• প্রত্যাশা ছাপিয়ে ধনতেরসে কেনাকাটা , ৫ লক্ষ কোটির লক্ষ্যে ছুটছে উৎসব-বাজার
    বর্তমান | ২০ অক্টোবর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: গণেশ চতুর্থী উদযাপনের মধ্য দিয়ে উৎসবের আঙিনায় প্রবেশ করেছিল ভারত। দুর্গাপুজো, নবরাত্রি পেরিয়ে ধনতেরস, কালীপুজো, দীপাবলির হাত ধরে শিখর ছুঁয়েছে পার্বণ। প্রদেশিক ও জাতীয় স্তরের উৎসবগুলিকে ঘিরে দেশে ব্যবসা প্রত্যাশা ছাপিয়ে ছুটছে ৫ লক্ষ কোটি টাকার দিকে। এর মধ্যে শুধুমাত্র ধনতেরসকে কেন্দ্র করেই এক লক্ষ কোটির বাণিজ্যের মুখ দেখেছে দেশ। এমনই তথ্য সামনে এনেছে এদেশে ব্যবসায়ীদের বৃহত্তম সংগঠন কনফেডারেশন অব অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্স। তাদের দাবি, এই ব্যবসার অনেকটাই দাঁড়িয়েছিল দেশীয় পণ্যের উপর। অর্থাৎ শুধু যে উৎসবকে কেন্দ্র করে লক্ষ্মীলাভ হয়েছে, তা নয়। ছোট ও মাঝারি শিল্পের পাশাপাশি কারিগররাও উপকৃত হয়েছেন পার্বণে।

    কনফেডারেশনের মহাসচিব তথা সাংসদ প্রবীণ খান্ডেলওয়ালের কথায়, ‘আমাদের হিসেব বলছে, গতবার উৎসবকে কেন্দ্র করে প্রায় পৌনে পাঁচ লক্ষ কোটি টাকার ব্যবসা হয়েছিল। এবার তাও ছাপিয়ে যাচ্ছে। জিএসটির হার কমানোয় তার সদর্থক প্রভাব পড়েছে বাজারে। দিল্লি তো বটেই, প্রতিটি শহরে যেভাবে রাস্তায় মানুষের ভিড়ের খবর আমরা পেয়েছি, তা চিনিয়ে দিয়েছে উৎসবের স্পন্দন। ভাইফোঁটার পাশাপাশি গোবর্ধন পুজো বা অন্নকূটের মতো উৎসবগুলিও এই ব্যবসায় শামিল হয়েছে।’ 

    অল ইন্ডিয়া জেম অ্যান্ড জুয়েলারি ডোমেস্টিক কাউন্সিলের হিসেব, সোনার ব্যবসা ররিবার পর্যন্ত ৫০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। এখানকার চেয়ারম্যান রাজীব রোকদে’র কথায়, ওজনের নিরিখে এবার রুপোর কয়েন ও পুজো-সামগ্রীর বিক্রি গতবারের তুলনায় ৪০ শতাংশ বেড়েছে। টাকার অঙ্কের হিসেবে বিক্রিবাটা প্রায় দ্বিগুণ। অন্যদিকে গয়না, সোনার কয়েন এবং বাটের পাশাপাশি এবার যথেষ্ট ভালো ব্যবসা করেছে ডিজিটাল গোল্ড এবং গোল্ড ইটিএফ—দাবি ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের।  

    বেশ কয়েক মাস গাড়ির বিক্রির হার কিছুটা ঢিমে থাকলেও, উৎসবের মরশুম ছিল ব্যতিক্রম। টাটা মোটরস প্যাসেঞ্জার ভেহিকেলস লিমিটেডের চিফ কমার্সিয়াল অফিসার অমিত কামাথের কথায়, ‘আমাদের আশা, শুধু ধনতেরস ও দেওয়ালিকে কেন্দ্র করেই ২৫ হাজার যাত্রীবাহী গাড়ি বিক্রি হবে। আমরা ক্রেতাদের থেকে সদর্থক সাড়া পাচ্ছি। গাড়ির দামের উপর জিএসটির ভার কমে যাওয়ায় ক্রেতারা অত্যন্ত উৎসাহের সঙ্গে কেনাকাটায় মেতেছেন।’

    ব্যবসা বৃদ্ধির তালিকায় ভালো প্রভাব ফেলেছে বৈদ্যুতিন যন্ত্রপাতিও। খোসলা ইলেকট্রনিক্সের কর্ণধার মণীশ খোসলার কথায়, ‘গতবারের তুলনায় এবার ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ বেশি বিক্রিবাটা করেছি। কলকাতা তো বটেই, জেলাগুলির সবক’টি শোরুমেই যেভাবে ক্রেতারা এসেছেন, তাতে বোঝা যাচ্ছে সর্বস্তরের মানুষ ধনতেরস ও দেওয়ালি উৎসবে মেতেছেন। এমনকি, ধনতেরসকে কেন্দ্র করে শীতের মুখে এসির এত ডিমান্ড হবে, বুঝিনি আমরা। তার সঙ্গেই পাল্লা দিয়ে বিক্রি হয়েছে বড় স্ক্রিনের টিভি।’ মোট কথা, উৎসবকে কেন্দ্র করে বাণিজ্যের সর্বস্তরে যে চাহিদা তৈরি হয়েছিল, তা পূরণ হয়েছে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই। 
  • Link to this news (বর্তমান)