুজো ও দীপাবলির আগে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বসে পুলিশকর্তারা। সাতদিন ধরে শহরের কোন এলাকায় চকোলেট বোমা, কালীপটকা, নিষিদ্ধ শেলের প্রভাব বেশি দেখা গিয়েছে তা নিয়ে খোঁজ নেন পুলিশ কমিশনার মনোজকুমার ভার্মা। লালবাজার সূত্রে খবর, বৈঠকের পর শহরের ২৮টি জায়গা ‘ফায়ার ক্র্যাকার প্রোন জোন’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। স্পর্শকাতর এলাকাগুলি হল, বেহালা, ঠাকুরপুকুর, হরিদেবপুর, টালিগঞ্জ, কুঁদঘাট, পাটুলি, বাঁশদ্রোণী, বেলেঘাটা, মুচিপাড়া ইত্যাদি। 

    কলকাতা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিবছরই শহরের প্রান্তিক এলাকাগুলিতে বাজির দাপট সবথেকে বেশি থাকে। একইসঙ্গে অভিজাত এলাকার বহুতলগুলিতেও বেআইনি বাজি দৌরাত্ম্যের অভিযোগ আসে। লালবাজার জানিয়েছে, এবছর লক্ষ্মীপুজোর পর থেকেই শহরের সবকটি থানার পক্ষ থেকে বহুতলগুলিতে নজরদারি চালানোর কাজ শুরু হয়। আলিপুর, নিউ আলিপুর, গড়িয়াহাট, লেক গার্ডেনস, যোধপুর পার্ক, ট্যাংরা, তপসিয়া এলাকায় বহুতল আবাসনের সংখ্যা সবথেকে বেশি। এখনও পর্যন্ত কোনও বহুতল থেকে নিষিদ্ধ বাজি পোড়ানোর অভিযোগ যদিও আসেনি। তবে দক্ষিণ কলকাতার সীমানাবর্তী থানাগুলি থেকে দেদার শব্দবাজি ফাটানোর অভিযোগ আসছে। এছাড়া গোপন সোর্স থেকেও খবর পেয়ে বেআইনি বাজি উদ্ধারে নেমেছে পুলিশ। অপরাধ দমন বিভাগের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ভূত চতুর্দশীর রাত পর্যন্ত সবথেকে বেশি অভিযোগ এসেছে বেলেঘাটা, বেহালা, ঠাকুরপুকুর অঞ্চল থেকে। ২৮টি ফায়ার ক্র্যাকার প্রোন জোনের মধ্যে এই অঞ্চলগুলি সবথেকে স্পর্শকাতর বলে মনে করছে লালবাজার। 

    পুলিশ জানিয়েছে, ২৮ হটস্পটের মধ্যে বেশিরভাগই সাউথ-ওয়েস্ট (বেহালা) ও সাউথ সাবার্বান (যাদবপুর) ডিভিশনের অন্তর্গত। এই দুই ডিভিশনের ডেপুটি কমিশনার রাহুল দে ও বিদিশা কলিতাকে বেআইনি বাজি দমনে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে। সাউথ-ওয়েস্ট ডিভিশনের মধ্যে তারাতলা, পর্ণশ্রী, ঠাকুরপুকুর, সরশুনা ও হরিদেবপুর থানা এলাকায় সন্ধ্যা থেকে স্পেশাল টিম টহল দেবে। পাশাপাশি ১০০ ডায়ালে কেউ অভিযোগ জানালে ব্যবস্থা নিতে রাস্তায় সর্বদা তৎপর থাকবে পিসিআর ভ্যান ও থানার বাইক বাহিনী। অন্যদিকে যাদবপুর ডিভিশনের রিজেন্ট পার্ক, বাঁশদ্রোণী, নেতাজিনগর, পাটুলি থানা এলাকাকেও সতর্ক করা হয়েছে। একইসঙ্গে বারুইপুর জেলা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে শহরে বেআইনি বাজি প্রবেশের চেষ্টা বানচাল করার নির্দেশ দিয়েছে লালবাজার। অন্যদিকে রবিবারও শহরের একাধিক বহুতল আবাসনের কমিটির সঙ্গে বৈঠক করে থানাগুলি। সরশুনা থানার পক্ষ থেকে বিশেষ সচেতনতা শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল। জানা গিয়েছে, আবাসনের ছাদে বাজি না ফাটানোর নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ।
  • Link to this news (বর্তমান)